ব্যবসায়ীকে অপহরণ: স্ত্রীর অভিযোগ অপহরণে জড়িত র্যাব কর্মকর্তা
২০ জুলাই ২০১৯ ২০:০৫
ঢাকা: একমাস ধরে নিখোঁজ হওয়া স্বামীকে ফিরে পেতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার স্ত্রী নাসরিন জাহান স্মৃতি। তার অভিযোগ— র্যাবের একজন কর্মকর্তা তার স্বামীকে অপহরণ করেছেন।
শনিবার (২০ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ওই নারী সংবাদ সম্মেলন করেন।
স্মৃতি জানান, অভিযুক্ত র্যাব কর্মকর্তার নাম রাসেল আহাম্মদ কবীর। তিনি নৌবাহিনী থেকে প্রেষণে র্যাব সদর দফতরের পরিচালক (কমিউনিকেশন অ্যান্ড সিগন্যাল) হিসেবে কর্মরত আছেন।
নাসরিন জাহান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমার স্বামী ইসমাইল হোসেন বাতেন (৬০)। তিনি শাহ আলী মাজার সংলগ্ন দাদা স মিলে কাঠের ব্যবসা করতেন। গত ১৯ জুন সকাল ৯টায় ব্যবসার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়ে যান, এরপর আর ঘরে ফেরেননি। এ বিষয়ে শাহ আলী থানায় পরিবারের পক্ষ থেকে জিডি করা হয়। জিডি নম্বর-৮৩০। আমার ধারণা, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে র্যাব কর্মরতা রাসেল আহাম্মদ কবীর তার বাহিনীর কয়েকজনকে দিয়ে আমার স্বামীকে অপহরণ করেছেন।’
কারণ হিসেবে নাসরিন জাহান বলেন, ‘৩৫ বছর আগে আমার স্বামীর গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের কুকরারাই এলাকায় তৎকালীন সময়ের জাগোদল নেতা নেতা ফয়েজ আহাম্মদ মিন্টু মিয়া নামে একজন খুন হন। ওই খুনের মামলায় আমার স্বামীকে আসামি করা হয়। সেই মামলায় আমার স্বামী আদালত থেকে বেকসুর খালাস পান। এরপর থেকেই আমার স্বামী ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত আছেন। নিহত ফয়েজ আহাম্মদ মিন্টু মিয়ার ছেলে রাসেল কবিরের সন্দেহ যে, আমার স্বামীই তার বাবাকে হত্যা করেছে।
নাসরিন বলেন, ‘আমার স্বামী নিখোঁজ হওয়ার ৪/৫ দিন আগে আমাকে বলেছিল রাসেল কবীর বিভিন্ন লোক মাধ্যমে বাবা হত্যার প্রতিশোধ নেবে বলে হুমকি দিচ্ছিল। আমার স্বামী থানায় জিডিও করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার আগেই আমার স্বামী নিখোঁজ হয়ে যান।
নিখোঁজ ইসমাইলের হোসেন বাতেনের স্ত্রী বলেন, ‘স্বামীর সন্ধান চেয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শক, র্যাবের মহাপরিচালক, নৌবাহিনী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়েছে। এরপর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছেও আমার স্বামীর সন্ধান চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।’
অভিযোগের বিষয়ে র্যাবের পরিচালক রাসেল আহাম্মদ কবীরকে এ বিষয়ে জানতে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এরপর এ বিষয়ে জানতে র্যাব সদর দফতরের মিডিয়া শাখার সহকারী পরিচালক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানকে ফোন করা হলে এ বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারবেন না বলে জানান। এরপর তিনি মিডিয়া শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমরানুল হাসানকে ফোন দিতে বলেন।
এমরানুল হাসান সারাবাংলাকে বলেন, ‘এ ধরনের সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ থাকলে ভুক্তভোগী পরিবার সদস্যরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা খতিয়ে দেখব।’
র্যাব কর্মকর্তা রাসেলের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘রাসেল প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। কাজেই কোনো টিম নিয়ে অপারেশন চালানোর কোনো ক্ষমতা তার নেই।’
সারাবাংলা/ইউজে/একে