সুন্দরবন এলাকায় শিল্পস্থাপনে ৫ প্রতিষ্ঠানকে ছাড়পত্র
২৯ জুন ২০১৯ ১৬:৫৫
ঢাকা: সুন্দরবন রিজার্ভ ফরেস্টের বাইরের চারদিকে ১০ কিলোমিটার এলাকাকে সরকার প্রতিবেশগত সঙ্কটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করলেও এর ৬ কিলোমিটারের মধ্যেই দেওয়া হয়েছে শিল্পপ্রতিষ্ঠান নির্মাণের অনুমতি। সঙ্কটাপন্ন এলাকায় শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপনে পরিবেশগত ছাড়পত্র পেয়েছে ৫টি সিমেন্ট কারখানা। যেগুলোর মাধ্যমে বায়ু দূষণের সম্ভাবনা রয়েছে।
শনিবার (২৯ জুন) জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য লুৎফুন নেসা খান ও মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের টেবিলে উত্থাপিত পৃথক দুই প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য লুৎফুন নেসা খানের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘সুন্দরবনের কাছাকাছি বাগেরহাটের মংলাবন্দর এলাকায় ৫টি সিমেন্ট কারখানাকে শিল্পস্থাপনে পরিবেশগত ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- মেঘনা সিমেন্ট মিলস লিমিটেড, বসুন্ধরা সিমেন্ট মিলস লিমিটেড, মংলা সিমেন্ট মিলস লিমিটেড, দুবাই-বাংলা সিমেন্ট মিলস লিমিটেড এবং হোলসিম (বাংলাদেশ) লিমিটেড।’
আরও পড়ুন: সুন্দরবন এখন ধ্বংসের মুখে: সুলতানা কামাল
তিনি আরও বলেন, ‘কারখানাগুলো সুন্দরবন রিজার্ভ ফরেস্ট এলাকা থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে স্থাপিত হচ্ছে। এগুলোর মাধ্যমে যাতে পরিবেশ দূষণ না হয়, সেজন্য পরিবেশ অধিদপ্তর নিয়মিত পরিবীক্ষণ করছে এবং প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছে। সুন্দরবনের কাছাকাছি স্থানে এলপিজি প্লান্টসহ বেশকিছু শিল্পপ্রতিষ্ঠান থাকলেও সেগুলো দূষণকারী নয়।’
মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘ফরেস্ট ইনভেনটরি ১৯৮৫, ১৯৯৫ ও ২০১৩ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী সুন্দরবনে এককভাবে যথাক্রমে ২০ শতাংশ, ১৮ দশমিক ২০ শতাংশ এবং ১৮ শতাংশ ভূমি সুন্দরী গাছে আচ্ছাদিত রয়েছে।’
আরও পড়ুন: সুন্দরবনকে ঝুঁকিপূর্ণ তালিকাভুক্তির প্রস্তাবে উদ্বেগ টিআইবির
তিনি আরও বলেন, ‘সুন্দরবনে সুন্দরী গাছের পরিমাণ কিছুটা কম থাকলেও গেওয়া গাছের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বাড়ছে। এছাড়া ২০১৫ সালের বনশুমারি অনুযায়ী বাঘ ছিল ১০৬টি। ২০১৮ সালে ক্যামেরা ট্রাকিংয়ের জরিপ অনুযায়ী বাঘের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১১৪টি ‘।
মন্ত্রী জানান, সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য ‘বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫’-এর ৫ (১) ধারার ক্ষমতাবলে ১৯৯৯ সালে সুন্দরবন রিজার্ভ ফরেস্টের বাইরের চারদিকে ১০ কিলোমিটার এলাকাকে সরকার প্রতিবেশগত সঙ্কটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) হিসেবে ঘোষণা করে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনকে কালো তালিকা থেকে বাঁচাতে প্যারিসে দৌড়-ঝাঁপ
তিনি বলেন, ‘সুন্দরবনের প্রতিবেশগত সঙ্কটাপন্ন এলাকায় পরিবেশ দূষণকারী শিল্পকারখানা স্থাপনে পরিবেশগত ছাড়পত্র দেওয়া হয় না। সুন্দরবন ইসিএ এলাকায় অবস্থিত বিদ্যমান শিল্প কারখানা গুলোতে মালিকগণ কর্তৃক পরিবেশ ও প্রতিবেশ দূষণের প্রয়োজনীয় প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম