Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নতুন মুদ্রানীতি: বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ১৪.৮%


৩১ জুলাই ২০১৯ ১২:০১

ঢাকা: চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৭ শতাংশ কমিয়ে ধরা হয়েছে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ।

বুধবার (৩১ জুলাই) সকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১৯-২০ অর্থবছরের নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবির। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস এম মুনিরুজ্জামান, আহমেদ জামাল, ব্যাংকিং রিফর্ম অ্যাডভাইজার এস. কে. সুর চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের উপদেষ্টা আল্লাহ মালিক কাজেমী, বিআইএফইউ-এর প্রধান আবু হেনা মো. রাজি হাসান, অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মো. আখতারুজ্জামানসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

নতুন মুদ্রানীতিতে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে। গত জানুয়ারিতে ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছিল ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ। তবে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত অর্জন হয়েছে মাত্র ১১ দশমিক ৩ শতাংশ।

অন্যদিকে, নতুন মুদ্রানীতিতে আগামী বছরের ৩০শে জুন পর্যন্ত সরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত সরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ২১ দশমিক ১ শতাংশ।

মুদ্রানীতিতে সরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি বেশি প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর বলেন, শতকরা হিসাবে সরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি বেসরকারি ঋণ প্রবৃদ্ধির চেয়ে বেশি দেখালেও বাস্তবে বেসরকারি খাতের ঋণের মোট প্রবৃদ্ধি সরকারি অংশের ৭ দশমিক ৩ গুন বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর বলেন, মুদ্রনীতিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতির প্রবৃদ্ধি কিছুটা কম হলেও আগের অর্থবছরের তুলনায় কিছুটা স্বস্তিকর। মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশ ধরে ৮ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপির প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব বলেও তিনি মুদ্রানীতিতে উল্লেখ করেন।

নতুন মুদ্রানীতিতে গড় সুদের হার কমিয়ে আনা হয়েছে উল্লেখ করে গর্ভনর বলেন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ব্যাংক ঋণের গড় হার ছি ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ। আর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ব্যাংক ঋণের গড় হার কমে ৯ দশমিক ৫৮ শতাংশে নেমে আসে।

নতুন মুদ্রানীতিতে সুদহার, নগদ জমা ও তরল সম্পদের বিধিবদ্ধমাত্রাগুলো আগের মুদ্রানীতি থেকে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি।

এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর বলেন, ব্যাংকে কোনো তারল্য সংকট নেই। বর্তমানে ব্যাংক খাতে তারল্য রয়েছে ৮৫ হাজার ৬১৫ কোটি টাকা। তবে সব ব্যাংকের তারল্য প্রবাহ এক না। কোনো ব্যাংকের হয়তো অনেক বেশি আছে, আবার কোনো ব্যাংকের হয়তো কিছুটা কম আছে। এছাড়া, আন্ত:ব্যাংকগুলোর কলমানি রেটও স্বাভাবিক রয়েছে। এর হার এখন চার শতাংশ বলেও জানান গভর্নর ফজলে কবির।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর বলেন, এখন থেকে প্রতিবছর একবার মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে। বছরে দুইবার মুদ্রানীতি ঘোষণার কোনো তাৎপর্য নেই।

প্রবৃদ্ধি অনুযায়ী কর্মসংস্থান না হওয়া প্রসঙ্গে ফজলে কবির বলেন, এটা নিয়ে সন্দেহ করার কিছু নাই। কর্মসংস্থান বাড়বে। রেমিট্যান্স প্রণোদনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রেমিট্যান্সে প্রণোদনার বিষয়ে কোনো অপব্যবহারের সুযোগ নেই। বরং প্রণোদনা দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যংক একটি গাইডলাইন করছে। সেই গাইডলাইনটি বর্তমানে মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। এই গাইডলাইন অনুযায়ী প্রবাসীদের রেমিট্যান্সের ওপর প্রণোদনা দেওয়া হবে।

টাকার মান কমানো প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর বলেন, ডলারের বিপরীতে টাকার মান বেশ যুক্তিসঙ্গত আছে। ফলে টাকার মান অবনমনের কোনো প্রয়োজন নেই।

পিপলস লিজিংয়ের অবসায়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০১৩ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি খারাপের দিকে যাচ্ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক অনেক চেষ্টা করেছিল এটিকে টিকিয়ে রাখতে। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। ফলে আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় আমরা এটি অবসায়ন করতে বাধ্য হয়েছি।

আরেক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর বলেন, ২০১৮ সালে আমরা কেন ফারমার্স ব্যাংক অবসায়ন করলাম না, এটা নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। আবার ২০১৯ সালে পিপলস লিজিং কেন অবসায়ন করলাম এটা নিয়েও সমালোচনা হয়েছে কেনো বাংলাদেশ ব্যাংক পিপলস লিজিং বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে সমালোচনা হবেই।

আরেক প্রশ্নের জবাবে ফজলে কবির বলেন, গত ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত খেলাপি ঋণের পরিমাণ বিবেচনা করে ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট জমা দিয়ে ৯ শতাংশ সুদে ১০ বছর মেয়াদে পরিশোধের সুযোগ দেওয়া হয়। আসলে এগুলো মূলত রিপেমেন্টের স্বার্থেই করা হয়েছে। আর এই ক্ষেত্রে পূর্বের সার্কুলার সংশোধন করার দরকার নেই। মূলত এটা করার কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পরিবর্তে চালু থাকবে। এতে করে কর্মসংস্থান ঠিক থাকবে।

টপ নিউজ নতুন মুদ্রানীতি বাংলাদেশ ব্যাংক


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

আইভরি কোস্টে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৩
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৪০

সম্পর্কিত খবর