সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় সহায়তা দেবে জাপান
২৫ জুন ২০১৯ ০৮:২৮
ঢাকা: ‘সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি’ নামের একটি প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছে সরকার। আর এতে সহায়তা দেবে জাপান। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হবে ৭৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে আসবে ৪০ কোটি ৮ লাখ টাকা এবং জাপান সরকার অনুদান হিসেবে দেবে ৩৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পুলিশ।
পরিকল্পনা কমিশনের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, মঙ্গলবার (২৫ জুন) প্রকল্পটির অনুমোদন প্রস্তাব জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপন করা হতে পারে। এরইমধ্যে একনেকের কার্যতালিকায় প্রকল্পটির নাম অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে এ বছরের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পের আওতায় বিশেষ ধরনের এপিসি যানবাহন ১০টি, এসকট ভেহিকেল ২০টি এবং ৫টি ফ্লাডলাইট ভেহিকেল কেনা হবে।
প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, সরকার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। সীমিত জনবল, লজিস্টিক এবং যন্ত্রপাতি নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ গত কয়েক বছরে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রায় প্রতিটি অপারেশনে সফলতা অর্জন করেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক কিছু জঙ্গিগোষ্ঠীর কারণে বাংলাদেশের এ অর্জন হুমকির মুখে পড়েছে; যা এদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। নিরাপত্তা, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অর্থায়নের উৎস এবং তাদের সদস্যদের অনুপ্রেরণা ইত্যাদি দৃষ্টিকোণ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বর্তমানে সন্ত্রাসের ধরণ পরিবর্তন হচ্ছে। এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি বিপজ্জনক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কার্যক্রম। সম্প্রতি গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কিছু ভয়ানক সন্ত্রাসী কার্যক্রমের পরিকল্পনা নৎসাত করে দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। ফলে জীবন ও সম্পদ রক্ষা পেয়েছে।
প্রস্তাবনায় আরও বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগর পুলিশকে (ডিএমপি) প্রতিনিয়ত সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালা করতে হয়। প্রয়োজনীয় যানবাহন ও লজিস্টিকের অভাবে অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে পুলিশকে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। বর্তমানে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো রাতের বেলায় তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। কিন্তু ফ্লাডলাইট ভেহিকেলের মতো বিশেষ ধরনের যানবাহনের অভাবে গোয়েন্দা তথ্য থাকার পরও পুলিশকে অভিযান পরিচালনা করতে দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। এতে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো তাদের কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সুযোগ পায়। এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে।
প্রকল্পটি প্রক্রিয়াকরণের দায়িত্ব পালন করছেন পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সদস্য আবুল কালাম আজাদ। তিনি একনেকের জন্য তৈরি সারসংক্ষেপে মতামত দিতে গিয়ে বলেছেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এতে দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন হবে। সে বিবেচনায় প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কার্যক্রম মোকাবিলা এবং মামলা তদন্তের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পুলিশের সক্ষমতা বাড়বে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সারাবাংলা/জেজে/পিটিএম