Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ডিসেম্বরে নির্বাচন, এত আগেই ক্যাম্পেইন কেন?’


৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৭:২২

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সিলেটে হযরত শাহ জালাল (রহ.) মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী প্রচারণার কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘ডিসেম্বরে নির্বাচন, এত  আগে ক্যাম্পেইন কেন? ভয়-ভীতি দেখিয়ে ভোটের ওয়াদা আদায় করা যাবে। কিন্তু মানুষের মনের মধ্যে যেটা আছে সেটা জানা যাবে না।’

রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে শনিবার দুপুরে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভায় উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নির্বাহী কমিটির সভা এখনো চলছে।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘দেশে যদি গণতান্ত্রিক অধিকারই না থাকে তাহলে নির্বাচন হবে কী করে? এখন নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে। তারা বলে বেড়াচ্ছে, ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে এত আগে ক্যাম্পেইন করার তো দরকার পড়ে না।’

‘নৌকা এমনই ডোবা ডুবছে যে, এখন থেকেই ক্যাম্পেইন করে মানুষের কাছে হাত তুলে ওয়াদা নিতে হচ্ছে ভোটের জন্য। মানুষকে ভয় দেখিয়ে হাত তোলানো যাবে। কিন্তু মানুষের মনের মধ্যে যেটা আছে, সেটা তো আর জানতে পারবেন না’ —বলেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘মানুষ দুঃশাসন থেকে মুক্তি চায়। এই দুরবস্থা থেকে মুক্তি চায়। অত্যচার থেকে মুক্তি চায়। গুম-খুন-হত্যা থেকে মুক্তি চায়, জেল জুলুম থেকে মুক্তি চায়। এই জন্য মানুষ একটা পরিবর্তন চায়। সেই পরিবর্তন আসতে হবে গণতন্ত্রের মাধ্যমে, ভোটের মাধ্যমে। সেই জন্যই আমরা বলছি যে, ভোট হতে হবে।’

‘কিন্তু ওনারা তো বিএনপিকে মাইনাস করতে চায়। যাতে তারা আবার ক্ষমতায় আসতে পারেন’ —বলেন খালেদা জিয়া।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনটা কেমন হতে হবে তা আমরা বার বার বলেছি।  আমরা নির্বাচনমুখী দল। আমরা কারো সহযোগিতা নিয়ে ক্ষমতায় আসিনি, জাতীয় বেইমান সেজে ক্ষমতায় আসিনি। সেই জন্যই আমরা বলেছি, নির্বাচন হতে হবে নির্দলীয় সরকারের অধীনে।’

বিজ্ঞাপন

নিরপেক্ষ সরকার হলেই শুধু ভোট হবে সুষ্ঠু হবে না। জনগণ যাতে ভোট কেন্দ্রে আসতে পারে, সেই রকম পরিবেশ তৈরি করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির চেয়ারপারসন।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনকে আমরা পরিষ্কার বলেছি, লিখিত দিয়ে এসেছি। নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের, কিন্ত সেখানে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে। এত মিষ্টি মিষ্টি কথা বললে চলবে না। নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হলে মাঠে পুলিশ প্রশাসন অবশ্যই থাকবে। তার সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনী, সেনা বাহিনীকে নিয়োগ দিতেই হবে।’

 

‘সেনাবাহিনী মাঠে থাকলে কারো পক্ষে কাজ করবে সেটা আমরা বলছি না। তারা শুধু ঘুরবে, দেখবে ভোট ঠিক মতো হচ্ছে কিনা, কোনো জায়গায় ভয় দেখিয়ে ভোটারদের আটকে রাখা হচ্ছে কিনা। তাহলেই জনগণ ভোট কেন্দ্রে এসে ভোট দিতে পারবে।’

আজকে নির্বাহী কমিটির এই সভা থেকে আমরা পরিষ্কার বলে দিতে চাই, ‘ইভিএম, ডিভিএম— এগুলো চলবে না। পার্লামেন্টকে ভাঙ্গতে হবে। পার্লামেন্ট ভাঙ্গার আরেকটি কারণ হলো, এটা বৈধ নয়। জোর করে এরা ক্ষমতায় আছে। কাজেই পার্লামেন্ট ভাঙ্গতে হবে। সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন হতে হবে।’ —বলেন খালেদা জিয়া।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এখন আবার ডিজিটাল আইনের নামে নতুন কালা কানুন করা হচ্ছে। সাংবাদিক ভায়েরা যেসব কথাবর্তা লেখে বা টক শোতে বলে, সেগুলো তাদের গায়ে এসে লাগে। কারণ, তারা (সাংবাদিক) সত্য কথাগুলো বলে এবং দেশ, জাতি, মানুষের কথাগুলো তুলে ধরে। সেগুলো তাদের (সরকার) সহ্য হয় না। সেই জন্য এই সব আইন-কানুন করা হচ্ছে।’

টানা ১ ঘণ্টা ১২ মিনিটের বক্তৃতায় বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, দ্রব্যমূল্য, মামলা-হামলা, গুম-খুন, গ্রেফতার বাণিজ্য, দুর্নীতি, লুটপাটসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন খালেদা জিয়া।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ব্যারিস্টার জমিরুদ্দিন সরকার, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, এয়ারভাইস মার্শাল আলতাফ হোসেন চৌধুরী, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউছুফ, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, শামসুজ্জামান দুদু, মেজর জেনারেল (অব) রুহুল আলম চৌধুরী, ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন,  অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, এম এ মান্নান, এডভোকেট আহমেদ আজম খান, শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, জয়নুল আবদিন ফারুক, শাহজাদা মিয়া, আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল,খায়রুল কবির খোকন, হারুন অর রশীদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, গোলাম আকবর খন্দকার, শামা ওবায়েদ প্রমুখ উপস্থিত রয়েছেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির এই সভায়।

খালেদা জিয়ার রায়ের তারিখ নির্ধারণ হওয়ায় তড়িঘড়ি করে এই সভা আহ্বান করে বিএনপি।

উদ্বোধনী বক্তব্য শেষে এখন চলছে দ্বিতীয় সেশন। রুদ্ধদ্বার এই সেশনে নির্বাহী কমিটির সদস্য ও কর্মকর্তাদের বক্তব্য শুনছেন খালেদা জিয়া। ধারণা করা হচ্ছে, এই সভা থেকে তৃণমূল নেতাদেরকে আগামী দিনের আন্দোলন-সংগ্রাম সম্পর্কে একটা দিকনির্দেশনা দেবেন তিনি।

সারাবংলা/এজেড/আইজেকে

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

চট্টগ্রামে খালে ভাসছিল অর্ধগলিত লাশ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪:৩৩

বিএসইসি‘র চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৫১

সম্পর্কিত খবর