টাকাকে ডলার বানিয়ে প্রতারণা, ৩ বিদেশি আটক
২৪ জুলাই ২০১৯ ১৯:০২
ঢাকা: ‘বাংলাদেশি টাকা একটি বাক্সের ভেতর ঢুকিয়ে কিছুক্ষণ পর সেটি অরজিনাল ডলার বানিয়ে দিতে পারে চক্রটি। এক হাজার টাকার একটি নোটকে তারা মুহূর্তেই এক হাজার টাকার ডলার বানিয়ে ফেলতে পারে। আর এভাবেই সাধারণ মানুষকে লোভে ফেলে ইতোমধ্যে ৭০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে আন্তর্জাতিক জালিয়াতি চক্রের সদস্যরা’।
বলছিলেন র্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক। মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) রাতে অভিযান চালিয়ে আন্তর্জাতিক প্রতারক চক্রের তিন সদস্যকে আটক করে র্যাব-৪ এর একটি দল। আটকের পর তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বুধবার (২৪ জুলাই) দুপুরে কারওয়ান বাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান তিনি।
র্যাব-৪ এর অধিনায়ক মো. মোজাম্মেল হক বলেন, ‘গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে টাকাকে ডলার বানিয়ে অভিনব কৌশলে প্রতারণাকারী আন্তজার্তিক চক্রের তিন সদস্যকে ধানমন্ডি ও বসুন্ধরা এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে। তারা ক্যামেরুনের নাগরিক বলে জানা গেছে। ’
আটককৃতরা হলেন- টিচিকাম্যান রোদ্রিগো (৩১), ডোনগম্যাজা এন গুইগনি (৩২) এবং আলেক্সজেন্দ্রা মাফেজা (৪৮)। আটকের সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জামাধি জব্দ করা হয়েছে।
র্যাব-৪ এর অধিনায়ক বলেন, ‘টুরিস্ট ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে এসে তারা আর ফেরত যায়নি। ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে অনেক আগেই। সাধারণ মানুষ তাদেরকে জিজ্ঞেস করলে তারা বিদেশি খেলোয়াড় পরিচয় দিয়ে পাশ কাটিয়ে যায়। কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য থাকে প্রতারণা। এজন্য তারা গুলশান, বারিধারা ও বনানী এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে প্রতারণার কৌশল করে। তাদের টার্গেট থাকে শিল্পপতি ব্যবসায়ীদের প্রতি। আর সুযোগ বুঝে কোনো কোনো ব্যবসায়ীকে প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশি টাকা ডলার বানানোর নামে বিদেশে পাচার করে দেয়। ’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমে কোনো ব্যবসায়ীকে কৌশলে তাদের কাছে আনতে পারলে তারা এক হাজার টাকার বিনিময়ে এক হাজার ডলার দেয়। ওই টাকা সে যখন বাজারে সত্যি সত্যি ডলার হিসেবে ব্যবহার করতে পারে তখন সে আরও বেশি টাকা নিয়ে যায় প্রতারক চক্রের কাছে। এক পর্যায়ে ব্যবসায়ীরা লোভে পড়ে লাখ টাকা নিয়ে আসে কোটি টাকার আশায়। তখন ওই ব্যবসায়ীকে বড় একটা প্যাকেট দিয়ে তারা বলে, ২৪ ঘন্টা পর এ প্যাকেট খুললে টাকা ডলার হয়ে যাবে। তবে প্যাকেটটি বাসায় নিয়ে রাখতে হবে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পর আর প্যাকেট থেকে ডলার বের হয় না। এরপর চক্রটিও বাংলাদেশি মূল টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।’
আন্তর্জাতিক প্রতারক চক্রের সদস্যরা এভাবে প্রায় ৭০ লাখ টাকা বিদেশ পাঠেয়েছে বলে ডকুমেন্ট জব্দ করেছে র্যাব। তবে তাদের সঙ্গে বাংলাদেশি আর কারা জড়িত এবং চক্রটির অবস্থা কি সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান মোজাম্মেল হক। সেইসঙ্গে আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।
সারাবাংলা/এসএইচ/পিটিএম