Sunday 20 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১১ বছর পরে আবারো রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধিতে পেছাল এনবিআর


৩১ জুলাই ২০১৯ ১৪:০১

ঢাকা: দীর্ঘ ১১ বছর পরে আবারো রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধিতে পিছিয়ে গেল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে পিছিয়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে সংস্থাটির চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেছেন, বড় বড় প্রকল্প চালু, বিভিন্ন সেক্টরে ভ্যাট অব্যাহতি, বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে শুল্ক ও আয়কর অব্যাহতি দেওয়ায় রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি কমেছে।

বুধবার (৩১ জুলাই) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে রাজস্ব আহরণ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান একথা জানান।

বিজ্ঞাপন

মোশাররফ হোসেন বলেন, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে রাজস্ব আহরণের প্রবৃদ্ধি ছিলো ১০.৭ শতাংশ, ২০০৯-১০ অর্থবছরে ১৮.১ শতাংশ, ২০১০-১১ অর্থবছরে ২৮.০ শতাংশ, ২০১১-১২ অর্থ বছরে ১৯.৭ শতাংশ, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১৪.৮ শতাংশ, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ১০.৭ শতাংশ, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১২.৩ শতাংশ, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১৩.২ শতাংশ, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১১.৭ শতাংশ, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১৭.৯ শতাংশ ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রাজস্ব আহরণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০.৭ শতাংশ।

কারণ হিসেবে এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, গত অর্থবছরের ভ্যাটের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু খাতে যেমন গ্যাস, ইন্টারনেট, রপ্তানিমুখি গার্মেন্টস শিল্প, সোলার মডিউল, ট্রাভেল এজেন্ট, বেবী লোশন, হাওয়াই চপ্পল ও কম্পিউটার যন্ত্রাংশে প্রায় ১৫ হাজার ১৯২ কোটি ৬ লাখ টাকার ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কাস্টমসের ক্ষেত্রে মূলধনী যন্ত্রপাতি, ব্যাগেজ রুলস, মোবাইল ম্যানুফ্যাকচারিং, পোল্ট্রি রিলিফ গুডস, শিপ, বেজা ও কূটনৈতিক মিশনে প্রায় ১ হাজার ৫০২ কোটি টাকার আমদানি শুল্ক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, বাজেটে নতুন ভ্যাট আইন পাশ হয়েছে। জুলাই থেকে কার্যকর হয়েছে। নতুন আইন বাস্তবায়ন হওয়ার ফলে ভ্যাট আদায় বাড়বে। এজন্য ইএফডি ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। এরইমধ্যে ইএফডি কিনতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আগামী ২ বছরের মধ্যে প্রায় ১০ লাখ ইএফডি বসানো হবে। এতে রাজস্ব আহরণ বাড়বে। একইসঙ্গে বন্ড সুবিধার অপব্যবহার রোধে এনবিআর তৎপর হয়েছে। ফাঁকিবাজ বন্ড প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। অন্যদিকে ভ্যাট ও শুল্ক ফাঁকি রোধে বিশেষ অভিযান অব্যাহত আছে।

বিজ্ঞাপন

বাজেট বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী এবার ১ কোটি নতুন করদাতা তৈরির নির্দেশনা দিয়েছেন। এ লক্ষ্যে চলতি অর্থবছরে এনবিআর ৬ লাখ ৭২ হাজার নতুন করদাতাকে করনেটে আনার লক্ষ্যে কাজ করছে। এজন্য ২১৩টি জরিপ টিম গঠন করা হয়েছে। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৪৬৫টি জরিপ সম্পন্ন হয়েছে। প্রাপ্ত জরিপের ভিত্তিতে ৩ লাখ ৩১ হাজার ২৭২ টিআইএন বরাদ্দ করে আয়কর নির্ধারণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে জরিপ কার্যক্রমের মাধ্যমে কর মামলা নিষ্পত্তি করে প্রায় ২৮ কোটি ৩৩ লাখ ৭ হাজার ১০৪ টাকা কর আহরণ করা হয়েছে।

এনবিআর চেয়ারম্যান আরও বলেন, অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয়ের প্রায় ৮৫ শতাংশ এনবিআরের মাধ্যমে আহরিত হয়। ২০১৯-২০ অর্থবছরে সরকারের মোট রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৪২ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩ লাখ ২৫ হাজার ৬শ কোটি টাকা এনবিআরকে আহরণ করতে হবে। যা গত অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা বেশি। এনবিআর আশা করছে সবাইকে সাথে নিয়ে রাজস্ব আহরণে এনবিআর এগিয়ে যাবে।

উল্লেখ্য, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সংশোধিত রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫৬ হাজার ১৮১ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে। বিদায়ী অর্থবছরে এনবিআরের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ২ লাখ ৮০ হাজার ৬৩ কোটি টাকা। আর এনবিআর এই সময়ে রাজস্ব আহরণ করেছে ২ লাখ ২৩ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা। তবে আরও ২-১ হাজার কোটি টাকা বাড়বে বলেও এনবিআর চেয়ারম্যান জানিয়েছেন।

এনবিআর টপ নিউজ রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি কমেছে

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর