Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, জনগণের সঙ্গেই থাকব: খালেদা


৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৩:৫৩

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার সম্ভব্য নেতিবাচক রায়ের দিকে ইঙ্গিত করে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। যেখানেই থাকি জনগণের সঙ্গে থাকব। বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গেই থাকব।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভায় উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নির্বাহী কমিটির সভা এখনো চলছে।

বক্তব্যে খালেদা জিয়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দশম জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। এ ছাড়াও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

খালেদা জিয়া বলেন, নির্বাচন করতে পার্লামেন্টে ভাঙতে হবে, সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে, ইভিএম বা ডিভিএম দিয়ে ভোট নেওয়া চলবে না।

ভোটের আগেই শেখ হাসিনাকে সরকার থেকে সরে দাঁড়াতে হবে বলেও দাবি তোলেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

তিনি বলেন, ‘আমাকে কোনো ভয়, ভীতি, লোভ-লালসা দেখিয়ে কেউ কিছু করতে পারবে না। অতীতেও পারেনি। ভবিষ্যতেও পারবে না। আমি আপনাদের (বিএনপির নেতা-কর্মী) সঙ্গে আছি, দেশের মানুষের সঙ্গে আছি। যেখানেই থাকি, দেশের জনগণের সঙ্গেই থাকব।’

বিএনপিরও কোনো ভয় নেই দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘দেশ গণতন্ত্র থাকুক, আইনের শাসন থাকুক, তাদের সকলের মৌলিক অধিকার মানবাধিকার ঠিক থাকুক পুলিশও সেটা চায়। তারাও এ দেশের জনগণ, সেই জন্য তারাও এ দেশ রক্ষা করতে চায়, তারা চায় বিএনপি থাকুক। কিন্তু পুলিশের ওপর এমনভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়, তাদেরকেও ভয়-ভীতি দেখানো হয়। পুলিশকে বাধ্য করা হচ্ছে অন্যায়ভাবে দলীয় কাজে ব্যবহার করতে। তাই বলতে চাই, বিএনপির কোনো ভয় নাই। বিএনপির সঙ্গে এ দেশের জনগণ আছে, এ দেশের পুলিশ বাহিনী আছে, এ দেশের সাধারণ মানুষ আছে। কাজেই বিএনপির কোনো ভয় নেই। ভয় আওয়ামী লীগের!’

বিজ্ঞাপন

প্রশাসনও বিএনপির সঙ্গে আছে, ‘তারা প্রশাসনের ওপর অনেক ভরসা করে। নিজস্ব দলীয় লোক দিয়ে প্রশাসনকে যেমন ইচ্ছা তেমন সাজায়। প্রশাসনকে দলীয় কাজে তারা ব্যবহার করছে, প্রশাসন তাদেরকে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে সাহায্য করবে। কিন্তু প্রশাসন যদি একটু সহযোগিতা পায় নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য, আমি বিশ্বাস করি প্রশাসনের কেউ তাদের (সরকার) কথা শুনবে না। তারা গণতন্ত্র চায়, গণতন্ত্রের পক্ষেই কাজ করবে।’

‘সেই জন্যই এখন কীভাবে বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখা যায়, সেটাই তাদের (সরকার) সব চেয়ে বড় লক্ষ্য’— বলেন বিএনপির চেয়ারপারসন।

তিনি বলেন, ‘সে কারণেই এখন আমাদের বিরুদ্ধে এত মামলা। কিন্তু বিচার কোথায়? বিচার করবে কী? অপরাধ নেই, বিচার করবে কী করে?’ কোন অপরাধের বিচার করবে? এখন তারা গায়ের জোরে বিচার করতে চায়।’

সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকেন। বহু ষড়যন্ত্র হবে। নানা রকমভাবে হয়রানি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু আমরা ভয়ে ভীত নই। আমি আপনাদের বলেছি, ওয়ান ইলেভেনের সময় আমাকে বলেছে, আপনি বিদেশে না গেলে, আপনার দুই ছেলেকে নিয়ে যাওয়া হবে। এমনকি মঈন (মঈন ইউ আহমেদ) সাহেবও বলেছেন। পরে আমার ছেলেদেরকে নিয়েও গেছে। দেখেছেন তাদের ওপর কী অত্যাচার করা হয়েছে। তবুও আমি বিদেশে যাইনি।’

দলের সঙ্গে বেইমানি করলে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না উল্লেখ করে বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, ‘আপনারা অনেকেই মনে করেছিলেন, ভেতরে থাকায় আমি কোনো খবর পাইনি। কিন্তু আমি খবর রেখেছি। এবং সেভাবেই আমরা কিন্তু কাজগুলো করছি। যারা আন্দোলন সংগ্রামে ছিল, যারা কাজ করেছে, যারা বেইমানি করেনি দলের সঙ্গে, তাদেরকে আমরা প্রমোশন দেব ভাল ভাল জায়াগায়। ভবিষ্যতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তাদেরকে মূল্যায়ন করা হবে। কিন্তু যারা বেইমানি করবে। এক পা এদিকে, আরেক পা ওদিকে। তাদেরকেও চেনা যাবে। তাদেরকে কিন্তু মূল্যায়নের জায়গা থাকবে না।

বিজ্ঞাপন

জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, দেশ রক্ষা, গণতন্ত্র, ঐক্য, শান্তি, শৃঙ্খলা, গুম-খুনের বিরুদ্ধে বিএনপি জেগে উঠবে, ২০ দল জেগে উঠবে। এ ছাড়া অন্য যে রাজনৈতিক দলগুলো আছে, তাদেরকে আমরা জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার জন্য আহ্বান জানাব। জাতির দুর্দিনে জাতীয় ঐক্য সব চেয়ে প্রয়োজন। আমরা কে কি পেলাম, সেটা বড় কথা নয়। বরং জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে যদি দেশটাকে রক্ষা করতে পারি, সেটাই বড় পাওয়া হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ব্যারিস্টার জমিরুদ্দিন সরকার, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, এয়ারভাইস মার্শাল আলতাফ হোসেন চৌধুরী, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউছুফ, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, শামসুজ্জামান দুদু, মেজর জেনারেল (অব) রুহুল আলম চৌধুরী, ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন,  অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, এম এ মান্নান, এডভোকেট আহমেদ আজম খান, শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, জয়নুল আবদিন ফারুক, শাহজাদা মিয়া, আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল,খায়রুল কবির খোকন, হারুন অর রশীদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, গোলাম আকবর খন্দকার, শামা ওবায়েদ প্রমুখ উপস্থিত রয়েছেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির এই সভায়।

খালেদা জিয়ার রায়ের তারিখ নির্ধারণ হওয়ায় তড়িঘড়ি করে এই সভা আহ্বান করে বিএনপি। সভা করার জন্য ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, মহানগর নাট্যমঞ্চ, পূর্বাণী হোটেল ও ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরা বুকিং দেওয়ার চেষ্টা করলেও তা পারেনি বিএনপি। অবশেষে লা মেরিডিয়ানে সভা করার সুযোগ পায় তারা।

উদ্বোধনী বক্তব্য শেষে এখন চলছে দ্বিতীয় সেশন। রুদ্ধদ্বার এই শেসনে নির্বাহী কমিটির সদস্য ও কর্মকর্তাদের বক্তব্য শুনছেন খালেদা জিয়া। ধারণা করা হচ্ছে, এই সভা থেকে তৃণমূল নেতাদেরকে আগামী দিনের আন্দোলন-সংগ্রাম সম্পর্কে একটা দিকনির্দেশনা দেবেন তিনি।

সারাবংলা/এজেড/একে/আইজেকে

 

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

চট্টগ্রামে খালে ভাসছিল অর্ধগলিত লাশ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪:৩৩

বিএসইসি‘র চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৫১

সম্পর্কিত খবর