১৫ শতাংশ রিপ্লেসমেন্ট সুবিধা চায় হজ এজেন্সিগুলো
১৮ জুলাই ২০১৯ ০৯:১৫
ঢাকা: হজ যাত্রীদের রিপ্লেসমেন্ট সুবিধা ১৫ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে এজেন্সিগুলো। এরইমধ্যে ১০ শতাংশ রিপ্লেসমেন্ট সুবিধা দিয়ে নতুন ১০ হাজার রিপ্লেসমেন্ট হজ যাত্রীর অনুমোদন দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
এরপরও এজেন্সিগুলো আরও ৫ শতাংশ বাড়ানোর জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ জানিয়েছে। এমনকি হাবের মহাসচিব সম্প্রতি ধর্ম মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে রিপ্লেসমেন্ট সুবিধা বাড়ানোর জন্য সুপারিশও করেছেন।
সাধারণত হজ ও ওমরাহ নীতিমালা অনুযায়ী মৃত্যু বা মারাত্মক অসুস্থতাজনিত কারণে নিবন্ধিত কেউ হজে যেতে না পারলে তার পরিবর্তে অন্য কাউকে হজে যাওয়ার জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয় অনুমতি দেয়। সে ক্ষেত্রে এজেন্সিকে হজযাত্রীর অসুস্থতার পক্ষে চিকিৎসকের সনদপত্র অথবা মৃত্যুর ক্ষেত্রে মৃত্যুর সনদপত্র জমা দিতে হবে। সৌদি দূতাবাস কর্তৃক হজ ভিসা দেওয়া বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত ফ্লাইট চালু সাপেক্ষে হজ যাত্রীদের রিপ্লেসমেন্টের সুযোগ থাকে।
এ বিষয়ে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন্স অব বাংলাদেশ (হাব) এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রথম যখন রিপ্লেসমেন্টের সুবিধা দেওয়া হয় তখন অনেক এজেন্সি এই সুবিধা নিতে পারেনি। আর এই সুবিধা নিতে না পারায় অনেক এজেন্সি সৌদিতে বাড়ি ভাড়াও করতে পারছে না। ফলে এজেন্সিগুলো লোকসানে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর আমরা হজযাত্রী রিপ্লেসমেন্টের সুযোগ দেওয়ার জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে অনুরোধ জানিয়েছি। মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের ১০ শতাংশ করে রিপ্লেমেন্টের সুযোগ দিয়েছে। এই সুবিধা আরও একটু বেশি হলে ভালো হয়। আশা করি, সরকার সেই সুবিধা এজেন্সিগুলোকে দেবে। এছাড়া যাদের সমস্যা আছে তাদেরকে ডেকে সমস্যাগুলো শুনছে মন্ত্রণালয়।’
তসলিম আরও বলেন, ‘রিপ্লেসমেন্টের জন্য নতুন করে অনুরোধ করার কিছু নেই। গতবছর ১৫ শতাংশের বেশি রিপ্লেসমেন্ট দেওয়া হয়েছে তিন দফায়। এবারও দুইদফায় সুবিধা দেওয়া হয়েছে ১০ শতাংশ । কিন্তু সময় নির্ধারিত থাকার কারণে পরে যাদের রিপ্লেসমেন্টের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে তাদের জন্য আবার সুযোগ দেওয়া দরকার।’
রিপ্লেসমেন্ট সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে লাভানা অ্যাভিয়েশনের মালিক আবু দাউদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘হজে যাওয়ার জন্য যারা প্রাক-নিবন্ধন করেছেন তাদেরই তো রিপ্লেসমেন্ট দেওয়া হবে। এতে কোটা খালি থাকা বা সরকারের লাভ-লোকসানের কিছু নেই। বরং কোনো এজেন্সি তার হজযাত্রী পাঠাতে না পারলে তার বাড়ি ভাড়ার টাকা এমনকি বিমানের টিকিটের টাকাসহ ব্যবসায়িক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। তখন তো কেউ পাশে এসে সহায়তা দেন না। আমরা তো অযাচিত কিছু দাবি করছি না। যারা অসুস্থ কিংবা যেতে পারবেন না আমরা তাদেরই রিপ্লেসমেন্ট চাচ্ছি।’
এ বিষয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ সারাবাংলাকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত হজের কোনো ফ্লাইট বিলম্ব বা ফ্লাইট বাতিল করা হয়নি। তবে প্রথম দিন রুট টু মক্কা তথা সৌদি অংশের ইমিগ্রেশন নিয়ে ঝামেলা তৈরি হয়। এরপর সেটা ঠিক হয়েছে। এখন পযর্ন্ত সৌদি গিয়ে পৌঁছেছেন প্রায় ৫৭ হাজার হজ যাত্রী। এ বছর বাংলাদেশের হজযাত্রীর কোটা ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। এর মধ্যে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ২০ হাজার হজযাত্রী যাওয়ার কথা। এছাড়া ৫৯৮টি বেসরকারি এজেন্সি এ বছর হজ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘হজ এজেন্সিগুলো রিপ্লেসমেন্টের যে দাবি করছে সেটা আমরা বিবেচনা করছি। এরইমধ্যে ১০ শতাংশ রিপ্লেসমেন্ট দেওয়া হয়েছে। যারা হজে যেতে পারবেন না তাদের যৌক্তিক কারণ থাকলে আমরা অবশ্যই রিপ্লেসমেন্ট সুবিধা দেব।’
হজযাত্রীদের প্রথম হজ ফ্লাইট শুরু হয় ৪ জুলাই। ফিরতি ফ্লাইট ১৭ আগস্ট এবং শেষ ফিরতি ফ্লাইট ১৫ সেপ্টেম্বর। আজ পযর্ন্ত সৌদি ভিসা পেয়েছেন প্রায় ৯০ হাজার হজ যাত্রী আর বাকি আছে প্রায় ৩৭ হাজার হজ গমনেচ্ছুদের ভিসা। এদিকে গত তিনদিন ধরে সৌদি সাভার্রে ভিসা জটিলতা দেখা গেলেও আজ কিছুটা ভোগান্তি কম হচ্ছে। তবে সার্ভার এখনো কিছুটা ধীরগতিতে চলছে।
এদিকে সৌদি আরবে বাড়ি ভাড়ার কাজ শেষ করতে না পারায় মোট ৬৭টি হজ এজেন্সিকে তলব করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। তাদের বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলেও জানিয়েছে হজ অফিস।
সারাবাংলা/এসজে/একে/জেএএম