দুর্ঘটনা রোধে হচ্ছে পৃথক লেন
৪ জুলাই ২০১৯ ১০:৩৮
ঢাকা: সড়ক দুঘর্টনা রোধে লোকাল যানবাহনের জন্য পৃথক লেন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ জন্য ‘ঢাকা (মিরপুর)-উথুলী-পাটুরিয়া জাতীয় মহাসড়ক (এন-৫) এর নবীনগর থেকে নয়াহাট ও পাটুরিয়া ঘাট এলাকা প্রশস্তকরণসহ আমিনবাজার হতে পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ডেডিকেটেড সার্ভিস লেন ও বাস-বে নির্মাণ’ নামের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মহাসড়কের বাজার এলাকাগুলোর যানজট নিরসন ও দুর্ঘটনা প্রবণ স্থানগুলো সড়ক নিরাপত্তা উন্নয়ন, পণ্যবাহী ট্রাকগুলো সুশৃঙ্খলভাবে পারাপার পার্কিং নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে খরচ ধরা হবে ৬৯৬ কোটি ৩১ লাখ টাকা।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য সুবীর কিশোর চৌধুরী পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেন, ‘এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নিরাপদ ও উন্নত সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। তাই প্রকল্পটি অনুমোদনযোগ্য।’
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, প্রকল্পটি প্রস্তাব পাওয়ার পর গত বছরের ৬ নভেম্বর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করা হয়েছে। ফলে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় উপস্থাপন করার প্রস্তুতি রয়েছে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঢাকা-উথুলী-পাটুরিয়া-নটাখোলা-কাশিনাথপুর একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় মহাসড়ক। এ মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজারের অধিক হালকা ও ভারী যানবাহন চলাচল করে থাকে এবং যানবাহন সংখ্যা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। যানজট, দীর্ঘ ভ্রমণ সময় এবং সড়ক দুর্ঘটনা এই মহাসড়কের জন্য একটি নিত্য ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পণ্যবাহী যান চলাচল এবং সাধারণ জনগণের দ্রুত ও নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছার জন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। সম্প্রতি জাতীয় মহাসড়ক দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থানগুলো সড়ক নিরাপত্তা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ঢাকা-আরিচা জাতীয় মহাসড়কের ১৯টি দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থানে সড়ক প্রশস্তকরণ কাজ করা হয়েছে। যার সুফল এরইমধ্যে পাওয়া গেছে। বিশেষ করে হেমায়েতপুর, নবীনগর, বাথুলী ও নয়াডিঙ্গি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ডিভাইডারসহ ডেডিকেটেড লেন নির্মাণের ফলে লোকাল ট্রাফিক মহাসড়কের প্রধান যানবাহনের চলার পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে না এবং সামগ্রিকভাবে যানজট কম। কিন্তু এই মহাসড়কের আমিনবাজার হতে আরিচা পর্যন্ত প্রায় ৩২টি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দীর্ঘ সময় লোকাল যানবাহন দাঁড়িয়ে থেকে পণ্য ও যাত্রী উঠা নামা করায় অনাকাঙিক্ষতভাবে যানজট তৈরি হচ্ছে। এই সকল এলাকায় ডেডিকেটেড লেনসহ পৃথক সার্ভিস লেন করা হলে স্বল্প সময়ে পরিবহণ ব্যয় ও সময় সাশ্রয়ী মহাসড়কের সুফল পাওয়া যাবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ৩২টি বাসস্ট্যান্ড বাজার এলাকায় যনজটমুক্ত ও নিরবচ্ছিন্ন যানবাহন চলাচল করতে পারবে।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম গুলো হচ্ছে—৭ লাখ ৬ হাজার ঘন মিটার মাটির কাজ, বিদ্যমান ২ লেন সড়ককে ৪ লেনে উন্নীতকরণ, ১৬ দশমিক ৭৪ কিলোমিটার ডেডিকেটেড সার্ভিস লেন নির্মাণ, ৩ দশমিক ২৭ কিলোমিটার মূল সড়ক প্রশস্তকরণ, হার্ডশোল্ডার নির্মাণ, ৭১ দশমিক ২২ কিলোমিটার বিদ্যমান পেভমেন্ট সার্ফেসিং, ৮০টি নিরাপদ এপ্রোচ সড়ক নির্মাণ, রিজিড পেভমেন্ট নির্মাণ, ট্রাক রেস্ট এরিয়া নির্মাণ, আরসিসি কালভার্ট নির্মাণ, বেইলি সেতু স্থাপন এবং ফুটপাত নির্মাণ করা হবে।
সারাবাংলা/জেজে/একে