সব দেশ সব অনুষ্ঠানে আমাকে চায়: প্রধানমন্ত্রী
৯ জুন ২০১৯ ২০:৪১
ঢাকা: বিশ্বের সব দেশ থেকেই এখন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানানো হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, সব দেশ থেকে সব অনুষ্ঠানে আমাকে চায়। এখন তো বয়স হয়ে গেছে, বুড়ো হয়ে গেছি। আর কত ঘুরব? সেজন্য বেছে বেছে বিদেশ সফরে যাই।
রোববার (৯ জুন) বিকেলে জাপান, সৌদি আরব ও ফিনল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। ১১ দিনের সফর নিয়ে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলন প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন- জ্বর নিয়েও সংবাদ সম্মেলন করলেন প্রধানমন্ত্রী
সংবাদ সম্মেলনে চীন সফরের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাপানে যেমন আমরা সফর করেছি, চীনেও ইনশাল্লাহ সফর হবে। গত বছর আমার দাওয়াতও ছিল। কিন্তু সেই সময় আমাদের পার্লামেন্টে জরুরি কিছু বিষয় ছিল। সে কারণে যেতে পারিনি। তবে আগামী জুলাই মাসে আবার দাওয়াত দিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট। তখন সফর হতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, আগামী ৩০ জুন আমাদের বাজেট পাস হবে। বাজেট পাস হওয়ার পর চীনে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক সামিট (সামার) অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে দাওয়াত পেয়েছি। আবার চীনের রাষ্ট্রপতিও দাওয়াত দিয়েছেন। এটা নিয়ে আলোচনা চলছে, আলোচনার মাধ্যমে তারিখ ঠিক করা হবে।
আরও পড়ুন- তারেকের শাস্তি একসময় কার্যকর হবেই, প্রত্যয় প্রধানমন্ত্রীর
এর আগে চীনে শীত মৌসুমে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক সামিটের অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ওই সময় সেখানে এত বেশি ঠান্ডা থাকে যে তাতে জমে যেতে হয়। শীত মৌসুমে তাই তিনি চীন সফরে যাবেন না বলে জানান। বরং এবারে ওয়ার্ল্ড ইনোকনমিক সামিটের গ্রীষ্ম সংস্করণে অংশ নিতে পারেন বলেও জানান তিনি।
চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের প্রসঙ্গ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সবাইকে সম্মান করে, জানে। বাংলাদেশ থেকে তার নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু ইতিহাস থেকে তার নাম মুছতে পারেনি। ওই সময় যারা তরুণ ছিল, ছাত্র ছিল, তারাই এখন বিভিন্ন রাষ্ট্রের ক্ষমতায়। ফলে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে তাদের অন্যরকম অনুভূতি আছে, ধারণা আছে। চীনের ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য। সেদিক থেকে চীনের সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক আছে।
আরও পড়ুন- ‘ফরমায়েশি লেখা নেই, তাই ওই সম্পাদক লিখতে পারছেন না’
কেবল চীন নয়, অন্য দেশগুলোও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে থাকে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে সবার অনুরোধ রাখতে পারেন না তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, সব দেশ থেকে সব অনুষ্ঠানে আমাকে চায়, দাওয়াত এত বেশি! মুশকিল হচ্ছে, এত দেশ ঘুরলে আর দেশে থাকব কখন? আর কত ঘুরব? সেজন্য বেছে বেছে সফরে যাই। তবে চীনে আমি যাব। কারণ গতবারের দাওয়াতে যেতে পারিনি। এবারে জুলাই মাসে যাচ্ছি।
চীন সফরে রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীনের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হবে বলে আশাবাদ জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে ফেরত যাক, সেটা সবারই আকাঙ্ক্ষা। কিন্তু সমস্যা হয়ে গেছে, মিয়ানমার তাদের নিতে চায় না। আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি করেছি, সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ আছে। কিন্তু তারপরও তাদের কাছ থেকে সাড়া পাই না। মিয়ানমারই আগ্রহী না।
আরও পড়ুন- তিস্তা নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করার দরকার নেই: প্রধানমন্ত্রী
তবে মিয়ানমার আগ্রহ না দেখালেও আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। সবাই মিলে যদি চাপ দেওয়া যায়, তখন হয়তো ফল পাব। নইলে এত মানুষকে রাখাটা মুশকিল।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কেবল মিয়ানমারের অনাগ্রহ নয়, বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের জন্য কর্মরত দাতা সংস্থাগুলোকেও দায়ী করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সংস্থাগুলোও কেউ চায় না যে রোহিঙ্গারা ফেরত যাক।
আরও পড়ুন-
জুলাইয়ে চীন সফরে যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী
সংস্থাগুলোই চায় না রোহিঙ্গারা ফিরে যাক: প্রধানমন্ত্রী
ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন শুরু
‘নিজের বিমানেই যাব, মরলে মনে হবে দেশের মাটিতেই মরেছি’
‘হুমকি সবসময় আসে, সব জানিয়ে মানুষকে ভীত করতে চাই না’
সারাবাংলা/এনআর/টিআর
আমন্ত্রণ ত্রিদেশীয় সফর প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে দাওয়াত বিদেশ সফর শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলন