Friday 11 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পানির দাম বাড়াতে চট্টগ্রাম ওয়াসাকে পরামর্শ মন্ত্রী-সচিবের


২৯ জুন ২০১৯ ০১:০১ | আপডেট: ২৯ জুন ২০১৯ ০১:১৭
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে ওয়াসাকে পানির দাম বাড়ানোর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম ও সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। অজনপ্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও নিজস্ব আয় বাড়ানোর তাগিদ থেকেই ওয়াসাকে এই পরামর্শ দেওয়ার কথা বলেছেন মন্ত্রী ও সচিব। তবে মন্ত্রী-সচিবের সামনেই এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।

শুক্রবার (২৮ জুন) বিকেলে চট্টগ্রাম ওয়াসার সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী ও সচিব এই বক্তব্য দেন।

মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, দেশের চারটি ওয়াসার কোনোটিই লাভজনক ও স্বনির্ভর নয়,ঋণ, ভর্তুকি ও অন্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে বেশিদিন বাঁচা যায় না। কখনো কখনো অজনপ্রিয় সিদ্ধান্ত নিতে হয়। ‘তাই পানির দাম মাসে যদি ১০০ টাকা বেশি দেন, তাহলে বছর শেষে এক লাখ টাকা লাভ হবে। তাই যারা দায়িত্বশীল আছেন তাদের মানুষকে বুঝাতে হবে, পানির পয়সা দেবেন না, ভালো পানি পাবেন না।’ বলেন মন্ত্রী

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম ওয়াসার বোর্ড সদস্যদের ইঙ্গিত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘জনগণ যদি কোন বিষয় না বোঝে, সেই না বোঝার স্রোতে গা ভাসানোর দায়িত্ব আমাদের না। আমাদের দায়িত্ব হবে, যেখানে কোনো ত্রুটি- বিচ্যুতি আছে তা মানুষকে বুঝিয়ে দেওয়া।’

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী পানির অপচয় রোধ, বিল কার্যক্রম স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি চালুর বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেন।

একই সভায় স্থানীয় সরকার সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘চট্টগ্রাম ওয়াসার বোর্ড পানির দাম যেন ঢাকা ওয়াসার মতো হয়—তা অনুমোদন দিতে পারে। কিন্তু বোর্ড সদস্যরা দাম বৃদ্ধির বিষয়টি বিরোধিতা করেন বলে শুনেছি। যদি পানির দাম ঢাকার মতো নেওয়া যায় তাহলে সিস্টেম লস পুষিয়ে নিতে পারবে চট্টগ্রাম ওয়াসা। পানির অপচয় রোধে প্রিপেইড মিটার চালু করা যেতে পারে।’

সভায় চট্টগ্রাম ওয়াসার পানির দাম বাড়ানোর বিষয়ে মন্ত্রী–সচিবের পরামর্শের বিরোধিতা করে ক্যাবের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘ওয়াসার পানির গড়বিল, অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম নিয়ে তদন্ত কমিটি করেছে বোর্ড। তদন্ত প্রতিবেদনও জমা পড়েনি। আবার চট্টগ্রাম নগরে এখনো পানির সংকট দূর হয়নি। এই অবস্থায় পানির দাম বাড়ানো হলে গ্রাহকেরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তারা এমনিতেই বেশি টাকা দিয়ে কম পানি পাচ্ছেন।’

গত ফেব্রুয়ারি পানির দাম পাঁচ শতাংশ বাড়ায় ওয়াসা। আবাসিকে প্রতি ইউনিট (এক হাজার লিটার) পানির দাম ৯ টাকা ৪৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৯ টাকা ৯২ পয়সা করা হয়েছে। অনাবাসিকে ২৬ টাকা ২৫ পয়সা থেকে ২৭ টাকা ৫৬পয়সা করা হয়েছে।

চট্টগ্রামে ওয়াসার গ্রাহকসংখ্যা ৭১ হাজার ১৩০। এর মধ্যে ৬৪ হাজার ১৯টি আবাসিক এবং বাকি ৭ হাজার ১১১টি অনাবাসিক গ্রাহক। চট্টগ্রামে বর্তমানে পানির চাহিদা রয়েছে ৪২ কোটি লিটার। ওয়াসা উৎপাদন করে ৩৬ কোটিলিটার। ঘাটতি আছে ৬ কোটি লিটার।

মতবিনিময় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, চট্টগ্রাম ওয়াসার চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম নজরুল ইসলাম ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম ফজলুল্লাহ এবং শ্রমিকনেতা তাজুল ইসলাম।

সভা শেষে গ্রাহক প্রতিনিধি হিসেবে নিয়ম লঙ্ঘন করে একই ব্যক্তির (জাতীয় পার্টির নেতা সোলায়মান আলম শেঠ) চার বছর ধরে ওয়াসা বোর্ডে সদস্য থাকার বিষয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘ওয়াসা বোর্ড অবশ্যই বিষয়টি দেখবে। আমি ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালককে নির্দেশ দিচ্ছি যাতে বোর্ড সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’

মাল্টিপারপাস কোম্পানি খুলে গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে কারাগারে যাওয়া ব্যক্তিকে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে বসানোর বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘কারাগারে যাওয়া মানেই অপরাধী নয়। যতক্ষণ সাজা হবে না, ততক্ষণ তো অপরাধ প্রমাণ হয়েছে বলা যাবে না।’

সারাবাংলা/আরডি/ এমএইচ

গ্রাহক সেবা চট্টগ্রাম ওয়াসা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর