বালিশ কেনার দায়িত্বে ছিলেন ছাত্রদল নেতা: প্রধানমন্ত্রী
১৭ জুন ২০১৯ ২১:৩২
সংসদ ভবন থেকে: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের আবাসন প্রকল্পে আলোচিত সেই বালিশ দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জাতীয় সংসদে। এর জবাবে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যে সরকারি কর্মকর্তা ওই বালিশ কেনার দায়িত্বে ছিলেন, তিনি ছাত্রদলের সাবেক নেতা।
সোমবার (১৭ জুন) বিকেলে জাতীয় সংসদে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট পাসের আগে বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। সম্পূরক বাজেটে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের জন্য বাড়তি এক হাজার ১৮২ কোটি ৯৩ লাখ ৫৬ হাজার টাকা বরাদ্দের বিরোধিতা করে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্যরা।
আরও পড়ুন- বিরোধিতার মুখে ১৫ হাজার কোটি টাকার সম্পূরক বাজেট পাস
বিরোধী দলীয় সদস্যরা বলেন, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় দুর্নীতিগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছে। রূপপুরে বালিশ কিনে এই মন্ত্রণালয় তার রূপ প্রকাশ করেছে। এখানে অতিরিক্ত বরাদ্দ দিলে তা দুর্নীতির মাধ্যমে লুটপাট হবে।
জবাবে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এখানে পারমাণবিক কেন্দ্রে বালিশ কেনা নিয়ে কথা উঠেছে। কিন্তু যিনি ওই দায়িত্বে ছিলেন, তার কিছু পরিচয় পেয়েছি। তিনি বুয়েটে ছাত্রদল করতেন এবং নির্বাচিত ভিপিও ছিলেন। তাকে এরই মধ্যে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন- ব্যাংকে টাকা আছে, তবে লুটে খাওয়ার জন্য নয়: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই বালিশটি কী বালিশ? তুলা, ঝুট, সিনথেটিক না অন্যকিছুর বালিশ— সেটা নিয়েও প্রশ্ন আছে। তারপরও আমি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি। তিনি আরও বলেন, পঁচাত্তরের পর থেকে দুর্নীতি শুরু হয়েছে, যা এখন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। আমি এই দুর্নীতি নির্মূলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
এদিন জাতীয় পার্টি, বিএনপিসহ বিরোধী দলীয় সদস্যদের তুমুল বিরোধিতা সত্ত্বেও ‘নির্দিষ্টকরণ (সম্পূরক) বিল-২০১৯’ পাসের মাধ্যমে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট পাস হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে সংসদ ৩৭টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে অতিরিক্ত ১৫ হাজার ১৬৬ কোটি ১৮ লাখ ৫৪ হাজার টাকা ব্যয় করার অনুমতি দিয়েছে। এর মধ্যে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জন্য বাড়তি বরাদ্দ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা।
এর আগে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের আবাসন পল্লীর জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনা ও তা ভবনে তোলায় অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকল্পের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের থাকার জন্য গ্রিন সিটি আবাসন পল্লীতে ২০ তলা উচ্চতার ১১টি ও ১৬ তলা উচ্চতার আটটি ভবন নির্মিত হচ্ছে। এর মধ্যে ২০ তলা ভবনের প্রতিটি ফ্ল্যাটের জন্য একেকটি বালিশ কিনতে খরচ দেখানো হয়েছে পাঁচ হাজার ৯৫৭ টাকা, আর ভবনে বালিশ ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ৭৬০ টাকা। এ ঘটনায় বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়্যেদুল হক সুমন।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বালিশ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র