একমাসের মধ্যে সব ফার্মেসি থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সরানোর নির্দেশ
১৮ জুন ২০১৯ ১২:১৮
ঢাকা: দেশের সব ফার্মেসি থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ একমাসের মধ্যে সরিয়ে ফেলে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি ও সংরক্ষণ বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ জুন) বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ ও রুল জারি করেন। স্বাস্থ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, বাণিজ্য সচিব, শিল্প সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও উপ পরিচালক,পুলিশের মহাপরিদর্শক, বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির সভাপতি ও মহাসচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গত ১০ জুন ‘বিশ্ব নিরাপদ খাদ্য দিবসে’র অনুষ্ঠানে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের উপপরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার সাংবাদিকদের বলেন, নিয়মিত বাজার তদারকি চলছে। গত ৬ মাসের এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, রাজধানীর প্রায় ৯৩ শতাংশ ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি হচ্ছে।
এ বিষয়ে সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে গত ১৭ জুন জাস্টিস ওয়াচ ফাউন্ডেশনের পক্ষে নির্বাহী পরিচালক সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাহফুজুর রহমান মিলন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট দায়ের করেন। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
পরে মাহফুজুর রহমান মিলন বলেন, আদালত আদেশের পাশাপাশি রুল জারি করেছেন। রুলে ফার্মেসি/ওষুধাঘারে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি ও সংরক্ষণ বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন।
মাহফুজুর রহমান মিলন আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে আদালত স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালককে ফার্মেসিতে থাকা মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি, সংরক্ষণ ও সরবরাহকারীদের শনাক্ত করতে পৃথক স্বাধীন অনুসন্ধান কমিটি করার নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে এ বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তার একটি প্রতিবেদন আদালতে দিতে বলেছেন।
একইসঙ্গে ভোক্তা অধিকার অধিদফতরের উপপরিচালকের মন্তব্যের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দিতে ওই অধিদফতরের মহাপরিচালক ও উপপরিচালককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া সারাদেশে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সংরক্ষণ ও বিক্রি বন্ধ এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ প্রত্যাহার/ধংস করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখার দায়ে ভোক্তা আইনের বিভিন্ন ধারায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা ও সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে মঞ্জুর শাহরিয়ার বলেছিলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখার দায়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা ও সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই প্রতারণা রোধে অধিদফতরের পক্ষ থেকে সারাদেশেই তদারকি টিম গঠন করা হয়েছে। কখনো ক্রেতা সেজে, আবার কখনো ঝটিকা অভিযানের মাধ্যমে ফার্মেসিগুলোর কার্যক্রমে নজরদারি করা হচ্ছে।
সারাবাংলা/এজেডকে/জেএএম