ঋণখেলাপিদের সুবিধায় স্থগিতাদেশ বাড়লো
৮ জুলাই ২০১৯ ১২:৩৮
ঢাকা: ঋণখেলাপিদের সুবিধা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক যে নীতিমালা (সার্কুলার) জারি করেছে তার ওপর স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে হাইকোর্টের আদেশ আরও দুই মাসের জন্য স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ।
সোমবার (৮ জুলাই) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
তবে, আপিল বিভাগ তার আদেশে বলেছেন, এই সময়ে নীতিমালার সুবিধাভোগীরা নতুন করে অন্য কোনো ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারবেন না।
এর আগে, ২১ মে এক সম্পূরক আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারের উপর স্থিতাবস্থা বজায় থাকার আদেশ দিয়েছিলেন।
এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করলে গত ২ জুলাই চেম্বার বিচারপতি হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে পূর্নাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।
আজ ৮ জুলাই পূর্নাঙ্গ শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন আপিল বিভাগ।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
এর আগে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেছিলেন, ঋণ খেলাপিদের নতুন করে একটা সুযোগ দিয়ে ২ শতাংশ সুদ জমা দিয়ে ১০ বছরের জন্য ঋণ পুনঃ তফসিলের সার্কুলার দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ সার্কুলারের বিষয় নিয়ে গত ১৬ মে আমরা আদালতকে অবহিত করি। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আইনজীবী জানান, এ সংক্রান্ত কোনো সার্কুলার তারা দেননি। পরে আদালত তালিকা দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু দেখা যায়, ১৬ মে বিকেলেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েব সাইটে সার্কুলার জারি হয়। মনজিল মোরসেদ জানান, আমরা ওই সার্কুলার চ্যালেঞ্জ করেছি।
তিনি জানান, ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ঋণ খেলাপির হাত থেকে যারা মুক্তি পাবে, একারণে সিআইবিতে তাদের নাম থাকবে না। তখন নতুন করে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে যাবে। এতে ব্যাংকের মেরুদণ্ড ভেঙ্গে যাবে। এ কারণে আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম-মামলার শুনানি না হওয়া পর্যন্ত সার্কুলারের কার্যক্রম স্থগিত রাখতে।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে ঋণ খেলাপির তালিকা দাখিলের নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে রুল জারি করেন। রুলে আর্থিক খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা বন্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন, ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ, সিটি ব্যাংকের সাবেক সিইও মামুন রশিদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন প্রতিনিধি ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধির সমন্বয়ে কমিশন গঠনের কেনো নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং এই কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে কেনো নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
রুলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ের সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের দুই সচিব, আইন সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়।
সারাবাংলা/এজেডকে/জেএএম