Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর দাবি বিএনপির


২৬ জুলাই ২০১৯ ১৮:৪৯

ঢাকা: খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার ‘ক্রমাবনতিতে’ উদ্বেগ প্রকাশ করে অতি দ্রুত তার পছন্দমতো দেশে অথবা বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর দাবি জানিয়েছে বিএনপি।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি জানান।

তিনি বলেন, ‘আমি সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, অবিলম্বে দেশনেত্রীকে মুক্তি দিয়ে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক। তার পছন্দ অনুযায়ী দেশে অথবা বিদেশে— যেখানে তিনি চিকিৎসা করাতে চান, সেখানে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক।’

খালেদা জিয়ার জিহ্বায় আলসার হয়েছে জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘গত এক সাপ্তাহে তার ৪ কেজি ওজন কমেছে। ইট ইজ ভেরি এলার্মিং। আপনারা ম্যাডামকে দেখলে এখন চিনতেই পারবেন না। উনি শুকিয়ে গেছেন। কিছুই খেতে পারছেন না।’

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া হুইল চেয়ার ছাড়া মুভই করতে পারছেন না। প্রকৃত অবস্থা আরও ভয়াবহ। তিনি এখন বিছানা থেকে নিজে উঠতে পারেন না। দুইজনে ধরে উঠাতে হয় এবং হুইল চেয়ারে বসিয়ে তাকে টয়লেটে, ওয়াসরুমে বা খাবার টেবিলে নিতে হয়। আবার দুইজনের সাহায্য নিয়েই তাকে শোয়া বা বিছানায় নিতে হয়।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা অমানবিক। আমরা কিছুতেই মেনে নিতে পারি না যে, একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী যিনি গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন,লড়াই করেছেন, যে দুইবার বিরোধী দলের নেতা ছিলেন। যার স্বামী স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন এবং যিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে বন্দি ছিলেন তার দুই সন্তানসহ। আজকে চরম অমানবিক আচরণ তার সঙ্গে করা হচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

খালেদা জিয়াকে এখন ঠিকমতো খাবার দেওয়া হয় না অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘তার যে সমস্ত ফল-মূল খাওয়া উচিত, সেগুলো তিনি ঠিকমতো পান না। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে তার চিকিৎসা। এটা কোনো মতেই বিএসএমএমইউতে সম্ভব হচ্ছে না।’

খালেদা জিয়ার দাঁত শার্প (চোখা) হয়ে গেছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বরেন, ‘তার দাঁত যখন তার জিহ্বায় আঘাত করে তখনই তিনি কষ্ট পান। যার ফলে তিনি এ্খন কিছু খেতেও পারছেন না। এই বিষয়টা ধরা পড়ার পর সেখানকার চিকিসৎকরা টুথ ব্রান্ডিং করেছিলেন যাতে শার্পনেসটা কমে। কিন্তু এখন তার দাঁতের শার্পনেস আরও বেশি করে দেখা দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার দাঁতে রুট ক্যানেল করা দরকার, স্কেলিং করা দরকার, টুথ এসট্রাকংশ করা দরকার। দুই-একটা দাঁত তার নষ্ট হয়ে গেছে বয়সের কারণে, সেগুলো তুলে ফেলা দরকার। ইনসুলিন নেওয়ার পরও তার ব্লাড সুগার নামছে না। উনি ডায়াবেটিসের তিনটা ওষধু খাচ্ছেন। তারপরও সুগারের মাত্রা ২০ এর নিচে নামছে না। যেটা অত্যন্ত অ্যালার্মিং।

আর্থারাইটিস, ফ্রোজেন সোল্ডার প্রভৃতি রোগে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের আরও অবনতি ঘটেছে উল্লেখ ফখরুল বলেন, ‘ম্যাডামের ব্যাপারটা দলের সবাইকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে, পরিবারকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে, দেশের মানুষকে উদ্বিগ্ন করেছে। আমি বুঝতে পারি না দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে এই আচরণের উদ্দেশ্যটা কী? তাকে কি এই আচরণের মধ্য দিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে চায় তারা? রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কী তাকে একেবারে জীবন অবসানের চেষ্টা করা হচ্ছে?’

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘তিন সাপ্তাহ আগে ম্যাডামের টুথ গ্রান্ডিং করে দাঁতের শার্পনেসটা কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। গত ৬/৭ তারিখে রেফার্ড দেওয়া হয়েছিল ডেন্টাল ডিপার্টমেন্টে। গত পরশুদিন ওনাকে দেখেছেন। ‘এ’ ব্লক থেকে কেবিন ব্লকে ডাক্তার যেতে যদি ১০দিন সময় লাগে, তাহলে এ ধরনের আচরণ কী ইন্ডিকেট করে?’

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. মঈন খান, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

খালেদা খালেদা জিয়া টপ নিউজ ফখরুল বিএনপি বিএনপি চেয়ারপারসন

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর