Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘প্রাণ বাঁচাতেই বিএসএফ সদস্যরা সীমান্তে গুলি চালায়’


১৫ জুন ২০১৯ ১৬:০৩

ঢাকা: বাংলাদেশ ও ভারতীয় সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বেড়ে যাওয়ার ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত বলে অভিহিত করেছেন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) মহাপরিচালক (ডিজি) রজনীকান্ত মিশ্র। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশি চোরাচালানিরা যখন ভারতীয় জোয়ানদের ওপর ছুরি ও পাথর নিয়ে আক্রমণ করে তখনই হত্যাকাণ্ড ঘটে। মূলত প্রাণ বাঁচাতেই বিএসএফ সদস্যরা গুলি চালিয়ে থাকে।’

শনিবার (১৫ জুন) পিলখানা সদর দফতরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) মহাপরিচালক পর্যায়ে তিন দিনব্যাপী সম্মেলনের শেষ দিনের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

‘২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত সীমান্তে ১৬টি হত্যাকাণ্ড ঘটে। এখনো সাত মাস বাকি রয়েছে। অথচ এর আগের বছরগুলোতে দেখা গেছে, সীমান্তে হত্যাকাণ্ড পর্যায়ক্রমে কমে এসেছিল’, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে বিএসএফ প্রধান বলেন, ‘গতবছর মাত্র একজন বাংলাদেশি বিএসএফের গুলিতে মারা গেছে। তবে এবার হত্যা বেড়ে গেছে। এরপরও আমরা সীমান্তে হত্যা কমাতে জোয়ানদের নন নেথাল অস্ত্র ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করছি। সামনে এ নিয়ে আরও জোরদার কাজ অব্যাহত থাকবে। যাতে সীমান্তে হত্যাকাণ্ড শূণ্যের কোঠায় নেমে আসে।’

বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে ভারতে জেএমবিকে আশ্রয়–প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্মেলনে এ ব্যাপারে কি ধরনের আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে বিএসএফ প্রধান বলেন, ‘বৈঠকে এ নিয়ে সে অর্থে তেমন কোনো আলোচনা হয়নি। তবে কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে ভারত সহায়তা দেয় না।’

বিজিবি প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাফিন আহমেদও বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় না দেওয়ার ব্যাপারে উভয় বাহিনী একমত রয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

মিয়ানমারের পর এখন ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ইয়াবার চালান আসছে, এই বিষয়ে বিএসএফ প্রধান বলেন, ‘তৃতীয় একটি দেশ থেকে বাংলাদেশে ইয়াবা আসছে। ভারত কোনোভাবেই ইয়াবা চোরাচালানের ব্যাপারে জড়িত নয় বরং সম্প্রতি বাংলাদেশি দুজন নারী ইয়াবা নিয়ে ত্রিপুরায় প্রবেশ করে জনতার হাতে ধরা পড়েছিল। বিষয়টি জানার পর বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানানো হয়েছিল।’ ইয়াবা পাচারের সঙ্গে ভারত জড়িত নয় বরং তৃতীয় একটি দেশ জড়িত বলে উল্লেখ করেন তিনি।

কুড়িগ্রামে ফেলানী হত্যাকাণ্ড ও মেহেরপুরে আম পাড়তে গিয়ে এক বালকের বিএসএফের গুলিতে নিহত হওয়ার পর বিচার হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বিএসএফ মহাপরিচালক বলেন, ‘ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সর্বোচ্চ গুরুত্ব রয়েছে এ বিষয়গুলোর প্রতি।’ তবে বিষয় দু’টি কোন পর্যায়ে আছে তা জানতে চাইলে প্রশ্নটি এড়িয়ে যান তিনি।

পিলখানায় অনুষ্ঠিত বিজিবি-বিএসএফের মধ্যকার এটি ৪৮তম সম্মেলন। এতে ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসের কর্মকর্তাসহ ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ১৯ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়।

বৈঠকে বিজিবি প্রধান বলেন, ‘উভয় বাহিনীর মধ্যে বেশ কয়েকটি ইস্যু নিয়ে আলাপ আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে সীমান্তে হত্যাকাণ্ড শূণ্যের কোঠায় নিয়ে আসার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। চোরাচালান বন্ধে কাজ আরও জোরদারের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে মাদকদ্রব্য চোরাচালান, অস্ত্র ও স্বর্ণ চোরাচালান ও নকল টাকা রোধ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ‍দুই বাহিনীর কেউ যেন অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম না করে, সে ব্যাপারেও কথাবার্তা হয়েছে।

সারাবাংলা/ইউজে/এমও

বিএসএফ বিএসএফ. বিজিবি বিজিবি সীমান্তে হত্যা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর