চট্টগ্রামে পাহাড় থেকে আরও ১০০ পরিবার উচ্ছেদ
১০ জুলাই ২০১৯ ২১:০০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: টানা ভারি বর্ষণে ধসের আশঙ্কায় চট্টগ্রাম নগরীর আরও একটি পাহাড় থেকে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে বসবাসরত ১০০ পরিবারকে উচ্ছেদ করেছে জেলা প্রশাসন। এ সময় ৬০টি বসতঘর ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে নগরীর আকবর শাহ থানার ফয়’স লেক সংলগ্ন শান্তিনগর পাহাড়ে অভিযান চালানো হয়। উচ্ছেদ অভিযানের খবর পেয়ে পাহাড়ে বসবাসরতরা বাধা দেওয়ার জন্য জড়ো হয়েছিল। এ সময় তারা বিক্ষোভও করে। তবে অভিযান শুরুর সময় বিপুল সংখ্যক পুলিশ দেখে তারা পালিয়ে যায়।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার তাহমিলুর রহমান, মো. তৌহিদুল ইসলাম ও মো. ইসমাইল হোসেন এই উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছেন। পরিবেশ অধিদফতর, পিডিবি, ওয়াসা এবং কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশনের কর্মকর্তারাও উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পাহাড় থেকে আরও ১৬ বসতি উচ্ছেদ
সহকারী কমিশনার তৌহিদুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘পাহাড় কেটে ও পাদদেশে বসতঘর বানিয়ে ভাড়া দিয়েছিল কিছু স্থানীয় প্রভাবশালী লোক। আমরা অভিযানে গিয়ে এর প্রমাণ পেয়েছি। এমনভাবে ঘরগুলো বানানো হয়েছিল, উপর থেকে মাটি ধসে পড়লে প্রাণহানি অবধারিত। আমরা এই ধরনের ৬০টি ঘর ভেঙে ১০০ পরিবারকে পাহাড় থেকে সরিয়ে দিয়েছি।’
ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরতদের বরাত দিয়ে তৌহিদুল আরও জানান, শান্তিনগর হাউজিং এবং বেলতলী ঘোনা হাউজিং নামে দু’টি আবাসিক এলাকা বানানোর কথা বলে স্থানীয় প্রভাবশালী সেভেন স্টার গ্রুপের মামুন, হাসান, পারভেজ, আহসানসহ কয়েকজন পাহাড় কাটছিল।
পাহাড় কাটার প্রমাণ পাওয়ায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের জন্য পরিবেশ অধিদফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ধসের আশঙ্কায় চট্টগ্রামে পাহাড় থেকে ৩৪ বসতি উচ্ছেদ
সংশ্লিষ্টরা জানান, শান্তিনগর পাহাড়ে উচ্ছেদ চালানো হবে বলে খবর পেয়ে বুধবার সকাল থেকে সেভেন স্টার গ্রুপের সদস্যরা স্থানীয় লোকজনকে উসকানি দিয়ে পাহাড়ের প্রবেশমুখে জড়ো করে। স্থানীয় সন্ত্রাসীদেরও সেখানে জড়ো করা হয়। তারা কোনোভাবেই পাহাড় থেকে বসতি উচ্ছেদ করা যাবে না দাবি তুলে বিক্ষোভ শুরু করে। তাদের বিক্ষোভের খবর পৌঁছে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছে। বাড়তি পুলিশ সদস্য নিয়ে পাহাড়ে যাবার পর বাধা দেওয়ার জন্য আসা সবাই চলে যায়।
পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির তালিকা অনুযায়ী ১৭টি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে ৮৩৫টি পরিবার চিহ্নিত করে গত ৩ জুলাই থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। প্রথম দিনে (৩ জুলাই) পরিবেশ অধিদফতর সংলগ্ন পাহাড় থেকে ৫০টি পরিবার, দ্বিতীয় দিন (৭ জুলাই) জালালাবাদ আবাসিক এলাকার মধু শাহ পাহাড় থেকে ৩৪টি পরিবার, চতুর্থ দিন (৯ জুলাই) আমিন জুট মিল এলাকার টাংকির পাহাড় থেকে ১৬টি পরিবার, বুধবার (১০ জুলাই) উচ্ছেদের পঞ্চম দিন ফয়েজলেকের শান্তিনগর পাহাড় থেকে ১০০ পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। অভিযান ১৭ জুলাই পর্যন্ত চলবে। তবে টানা বর্ষণের প্রেক্ষিতে পাহাড়ে এর বাইরেও ঝুঁকিপূর্ণ বসতি থাকলে সেগুলোও উচ্ছেদ করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের এই কর্মকর্তা।
সারাবাংলা/আরডি/এমএইচ