ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারে লাখো পর্যটকের ভিড়
৬ জুন ২০১৯ ১২:৪৬
কক্সবাজার: ঈদের ছুটি কাটাতে লাখো পর্যটক ভিড় করেছেন পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতে। সাগরের নীল জলরাশির সঙ্গে উচ্ছ্বাসে মেতে উঠছেন তারা। আর তাদের সেবা প্রদানে ব্যস্ত সময় পার করেছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে বেড়াতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। পাশাপাশি প্রস্তুত রয়েছে জেলা পুলিশও।
ঈদের পরদিন পর্যটকের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য গেছে সমুদ্রের পাড়ে। প্রতিবছরের মত এবারের ঈদেও লাখো পর্যটকের ভিড় জমেছে। তাদের উল্লাসে মুখরিত রয়েছে সমুদ্র সৈকতসহ কক্সবাজারের দর্শনীয় স্থানগুলো। আগত পর্যটকেরা সমুদ্র সৈকতের পাশাপাশি দরিয়ানগর, হিমছড়ি ঝর্ণা, ইনানীর পাথুরে সৈকত, ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক, রামু বৌদ্ধ বিহার, সেন্টমার্টিন, মহেশখালী আদিনাথ মন্দিরসহ জেলার পর্যটন স্পটগুলোতেও ছুটে যাচ্ছে।
জেলা প্রশাসন ও কক্সবাজার কটেজ মালিক ব্যবসায়ী সমিতির তথ্যানুযায়ী, কক্সবাজারের প্রায় ৫ শতাধিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও কটেজে এখন লক্ষাধিক পর্যটক অবস্থান করছেন। আগত পর্যটকদের সেবা নিশ্চিত করতে সর্তক অবস্থায় রয়েছে দায়িত্বরত ট্যুরিস্ট পুলিশ ও জেলা পুলিশ। মোতায়ন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশও। কেউ যাতে পর্যটকদের হয়রানি করতে না পারে সেজন্য পর্যটন স্পটগুলোকে আনা হয়েছে সিসিটিভি ক্যামরার আওতায়। এছাড়া ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে দ্রুত সাধারণ চিকিৎসা ও খাবার পানির ব্যবস্থা রয়েছে সমুদ্র সৈকতে। লাইফগার্ড কর্মীরা সর্তক অবস্থায় রয়েছেন ভেসে যাওয়া পর্যটকদের রক্ষার্থে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন জানান, ছুটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণের পাশাপাশি অতিরিক্ত হোটেল ভাড়া বন্ধ এবং খাবারের মান নিয়ন্ত্রণে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে রয়েছে।
ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক সুমাইয়া জাহান বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে পরিবার নিয়ে কক্সবাজার বেড়াতে এসে খুবই ভাল লাগছে। এখানে না আসলে বুঝতাম না এই সমুদ্র সৈকত কত সুন্দর’।
ঢাকার কাজী নজরুল কলেজের শিক্ষার্থী তুষার জানায়, তারা কলেজ বন্ধুরা দলবেঁধে বেড়াতে এসেছে। সকাল থেকে মাঝে মাঝে বৃষ্টি হলেও তাদের আনন্দের কমতি হচ্ছে না। এভাবেই তারা গতবছরও এসেছিল। তারা সমুদ্র সৈকত ছাড়াও সেন্টমার্টিনসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পট ঘুরে দেখবেন।
কক্সবজার কটেজ মালিক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কাজী রাসেল আহম্মদ নোবেল জানান, বেড়াতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হোটেল-মোটেল জোন সিসিটিভি ক্যামরার আওতায় আনা হয়েছে। ফলে কেউ কোনো অপরাধ করে পার পাবে না। পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে যৌথভাবে কাজ করছেন পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। তাদের যৌথ প্রচেষ্টা থাকছে প্রত্যেক পর্যটক যেন ভ্রমণ শেষে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন।
কক্সবাজার পুলিশ সুপার (ট্যুরিস্ট) জিল্লুর রহমান জানান, ঈদে বেড়াতে আসা পর্যটকদের নিরাপদে ভ্রমণ নিশ্চিত করতে শহরসহ জেলার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ট্যুরিস্ট পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃংখলা বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। ট্যুরিস্ট পুলিশের বিশেষ রেসকিউ টিম, ইভটিজিং কন্ট্রোল টিম, ড্রিংকিং জোন, দ্রুত চিকিৎসাসহ নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে পর্যটকদের নিরাপত্তায়। সমুদ্র সৈকত এলাকায় ২৪ ঘন্টা টুরিস্ট পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। বীচ বাইক নিয়ে টহল অব্যাহত রেখেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। এছাড়া পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৩টি বেসরকারি লাইফ গার্ড সংস্থার অর্ধশতাধিক প্রশিক্ষিত লাইফগার্ড কর্মী নিয়োজিত রয়েছেন।
সারাবাংলা/প্রমা