বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে থাকবেন প্রধানমন্ত্রীও
১৩ জুন ২০১৯ ২০:২৩
ঢাকা: প্রথমবারের মতো কোনো বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার (১৪ জুন) বিকেল ৩টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানেই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। অর্থমন্ত্রীর অসুস্থতার কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
এর আগে বিগত অর্থবছরগুলোতে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতো। এসব সংবাদ সম্মেলনে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী উপস্থিত থাকতেন।
এদিকে, জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পেশ করার সময় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল অসুস্থ হয়ে পড়লে তার পক্ষে বাজেট বক্তৃতা পাঠ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিকাল ৪টা ১০ মিনিট থেকে তিনি অর্থমন্ত্রীর পক্ষে বাজেট বক্তৃতা পড়া শুরু করেন। এর আগে অর্থমন্ত্রী ৩টা ৭ মিনিটে তার বাজেট বক্তৃতা শুরু করার অনুমতি চাওয়ার সময় তিনি গুরুতর অসুস্থ উল্লেখ করে বসে বলার অনুমতি চান স্পিকারের কাছে। স্পিকার সদয় অনুমতি দেন এবং বাকি সদস্যদের অনুরোধে বসেই তিনি বাজেট বক্তৃতা শুরু করেন।
কিন্তু বাজেট বক্তৃতার সামান্য অংশ পড়েই তিনি অসুস্থতার কারণে দুই বার বিরতি নেন। বিকেল পৌনে ৪টার পর বিরতি নিয়ে অর্থমন্ত্রী আর বাজেট বক্তৃতা পাঠ করার অবস্থায় না থাকলে অন্য কারও সহায়তা চান। এ সময় আগ্রহী হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই স্পিকারের অনুমতি নিয়ে অর্থমন্ত্রীর পক্ষে বাজেট বক্তৃতাটি সংসদে উত্থাপন করেন।
প্রধানমন্ত্রী অর্থমন্ত্রীর হয়ে বাজেট বক্তৃতাটি পাঠ করার সময় বেশ কয়েকবার লিখিত বক্তৃতায় তাকে ধন্যবাদ দেওয়া অংশ পাঠ করতে হয়েছে। এমন কয়েকটি জায়গায় পাঠ করে তিনি খানিকটা হাস্যরসে বলেন, ‘এটা অর্থমন্ত্রীর লিখিত বক্তৃতা পড়ছি। আমার বক্তৃতা হলে আমি নিজে নিজেকে ধন্যবাদ জানাতাম না।’
সংসদে তখন খানিকটা হাস্যরস সৃষ্টি হলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, আমরা জানি আপনি অর্থমন্ত্রীর লিখিত বক্তৃতা পড়ছেন। বক্তৃতায় যা লেখা আছে তাই পড়বেন। বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতা পাঠ শেষ করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর বাজেটের অপঠিত অংশ পঠিত বলে গণ্য হবে বলে স্পিকার জানান।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং সূত্রে জানা যায়, আগামীকাল দুপুরেও অর্থমন্ত্রীর অসুস্থতাজনিত বিষয়টি মাথায় রেখে খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অর্থমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্বে পাশে থেকে সাহস জোগাতে উপস্থিত থাকবেন তিনি। অন্যথায় অর্থমন্ত্রী অসুস্থতাজনিত কারণে প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নিতে না পারলে প্রধানমন্ত্রীই সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নোত্তরের জবাব দেবেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) বিকেল তিনটার দিকে জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল। মূল বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১৮ দশমিক ১ শতাংশ। বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ধরা হয়েছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ ও মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।
সারাবাংলা/এনআর/জেএএম