৩৮তম বিসিএস: ঈদের আগেই লিখিত পরীক্ষার ফলাফল
২২ জুন ২০১৯ ১৫:২৮
ঢাকা: ১১ মাস পেরিয়ে গেছে। এখনো ৩৮তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে পারেনি সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। যে কারণে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেওয়া চাকরিপ্রত্যাশীরা অনেকটা হতাশ হয়ে পড়েছেন। যদিও পিএসসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক জানিয়েছেন, ঈদুল আজহার আগেই ৩৮তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হবে। আর একইদিনে ৪০তম প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করারও সর্বোচ্চ চেষ্টা রয়েছে তাদের।
শনিবার (২২ জুন) পিএসসি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক সারাবাংলাকে বলেন, ‘ঈদের আগেই আমরা চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছে ফলাফল পৌঁছে দিতে চাই। খাতা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে আমরা অনেক বেশি সতর্ক ছিলাম, যে কারণে ফলাফল প্রকাশে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। নিখুঁত মূল্যায়ন করতে হলে কিছুটা সময় লাগবেই।
এটা চাকরিপ্রত্যাশীদের বুঝতে হবে, ধৈর্য ধরতে হবে। আমরা তাদের হয়েই কাজ করছি। তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে কেউ যেন প্রশ্ন তুলতে না পারে সেই চেষ্টাই করছে পিএসসি।
‘প্রথমবারের মতো ৩৮তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার খাতা আমরা দু’জন পরীক্ষকের দ্বারা মূল্যায়ন করেয়েছি। কিছু কিছু খাতা তৃতীয় পরীক্ষকের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হচ্ছে। যে কারণে ফলাফল প্রকাশে দেরি হচ্ছে।
২০১৮ সালের আগস্ট মাসে ৩৮তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় একবছর হতে চলেছে এখনো ফলাফল প্রকাশ না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন চাকরিপ্রত্যাশীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৩৮তম বিসিএসে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেওয়া বেশ ক’জন শিক্ষার্থী সারাবাংলার এই প্রতিবেদকের কাছে তাদের হতাশার কথা জানান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করা এক চাকরিপ্রত্যাশী বলেন, ৩৮তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা দিয়ে বিয়ে করেছিলাম, সন্তানের বাবাও হয়েছি। কিন্তু লিখিত পরীক্ষার ফলাফল আসেনি। এখন অন্য কোনো চাকরিতেও মন বসাতে পারছি না। এই ফলাফলের অপেক্ষা ব্যক্তিগত জীবনেও প্রভাব ফেলেছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের আরেক চাকরিপ্রত্যাশী জানান, ‘বিসিএসে লিখিত দিয়েছি জানলে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেতে মুশকিল হয়। কারণ ধারণা করা হয় আমরা বিসিএসে টিকে গেলে চলে যাব। তাছাড়া এমন ঝুলন্ত অবস্থায় কোনো কাজেও মন স্থির করতে পারছি না। পিএসসি যদি বিষয়টি নিয়ে ভাবত, তাহলে এতোদিন সময় নিত না। আমাদেরকেও এমন বাজে সময়ের ভেতর দিয়ে যেতে হতো না।’
বিষয়টি নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে চাকরিপ্রত্যাশীদের হতাশ না হওয়ার পরামর্শ দেন পিএসসি চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘ঈদের আগে ফলাফল প্রকাশের জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। তিন দফায় খাতা মূল্যায়ন করানো হচ্ছে। সেটা কয়েকদিনের মধ্যেই শেষ হয়ে গেলে আমরা ফলাফল প্রস্তুত করব। হতাশ হওয়ার কিছু নেই।’
মোহাম্মদ সাদিক জানান, ৩৭তম বিসিএস থেকে নন ক্যাডার নিয়োগ এবং ৩৯তম বিশেষ বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করায় ৩৮তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল পিছিয়ে গেছে। এখন পিএসসির সামনে ৪১তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ আর ৪০তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ ছাড়া তেমন বড় কোনো কর্মভার নেই। তাই লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে আর বিলম্ব হবে না।
উল্লেখ্য, ৩৮তম বিসিএসের মাধ্যমে জনপ্রশাসনে ২ হাজার ২৪ জন ক্যাডার কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে। যেখানে প্রশাসন ক্যাডারে ৩০০টি, পুলিশ ক্যাডারের ১০০টি পদসহ ৩৮তম বিসিএসে সাধারণ ক্যাডারে মোট ৫২০টি, কারিগরি ও পেশাগত ক্যাডারে ৫৪৯টি এবং শিক্ষা ক্যাডারে ৯৫৫টি পদ থাকছে।
এদিকে, ৪০তম বিসিএসের প্রিলিমিনারির পরীক্ষা গত মে মাসের ৩ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়। পিএসসির বেশ ক’টি সূত্র সারাবাংলাকে জানিয়েছে, প্রিলিমিনারির ওএমআর শিট মার্কিংয়ের কাজ এখনো শুরু করেনি পিএসসি। জুলাইয়ের আগে শুরু হবে কি না সে ব্যাপারেও নিশ্চিত কোনো তথ্য নেই।
তবে কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক জানিয়েছেন, ৩৮তম লিখিত পরীক্ষার ফলাফলের সঙ্গে ৪০তম প্রিলির ফলাফল প্রকাশ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন তারা।
সংশ্লিষ্ট সংবাদ:
কবে হবে ৩৮তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল, জানে না কেউ!
বিসিএস পরীক্ষা বর্জন করলেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা
সারাবাংলা/টিএস/এটি/জেডএফ