এবার উপাচার্যের পদত্যাগ চান অকৃতকার্য চিকিৎসকরা
১০ জুন ২০১৯ ১২:৪৬
ঢাকা: কার নির্দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) আন্দোলনরত চিকিৎসকদের ওপর পুলিশ ও আনসার সদস্যরা হামলা চালিয়েছেন তা জানতে চেয়েছেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়ার কাছে এই জবাব চেয়েছেন আন্দোলনরত চিকিৎসকরা।
সোমবার (১০ জুন) বিএসএমএমইউ এর উপাচারর্যের কার্যালয়ের বাইরে আন্দোলনরত চিকিৎসকরা এসব কথা বলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়টির মেডিকেল অফিসার পদে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়া চাকরিপ্রার্থীরা গত প্রায় একমাস ধরে পরীক্ষা বাতিল ও পুনঃনিরীক্ষণের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।
সকালে আন্দোলনরত কয়েকজন চিকিৎসক সারাবাংলাকে বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন যে চিকিৎসকদের গায়ে হাত দেওয়ার কোনো নির্দেশ তার মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া হয়নি। তাহলে কার নির্দেশে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা চিতিৎসকদের ওপর চড়াও হয়েছে সে প্রশ্নের জবাব চান তারা। এক চিকিৎসক বলেন, ‘পরীক্ষার মতো একটা পবিত্র জিনিস কেন বিএসএমএমইউ এর মতো প্রতিষ্ঠানে পুলিশ পাহারায় নিতে হবে সেই জবাবও আমরা ভিসির কাছে চাই। উনি যদি দুর্নীতি নাই করে থাকেন তাহলে আমাদের সঙ্গে দেখা করতে বাধা কিসের?’
বিএসএমএমইউ’র ‘বিতর্কিত’ সেই মৌখিক পরীক্ষা শুরু
এর আগে যেসব দাবিতে আন্দোলন করছিলেন চিকিৎসকরা এবার তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে উপাচার্যের পদত্যাগ ও চিকিৎসকদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদ।
আন্দোলনরত চিকিৎসকদের একজন খায়রুল আলম পিয়াল সারাবাংলাকে বলেন, ‘ভিসি স্যার কিছু হলেই আমাদের কাছে প্রধানমন্ত্রীর কথা বলেন। আমাদের বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রী যদি আমাদের দাবির কথা শোনেন তাহলে তিনিও সেগুলো তদন্তের নির্দেশ দেবেন। তিনি যদি সব শুনে আন্দোলন থেকে সরে যেতে বলেন তাহলে আমরা মেনে নেবো।’
যে আনসার সদস্যরা চিকিৎসকদের মারধর করেছেন তারা পরবর্তী তদন্ত থেকে বাঁচতে নিজেদের নেমপ্লেট খুলে রেখেছিলেন বলেও অভিযোগ করেছেন আন্দোলনরতরা। আনসার সদস্যদের মারধরে রোববার হাত ভেঙে যাওয়া চিকিৎসক মোহাম্মদ দাউদ চৌধুরী পলাশ বলেন, ‘একজন আনসার সদস্য কি করে চিকিৎসকদের গায়ে হাত দেয় সেই প্রশ্নের উত্তর ভিসিকে দিতে হবে। তিনি উত্তর না দিয়ে ভাইবাতে বসতে পারেন না।’
এদিকে যে পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে চিকিৎসকরা আন্দোলন করছেন সেই পরীক্ষারই পরবর্তী ধাপ অর্থাৎ মৌখিক পরীক্ষা চলছে উপাচার্যের কার্যালয়ে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সকালে উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘ওদের কাজ ওরা করেছে, আমরা আমাদের কাজ করবো।’
অন্যদিকে পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসসহ নানা অভিযোগ এনে পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে উচ্চ আদালতে রিট করেছেন অকৃতকার্য কয়েকজন পরীক্ষার্থী। এ প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, উচ্চ আদালত যদি নির্দেশ দেন তাহলে মৌখিক পরীক্ষা বন্ধ বা বাতিল করা হবে। তা না হওয়া পর্যন্ত নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষা চলবে।
২০০টি মেডিকেল অফিসারের পদে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় বিএসএমএইউ কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ১৮০ জন এমবিবিএস ও ২০ জন বিডিএস চিকিৎসক চাওয়া হয়। প্রথম দফায় নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হলেও সেটি পিছিয়ে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে পরীক্ষার দিন ঠিক করা হয়। পরীক্ষা নেওয়ার জন্য প্রশ্নপত্রও ছাপানো হয়। কিন্তু অনিবার্য কারণ দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা স্থগিত করে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাপা হওয়ার দেড় বছর পর গত ২২ মার্চ সেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
সারাবাংলা/জেএ/এসএমএন