‘নতুন স্টক এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার কথা ভাবছে বিএসইসি’
৩১ জুলাই ২০১৯ ২১:৩০
ঢাকা: বাংলাদেশ সিকিউরিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও প্রফেসর হেলাল উদ্দিন নিজামী বলেছেন, বিএসইসি দেশে নতুন একটি স্টক এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠা করার কথা ভাবছে।
বুধবার (৩১ জুলাই) রাজধানীর পুরানা পল্টনের একটি হোটেলে অনলাইন পত্রিকা অর্থসূচক আয়োজিত ‘অর্থসূচক ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো ২০১৯ পরবর্তী পুনর্মিলনী ও বিশেষ প্রকাশনা সুবর্ণ আগামী’র মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
নতুন স্টক এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার যৌক্তিকতা তুলে ধরে হেলাল উদ্দিন নিজামী বলেন, ‘ডিমিউচুয়ালাইজেশনের পর স্টক এক্সচেঞ্জে যে ধরনের গুণগত পরিবর্তন আসার কথা ছিল, তা আসেনি। এই এক্সচেঞ্জের দক্ষতা বাড়েনি। স্বচ্ছতা আসেনি। পুঁজিবাজারের উন্নয়নে এই এক্সচেঞ্জ কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা রাখতে পারছে না।’
তিনি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, ‘এই স্টক এক্সচেঞ্জ আগামী দিনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও স্থায়িত্বশীলতার চাহিদা পূরণে সক্ষম নয়। যদি তারা তাদের অবস্থান পরিবর্তনে সক্ষম না হয় তাহলে আমাদেরকে ওই পথেই (নতুন স্টক এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠা) যেতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিএসইসির কমিশনার বলেন, ‘পুঁজিবাজার পরিচালনায় স্টক এক্সচেঞ্জের ম্যানেজমেন্ট চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। ডিমিউচুয়ালাইজেশন করা হয়েছিল বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায়, কতিপয় ব্রোকার-ডিলারের স্বার্থ রক্ষার জন্য নয়। কিন্তু সেটিই হচ্ছে। তাই আমাদেরকে বিকল্প ভাবতে হচ্ছে। গত দুই মাস ধরে অনেক গুরুত্বের সঙ্গে ভাবা হচ্ছে এটি।
তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি বাজারে যে মন্দা দেখা যাচ্ছে তার জন্য মোটেও বিএসইসি দায়ী নয়। এর পেছনে থাকা অনেকগুলো কারণের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকট। ব্যাংকের ঋণ নিয়ে ফেরত দেওয়া হচ্ছে না, লুটতরাজ চলছে। এর কোনোটির জন্যই বিএসইসি দায়ী নয়। বাজারের সাময়িক মন্দার পেছনে পিপলস লিজিংয়ের অবসায়নের ঘটনাও অনেকাংশে দায়ী। বাজারে বিটিআরসি ও গ্রামীণফোনের দ্বন্দ্বের ও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এর দায়ও বিএসইসির নয়।
হেলাল উদ্দিন নিজামী বলেন, ‘বিএসইসির কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি বা নীতি-কৌশলের প্রভাবে বাজারে দর পতন হয়নি। তবু একটি মহল বিএসইসিকে দায়ী করছে। কথিত বিনিয়োগকারীরা মিছিল মিটিং করে বিএসইসিকে দোষারোপ করছে। এর পেছনে কারও কারও সংশ্লিষ্টতা এবং ইন্ধন রয়েছে।’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘পুঁজিবাজার নিয়ে যারা পেছন থেকে খেলছেন, তারা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের শত্রু। বিএসইসি এ বিষয়ে সময় মতো যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। বাজারের সাম্প্রতিক পতনের বিষয়ে তদন্ত কমিটি তদন্ত করছে। ইতোমধ্যে বেশকিছু ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতার প্রাথমিক আলামত পাওয়া গেছে। চূড়ান্তভাবে দোষী প্রমাণিত হলে বিএসইসি কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’
অর্থসূচকের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কামরুন নাহার শরমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক প্রেসিডেন্ট শাকিল রিজভী, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক ছায়েদুর রহমান, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান অর্থ কর্মকর্তা আব্দুল মতিন পাটোয়ারি, রানার গ্রুপের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান খান প্রমুখ।
