Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি


২২ জুলাই ২০১৯ ০৫:৪৯

কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও দুর্ভোগ কমেনি বানভাসী মানুষদের। ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি এখনও বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলের ঘর-বাড়ি এখনও বন্যার পানিতে তুলিয়ে আছে। বন্যা দুর্গত এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে ডায়রিয়া, আমাশয়, জ্বরসহ নানা পানি বাহিত রোগ। দুর্গম চরাঞ্চলগুলোতে এ পরিস্থিতি আরো খারাপ।

বিজ্ঞাপন

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের ৮৫টি মেডিকেল টিম বন্যা কবলিত এলাকাগুলোকে কাজ করার কথা বললেও দুর্গম এলাকার অনেক চরেই গত ১০/১২ দিনেও তাদের দেখা মেলেনি বলে বানভাসীরা অভিযোগ করেছেন।

এ অবস্থায় ঘর-বাড়ি থেকে পানি নেমে না যাওয়ায় চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৫ থেকে ৬ হাজার পরিবার ১০ থেকে ১২ দিন ধরে নৌকায় বসবাস করছে। ঘরে ফিরতে পারছেন না উঁচু এলাকায় আশ্রয় নেয়া বানভাসী মানুষজনও। খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে দুর্ভোগে পড়েছেন তারা।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের নামাচরের সাহিদা বেগম জানান, আমার ৪ বছরের মেয়ে মনোয়ারার দুদিন থেকে ডায়রিয়া। পাশের বাড়ির একজনের নিকট থেকে ৪টি স্যালাইন নিয়ে এসে খাইয়েছি। এখনও ভালো হয়নি।

উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা ইউনিয়নের চেরাগীর আলগা চরের মানিক মিয়া জানান, আমার সাড়ে ৩ বছরের বাচ্চার দুই দিন থেকে ডায়রিয়া। সেখানে কোন মেডিকেল টিম নাই। ঔষুধও পাওয়ার উপায় নাই। দুইদিন থেকে কাচাকলা সিদ্ধ করে খাওয়াচ্ছি।

একই এলাকার সিরাজুলের স্ত্রী কাজলী বেগম জানান, আমার বাচ্চার ৩দিন থেকে জ্বর আর কাশি। বাড়ির চর্তুদিকে পানি। নৌকার অভাবে বাজারে গিয়ে ঔষুধ আনতে পারছি না। এখানে কমিউনিটি ক্লিনিক আছে কিন্ত কমিউনিটি ক্লিনিকে পানি উঠায় সেখানে কোন ডাক্তার আসে না। আমাদের বাড়িতেও কোন স্বাস্থ্যকর্মী আসে নাই।

বানভাসীরা জানান, বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় এবং হাতে কাজ না থাকায় চরম খাদ্য সংকটে পড়েছেন বন্যা কবলিত দিনমজুর শ্রেনীর মানুষজন।

অন্যদিকে চিলমারী উপজেলার কাচকোল-বেপারীর হাট বাঁধের মাঝিপাড়া এলাকায় বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়ে পড়া চিলমারী উপজেলা শহরের রাস্তা-ঘাট, ঘর-বাড়ি, অফিসসহ বিভিন্ন স্থাপনা এখনও তলিয়ে আছে।

বিজ্ঞাপন

চিলমারী উপজেলার সাংবাদিক গোলাম মাহাবুব রহমান জানান, নদ-নদীর পানি কিছুটা কমলেও বাঁধ ভেঙ্গে ঢুকে পড়া পানি কমছে না। এখনও চিলমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, উপজেলা পরিষদ, থানাসহ রাস্তা-ঘাটে এখনও হাটু পানি রয়েছে।

সরকারী-বেসরকারী ভাবে ত্রাণ তৎপরতা শুরু হলেও তা জেলার ৯ উপজেলায় ৮ লক্ষাধিক বানভাসী মানুষের জন্য অপ্রতুল। জেলা প্রশাসন থেকে এ পর্যন্ত ৮শ মেট্রিক টন চাল, ৬ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বেসরকারী উদ্যোগেও স্বপ্ল পরিসরে শুরু হয়েছে ত্রাণ তৎপরতা। কিন্তু বেশির ভাগ বানভাসী মানুষের ভাগ্যে জুটছে না তা।

স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ব্রহ্মপুত্রের পানি এখনও চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার এবং ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সারাবাংলা/জেআই/টিএস

কুড়িগ্রাম বন্যা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর