‘দেশের ৪ কোটি মানুষ ঠিকমতো খেতে পায় না’
২১ জুলাই ২০১৯ ১৭:০২
ঢাকা: ‘খাদ্য নিরাপত্তার জন্য সামাজিক নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি থাকার পরও দেশের ৪ কোটি মানুষ ঠিকমতো খেতে পায় না, যা মোট জনসংখ্যার ১২.৯ শতাংশ। এদের মধ্যে অতিদরিদ্র ২ কোটি এবং দরিদ্র ২ কোটিসহ মোট ৪ কোটি মানুষ (২০১৬ সালের বিবিএস এর তথ্যানুযায়ী), যাদের অর্ধেক বেশি কম ও অপর অর্ধেক অল্প কম খেতে পায়।’
রোববার (২১ জুলাই) রাজধানীর পল্টনে ইকনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে ‘খাদ্য অধিকার আইন প্রনয়ণে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক এক সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন।
ইআরএফ-এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলমের সভাপতিত্বে সংলাপে মূল বক্তব্য উপস্থাপনা করেন খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী। সংলাপের সার্বিক সহায়তা করেছে ইকো কো-অপারেশনের সিভিক এনগেজমেন্ট এলায়েন্স প্রোগ্রাম ও ক্রিশ্চিয়ান এইড।
সংলাপে মহসিন আলী বলেন, ‘সমাজে আয়-বৈষম্যের কারণে শীর্ষ ১০ ভাগ ধনী পরিবারের আয় মোট জাতীয় আয়ের ৩৮ শতাংশ এবং নিম্ন অবস্থানকারী ১০ ভাগ অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠী মোট জাতীয় আয়ের মাত্র ১ শতাংশের মালিক। এ পরিস্থিতি দেশে সব মানুষের মৌলিক অধিকার খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা, বস্ত্র ও বাসস্থান প্রতিষ্ঠার বিষয়কে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন করে তুলেছে। এ কারণে অবিলম্বে খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়নে উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে অতিদরিদ্র ও দরিদ্র মানুষের খাদ্য ও পুষ্টি অধিকার নিশ্চিত করা প্রয়োজন।’
মহসিন আরও বলেন, ‘সংবিধান খাদ্য অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েছে, কিন্তু সময়ের প্রেক্ষাপটে এখন প্রয়োজন আইন তৈরি করা। বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে কিন্তু এরপরও এখনো বাংলাদেশের ২ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষ অপুষ্টির শিকার। যার মধ্যে প্রায় ৪৪ শতাংশ নারী রক্ত স্বল্পতায় ভুগছেন। উত্তরবঙ্গসহ দারিদ্র্যপ্রবণ ৯ জেলায় ও এর বাইরে নদী ভাঙ্গন এলাকা, চরাঞ্চল ও হাওর এলাকা, রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন মহানগরের বস্তিবাসী, চা বাগানের শ্রমিক, হরিজন ও বেদে সম্প্রদায়, হিজড়া সম্প্রদায়, আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উল্লেখযোগ্য সংখ্যা এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অন্যান্য অংশ মানবেতর জীবনযাপন করছে।’
আয়োজকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন ইকো কো-অপারেশনের আরশাদ সিদ্দিকী, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান, গাজী টেলিভিশনের প্রধান প্রতিবেদক রাজু আহমেদ, জনকন্ঠের বিজনেস এডিটর কাওসার আহমেদ, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের বিশেষ প্রতিনিধি দৌলত আখতার মালা, যুগান্তরের মুনীর হোসেন, বণিক বার্তার সানোয়ার শাহীন, এস এ টিভির বিজনেস সম্পাদক সালাহাউদ্দিন বাবলু, ইউএনবি‘র সদরুল হাসান সংলাপের মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
সংলাপ সঞ্চালন করেন ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম।
সংলাপে ‘খাদ্য অধিকার আইন’ প্রণয়নে গণমাধ্যমের ভূমিকা বিষয়ে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, ‘এ বিষয়ে গণমাধ্য খাদ্য ও পুষ্টি পরিস্থিতি বিষয়ে প্রকৃত পরিস্থিতি তুলে ধরা, পরিস্থিতি বিশ্লেষণের আলোকে খাদ্য অধিকার আইনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে দেশব্যাপি সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রতিবেদনের মাধ্যমে নীতি-নির্ধারক ও সরকারের সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে।’
সারাবাংলা/জিএস/এমও