ঢাকা: যত দ্রুত সম্ভব মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের মাধ্যমে দল পুনর্গঠন ও শক্তিশালী করার তাগিদ দিয়েছে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটি। পাশাপাশি ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অখণ্ডতা রক্ষার ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন কমিটির সদস্যরা।
শনিবার (১৫জুন) অনুষ্ঠিত বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। সন্ধ্যা ছয়টায় শুরু হয়ে বৈঠক শেষ হয় রাত আটটায়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. মঈন খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বরচন্দ্র রায় ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দলের অস্তিত্ব রক্ষায় সংগঠন শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। এ জন্য গত মার্চ থেকে শুরু হওয়া পুনর্গঠনের কাজ দ্রুত শেষ করার তাগিদ দেন তারা। স্থায়ী কমিটির বেশিরভাগ সদস্য মত দেন এখন পর্যন্ত যেসব কমিটি পুনর্গঠন হয়নি, সেগুলো আগামী কয়েক মাসের মধ্যে পুনর্গঠন করতে হবে। আহ্বায়ক কমিটিগুলোকে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে রূপ দিতে হবে।
কমিটি পুনর্গঠনের কাজ কতটুকু এগিয়েছে, সে ব্যাবারে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্থায়ী কমিটির সদস্যদের অবহিত করেন। যেসব জেলায় মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি রয়েছে, সেগুলোর ব্যাপারেও স্থায়ী কমিটিকে একটা পরিষ্কার ধারণা দেন তিনি।
জানা গেছে, বৈঠকে আলোচনার অন্যতম বিষয় ছিল জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং ২০ দলীয় জোট। চলমান পরিস্থিতিতে এ দুইটি রাজনৈতিক জোটের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক কেমন হবে— সে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় বৈঠকে। স্থায়ী কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দুই সদস্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। এ ব্যাপারে অন্য পাঁচ সদস্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে অবস্থান নেন এবং জোটের অখণ্ডতা রক্ষার পক্ষে মত দেন। পাশাপাশি ২০ দলীয় জোটের ব্যাপারেও ইতিবাচক মনোভাব দেখান তারা।
এদিকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের চলমান অস্থিরতা দূর করার ব্যাপারেও আলোচনা হয় বৈঠকে। স্থায়ী কমিটির বেশিরভাগ সদস্যই ছাত্রদলের বয়সসীমা বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্তের পক্ষে মত দেন। আবার দুই/তিনজন সদস্য বয়সসীমা তুলে দিয়ে নিয়মিত কমিটি গঠনের পক্ষে মত দেন। তবে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ওপর ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে একমত পোষণ করেন সবাই।
বৈঠকে কী কী বিষয় আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘এটা আমাদের রেগুলার বৈঠক। মেজর কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সাংগঠনিক আলোচনা হয়েছে।’
দল পুনর্গঠন ও জোটের অখণ্ডতা রক্ষার ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়েছে কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এগুলো তো সাংগঠনিক আলোচনার মধ্যেই পড়ে। তাছাড়া বলার মতো কোনো বিষয় থাকলে তো দলের মুখপাত্র হিসেবে মহাসচিব আপনাদেরকে জানিয়েই দিত।’
ড. মঈন খান সারাবাংলাকে বলেন, ‘তেমন কিছু না। সাংগঠনিক বিষয় নিয়েই আলোচনা হয়েছে। জোটের ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে।’
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম