Sunday 29 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঈদে ঘরমুখী মানুষের বৃষ্টিভেজা ফেরা


৪ জুন ২০১৯ ১৪:৩৮ | আপডেট: ৪ জুন ২০১৯ ১৫:০১
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা:  ঈদের আনন্দ স্বজনদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে রাজধানী ছাড়ছে মানুষ। গত কয়েকদিন ধরেই বাস, ট্রেন ও লঞ্চে ছিল মানুষের উপচে পড়া ভিড়। কোনোমতে গন্তব্যে পৌঁছতে পারলেই এসব মানুষের মুখে ফুটে উঠছে স্বস্তির হাসি। তবে ঈদযাত্রায় আজ সকালের বৃষ্টি বাড়িমুখো মানুষদের কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলেছে।

মঙ্গলবার (৪ জুন) সকাল থেকেই বৃষ্টিভেজা শরীর নিয়ে বাড়ির পথে যাত্রা করেছে মানুষজন। তবে বৃষ্টি যাত্রাপথে অস্বস্থিতে ফেললেও আবাহাওয়ায় কিছুটা স্বস্তি নিয়ে এসেছে।

ঈদের ছুটি কাটাতে ভৈরব যাচ্ছেন মালিহা তাবাসসুম। কমলাপুর স্টেশনে ট্রেনে ওঠার আগে তিনি বলেন, ‘ট্রেনে ভিড়ের কারণে এমনিতেই অনেক কষ্ট হয়। তার ওপরে রোদ থাকলে কষ্টের মাত্রা সীমা ছাড়িয়ে যায়। বৃষ্টি হওয়ায় আজ অন্তত কিছুটা স্বস্তিতে যাওয়া যাবে।’

বিজ্ঞাপন

বৃষ্টিতে স্বস্তি এলেও ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলেছে। সোমবারের (৩ জুন) মতো আজও কোনো ট্রেন নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যের পথে যাত্রা করেনি। অঞ্চলভেদে পাঁচ মিনিট থেকে ৪৫ মিনিট পর্যন্ত দেরি করেছে মঙ্গলবারের ট্রেনগুলো। গত তিনদিন ধরেই ট্রেনে ছোট থেকে মাঝারি আকারের সিডিউল বিপর্যয় হচ্ছে। এছাড়া পশ্চিমাঞ্চলে খুলনা, রংপুরসহ বেশকয়েকটি জেলামুখী ট্রেন সর্বোচ্চ ৫ ঘণ্টা পর্যন্ত দেরিতে যাত্রা শুরু করেছে। এসব ট্রেন গন্তব্যে পৌঁছতেও নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় নিয়েছে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগী যাত্রীরা।

রংপুরের যাত্রী ওয়াহিদুল হক সারাবাংলাকে জানান, ট্রেনে ঢাকা থেকে বাড়ি পৌঁছতে তার পুরো একদিন লেগে গেছে। ঈদ ছাড়া অন্যান্য সময়ে সাধারণত এত দেরি হয় না। কমলাপুর থেকে দেরি করে ছাড়ায় প্রত্যেকটি সিগনালেই থেমেছে তাদের ট্রেন। এছাড়াও ট্রেনে যাত্রী ব্যবস্থাপনা নিয়ে বেশকিছু অভিযোগ করেন তিনি।

সিডিউল বিপর্যয়ে পড়ে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে চিলহাটির নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীদের। গত চারদিন ধরেই সময়ের সঙ্গে নেই এই ট্রেন। বিলম্বে ছেড়েছে রংপুর এক্সপ্রেস, লালমনি এক্সপ্রেসসহ অন্যান্য ট্রেনও। এছাড়াও খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস প্রায় দেড় ঘণ্টায় লেট করায় যাত্রীরা বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তবে সিলেটমুখী সব ট্রেনই প্রায় নির্ধারিত সময়ে কমলাপুর ছেড়েছে।

কমলাপুরের স্টেশন ম্যানেজার আমিনুল হক জুয়েল বলেন, ‘এখান থেকে প্রতিদিন ৫০টির বেশি ট্রেন ছেড়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে পাঁচ থেকে ছয়টি ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করেছি সর্ব্বোচ্চ যাত্রী সেবা দেওয়ার। ’

এদিকে সিলেট ও চট্টগ্রামের ট্রেনে সিডিউল বিপর্যয়ের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। তবে কোনো কোনো ট্রেন ছাড়তে ৩০ মিনিট সময় পর্যন্ত দেরি করেছে বলে জানান যাত্রীরা। তবে ঈদযাত্রায় ৩০ মিনিট পর্যন্ত দেরিকে বিলম্ব হিসেবে ধরা হয়া না বলে জানিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

গতকাল চাকরিজীবীদের শেষ কর্মদিবস হওয়ায় আজ কমলাপুর স্টেশনে অতিরিক্ত ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এদের বেশিরভাগই টিকিট ছাড়া এসেছেন স্টেশনে। ট্রেনের কোনো এক অংশে দাঁড়িয়ে বাড়ি ফিরতে পারলেই এরা খুশি।

আহমেদ জামান নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, ‘ঈদের আগে ব্যাংকে অনেক চাপ ছিল। এ জন্য টিকিট কাটতে পারেনি। আজকে এসে স্ট্যান্ডিং টিকিট কেটেছি, চট্টগ্রাম পর্যন্ত দাঁড়িয়ে যেতে হবে। তাও ভালো যে যেতে পারছি। পরিবারের মানুষদের সঙ্গে দেখা হওয়ার যে আনন্দ সেটি এখনই অনুভব করতে পারছি।’

অতিরিক্ত ভিড় হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেকে আবার ট্রেনের ছাদে উঠে বাড়ির পথে যাত্রা করেছেন। এ নিয়ে সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে রেলওয়ে পুলিশের কিছুটা বিতণ্ডতাও হয়েছে। রেলওয়ে পুলিশের দাবি, ট্রেনের ছাদে যাত্রা কর খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাদেরকে সেখান থেকে নামানোর জন্য সর্বোচ্চ বল প্রয়োগ করার হয়েছে। এরপরও যাত্রীরা ছাদ থেকে নামতে রাজি হননি।

এ সময় নরসিংদীগামী যাত্রী আলমগীর বলেন, ‘টিকিট পায়নি, ট্রেনের ভেতরে দাঁড়ানোর জায়গা নেই। তাহলে আমরা কি করব? আমরা কি বাড়ি যাব না ‘

এ বিষয়ে কমলাপুরের স্টেশন ম্যানেজার বলেন, আমরা যতদূর পারছি যাত্রীদেরকে ছাদ থেকে নামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি। সেদিন একটি ট্রেনের ছাদ থেকে সবাইকে আমরা বল প্রয়োগ করে নামিয়ে দিয়েছি। পরে শুনেছি অন্যান্য স্টেশন থেকে ছাদ বোঝাই হয়ে বাড়ি ফিরেছে লোকজন। মানুষের স্রোতের কাছে আমরা অসহায়। তবুও চেষ্টা করে যাচ্ছি যেন যাত্রীরা ছাদে ভ্রমণ না করে।

সারাবাংলা/টিএস/প্রমো

ঈদযাত্রা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর