Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পদ্মার তলদেশে যাওয়ার অপেক্ষায় সেতুর শেষ পাইল


১৩ জুলাই ২০১৯ ২২:৪১

ঢাকা: বিশ্বের সবচেয়ে বেশি খরস্রোতা নদী আমাজানের পরেই পদ্মা। আর সেই পদ্মায় ৬ কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ সেতু গড়ার দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ। ৪২টি পিলার ৪১টি স্প্যান এবং ২৯৪টি পাইলে গড়ে তোলা হচ্ছে এই সেতু। এখন সেতুর শেষ ২৯৪ নম্বর পিলারে পাইল গাঁথার অপেক্ষায় প্রকৌশলীরা। কিন্তু বৃষ্টির কারণে পাইলে ওয়েল্ডিং কাজ করতে জঠিলতায় পড়েছেন সেতু প্রকৌশলী ও নির্মাণ শ্রমিকরা।

রোববার (জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় শেষ পাইল ড্রাইভ শুরু হবে। পাইলটি সম্পূর্ণ ড্রাইভ করতে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা লাগবে। এখন তরই প্রস্তুতি চলছে পদ্মাপাড়ে। ৮ হাজার ২০০ টন লোড ধারণ ক্ষমতার পাইল মাওয়াপ্রান্তে নদীর তলদেশে যাওয়ার অপেক্ষায়।

বিজ্ঞাপন

পদ্মাসেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম সারাবাংলাকে জানান, ‘কাল রাতে সবশেষ পাইল ড্রাইভিং শেষ হবে। আর এর মধ্যদিয়ে সেতুর অগ্রগতি হবে ৮৫ ভাগ।’

সাড়ে ৩ বছর আগে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রথম পদ্মার পাইল ড্রাইভিং শুরু হয়েছিল। তার আগে ২০১৫ সালের মাচে শুরু টেস্ট পাইল ড্রাইভিং।

এখন পর্যন্ত সেতুর ৪২টি পিলারের মধ্যে ৩০টি পিলারের কাজ পুরোপুরি শেষ। বাদ রয়েছে ৬, ৭, ৮, ১০, ১১, ২৬, ২৭, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২ নম্বর পিলারের কাজ। এ বছরের মধ্যেই বাকি ১২টি পিলারের কাজ শেষ করার পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের। নদীতে ১৮টি পিলারে ছয়টি করে এবং ২২টি পিলারে সাতটি করে পাইল ড্রাইভিং হয়েছে। আর মাওয়া জাজিরা নদীর দুই প্রান্তের মাটিতে স্থাপিত পিলারে ‘বোরড পাইল’ ড্রাইভিং হয়েছে ১৬টি করে।

এদিকে ২৪টি স্প্যানের মধ্যে ১৪টি স্প্যান পিলারের ওপর বসানো হয়েছে। ফলে সেতু কাঠামো দেখা যাচ্ছে প্রায় সোয়া ২ কিলোমিটার। এছাড়া আরও ১০ টি স্প্যান প্রস্তুত মাওয়া পাড়ে।

বিজ্ঞাপন

সেতু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান চীনের মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং জানায়, একেকটি পাইল ৩ ডায়ামিটারের। এগুলো দেখতে গোলা আকৃতির। চীন থেকে ফ্লাট স্টিল প্লেইট এনে মাওয়া ফেব্রিকেশন ইয়ার্ডে গোলআকার দেওয়া হয়। ‍পূরত্ব পৌনে ৩ ইঞ্চি ব্যাসার্ধের। জার্মানির বিশেষ হ্যামার দিয়ে সজোরে আঘাত করে ১১৪ থেকে ১২০ মিটার গভীরে নিয়ে যাওয়া হয় একেটি পাইল।

পদ্মাসেতু প্রকৌশলীরা জানান, পদ্মার তলদেশের মাটির বেশ পরিবর্তনশীল। যেকোনো মুহূর্তে ২১ তলা ভবন সমান মাটি খালি হয়ে বিশাল খাদ তৈরি হতে পারে। যে কারণে ১১টি পিলারের জন্য বিশেষ কৌশলে নেওয়া হয়েছে নদীর তলদেশে।

প্রকৌশলীদের দেওয়া তথ্যে দেখা গেছে, নদীর পানির প্রায় চল্লিশ মিটার গভীরে গেলে পাওয়া যায় তলদেশ। ১৩১ ফুটে হয় ৪০ মিটার। সাধারণত ১০ ফুট হয় একতলা ভবনের উচ্চতা। সে হিসেবে পদ্মা নদীর তলদেশ থেকে পানি পর্যন্ত উচ্চতা ১৩ তলা ভবনের সমান। আর নদীর তলদেশে হঠাৎ খরস্রোতে মাটি আরও ৬০ থেকে ৬৫ মিটার সরে গিয়ে খাদ তৈরি হয়। ২১৩ ফুটে হয় ৬৫ মিটার। অর্থাৎ প্রায় ২১ তলা ভবন সমান মাটি পদ্মার নিচে যেকোনো সময় ধস নেমে সরে পড়ে। যে কারণে ৩৪ তলা গভীরে নিয়ে যেতে হবে পাইল। এসব অংক কষে ১২০ মিটার গভীরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে পদ্মা সেতুর একেকটি পাইল। ফলে একেকটি পাইলের জন্য নদীগর্ভে ৪০ তলা ভবনের সমান অবকাঠামো গড়তে হয়েছে।

সারাবাংলা/এসএ/পিটিএম

তলদেশ পদ্মাসেতু পিলার

বিজ্ঞাপন

খুলনায় যুবকের পেটে মিলল ইয়াবা
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১২:০২

আরো

সম্পর্কিত খবর