ধসের ঝুঁকিতে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়ক
১১ জুলাই ২০১৯ ০৮:৩১
রাঙামাটি: টানা বর্ষণের ফলে ধসের ঝুঁকিতে পড়েছে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। গত পাঁচদিনের টানা বৃষ্টিতে রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়ার কলাবাগান এলাকায় ছড়ার পানির স্রোতে পরিবর্তন ও তীব্রতার কারণে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম প্রধান সড়কটি বর্তমানে হুমকির মুখে। যেকোনো সময় সড়কটি ধসে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মীরা বৃষ্টির মধ্যেও ছড়ার পানির গতিপথ পরিবর্তনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১৩ জুন ভয়াবহ পাহাড়ধসের ঘটনায় রাঙামাটির ঘাগড়া-সাপছড়ি এলাকায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় প্রায় দেড়’শ মিটার সড়ক। এতে সারাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায় জেলাটির। সড়কটি বিচ্ছিন্নের আটদিন পর সড়ক যোগাযোগ কিছুটা সচল হয়। তবে এর প্রায় তিন মাস পর একটি ব্রিজ তৈরি করে ভারি যানবাহনের জন্য সড়কটি খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু গত দুই বছরেও স্থায়ী কোনো কাজ না হওয়ায় গত চারদিনের বৃষ্টিতে সড়কগুলো আবারও ধসে যাওয়া আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
শুধু রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়ক নয়, রাঙামাটি-বান্দরবান ও রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কেরও বেশকিছু স্থানে মাটি সরে গিয়ে ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের চলাচলকারী যানবাহনের চালকরা জানান, ‘যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে সড়কটি। ধস আতঙ্ক বুকে নিয়ে এখন আমাদের গাড়ি চালাতে হচ্ছে। প্রতিবছরই বৃষ্টি হলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এসব ব্যাপারে আগে থেকেই নজরদারি রাখা উচিত ছিল।’
কাউখালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সামসুদ্দৌহা চৌধুরী বলেন, ‘সোমবার রাত থেকে ঘাগড়ার ছড়ার স্রোতের দিক পরিবর্তন হয়ে সরাসরি সড়কে গিয়ে আঘাত হানতে শুরু করে। এতে করে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম প্রধান সড়কটি। ছড়ার ওপরে একটি ঘর নির্মাণের ফলে স্রোতের দিক পরিবর্তন হয়েছে। সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ প্রাথমিকভাবে কাজ শুরু করেছে। তবে এটা দিয়ে কিছুই হবে না। কারণ বর্ষা তো মাত্র শুরু হলো। এখনই যদি এই অবস্থা হয় তবে সামনের দিনগুলোতে আরো বেশি ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। বৃষ্টি থামার পর স্থায়ীভাবে সমাধানে কাজ শুরু করতে হবে।’
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী আবু মুছা বলেন, সড়কের পাশ দিয়ে তীব্র স্রোত প্রবাহের কারণে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের ৩০ মিটার জায়গা ধসের ঝুঁকিতে রয়েছে। আমরা প্রাথমিকভাবে গাছের খুঁটি ও বস্তা ফেলে স্রোতের যে অংশটি পরিবর্তন হয়েছে, সেটা নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করছি। তবে বৃষ্টি না থামায় প্রবল স্রোতে কাজ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বৃষ্টি থামলে স্থায়ী সমাধানের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, রাঙামাটিতে ২০১৭ সালের পাহাড় ধসে ১২০ জনের প্রাণহানি ঘটে। আহত হয় আরও দুই শতাধিক মানুষ। এর এক বছর পর ২০১৮ সালের ১২ জুন জেলার নানিয়ারচর উপজেলায় পাহাড়ধসে মারা যান ১১ জন। সর্বশেষ এ বছরের গত সোমবার রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে পাহাড়ধসে সূর্য মল্লিক (৫) নামে এক শিশু ও তাহমিনা বেগম (২৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়।
সারাবাংলা/এমএইচ/পিটিএম