Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি


৪ জুলাই ২০১৯ ১৫:৪৬

ঢাকা: মুজিব আদর্শচ্যুত আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে দলের সভাপতি শেখ হাসিনাকে অনতিবিলম্বে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম সমন্বয় জাতীয় কমিটি।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রতিবাদে প্রতিবাদলিপি প্রদান শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন সংগঠনটির নেতারা। সংগঠনটির পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বরাবর এই প্রতিবাদ লিপি দেওয়া হয়।

প্রতিবাদ লিপি দেওয়া শেষে সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমরা মাননীয় সভাপতি বরাবর আমাদের লিখিত প্রতিবাদ জানিয়েছি। তার দলের সাধারণ সম্পাদক (ওবায়দুল কাদের) যে বিষয়টি করেছে, সেই বিষয়টি অবগত এবং অনতিবিলম্বে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ৩০ লাখ শহীদের আত্মা যাতে শান্তি পায় এবং বাংলাদেশ যাতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঠিক পথে পরিচালিত হয়, সেই ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী সঠিক পদক্ষেপ নেবেন এই দাবি নিয়ে প্রতিবাদলিপি দিতে এসেছি।’

আপনাদের প্রতিবাদ লিপি কাদের কাছে হস্তান্তর করেছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে কপি দিয়েছি। যেহেতু দফতর সম্পাদকরা অফিসে নেই, তাই আমরা আমাদের তাগিদে আবার একটা করে কপি তাদের হাতে হাতে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করবো।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওনি (ওবায়দুল কাদের) একটি বক্তব্য দিয়েছেন। তার বক্তব্যের বিষয়ে তো তার কাছে আমরা বিচার চাইতে পারি না। যেহেতু এই দলের অভিভাবক আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তাই সাধারণভাবে এই দলের অভিভাবকের কাছেই আমাদের দাবি করা উচিত বলে মনে করি। তাই, আমরা সভাপতি বরাবরেই লিখিত বক্তব্যটা দিয়েছি।

‘মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে পৃষ্ঠপোষকতা দান’ প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয়েছে, ‘১ জুলাই ২০১৯ সদস্য সংগ্রহ উপলক্ষ্যে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মহোদয় আপনার ধানমন্ডি ৩/এ, রাজনৈতিক কার্যালয়ে তার বক্তব্যে সাম্প্রদায়িক শক্তি, জামায়াত ইসলাম ও যুদ্ধাপরাধী পরিবারের সদস্যরাও আওয়ামী লীগের সদস্য হতে পারবেন মর্মে বক্তব্যের মাধ্যমে সুস্পষ্টভাবে জানান দিয়েছেন, ফলে আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মুজিব আদর্শের সৈনিকেরা মর্মাহত ও ব্যথিত।’

এতে আরও বলা হয়েছে, ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের মূল কথা, স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর সাম্প্রদায়িক শক্তি, জামায়াতে ইসলাম ও যুদ্ধাপরাধী পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কোনো বিতর্কের যৌক্তিকতা নাই। তাহলে যুদ্ধাপরাধীদের চলমান বিচার কার্য, রাজাকারদের তালিকা প্রণয়ন, জামায়াতে ইসলামের নিবন্ধন বাতিল, সাম্প্রদায়িক শক্তি জঙ্গি দমন, এসব কার্যক্রম নিস্প্রয়োজন। আওয়ামী লীগ ও তার ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন সমূহে জামায়াত শিবির, বিএনপির কর্মী, কাউয়া হাইব্রিড অনুপ্রবেশের এই ধারাবাহিকতা চলমান থাকলে একসময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলে কোনো কিছুই থাকবে না।

আমরা প্রত্যক্ষ করেছি, কোটা বিরোধী আন্দোলনে জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ছবিকে পদদলিত করে অগ্নিসংযোগ ঘটানোর পর ধরা পড়লে বলেছে, সে ছাত্রলীগের কর্মী। কোনো প্রকৃত ছাত্রলীগের আদর্শে বিশ্বাসীরা এমন কোনো কাজ করতে পারে না। ঠিক একই কায়দায় ছাত্রলীগের মতো আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করিয়ে আগামীতে দলকে জনবিচ্ছিন্ন করার নীল নকশা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার এটি অংশ বিশেষ বলে আমরা মনে করি।

প্রতিবাদ লিপিতে আরও বলা হয়, আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম গত সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি অনুভূতির নাম’। কিন্তু বর্তমানে সুকৌশলে আমাদের বোধ শক্তিকে বিকল করে অনুভূতিকে আঘাত হেনে ঠিক বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে খন্দকার মোশতাক গংরা যেভাবে চাটুকারিতা করে প্রকৃত দেশ প্রেমিকদের দুরে সরিয়ে জাতির পিতাকে হত্যার পথ সুগম করেছিল, একই কায়দায় নবরূপে ওবায়দুল কাদের গংদের কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে না তো? তাই অনতি বিলম্বে মুজিব আদর্শচ্যুত হয়ে আদর্শিকভাবে মৃত্যুবরণকারী ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ৩০ লাখ শহীদের আত্মার শান্তি কামনায় যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ উজ্জীবিত করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

এ সময় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজাসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকার্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এনআর/জেএএম

টপ নিউজ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর