ভৈরবে বেড়েছে গরু চুরি, রাত জেগে পাহারা
৮ আগস্ট ২০১৯ ০৯:২৭
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ): ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ভৈরবের খামারিরা ব্যস্ত গরুর পরিচর্যায়। তবে গরু চুরির আতঙ্কে ভুগছেন তারা। ঈদুল ফিতরের পর থেকে ভৈরবের বিভিন্ন গ্রামে চুরি হচ্ছে একের পর এক গরু। গত আড়াই মাসে তিন শতাধিক গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে জানান তারা।
গরু চুরি বেড়ে যাওয়ায় খামারি ও কৃষকরা রয়েছেন উদ্বেগের মধ্যে। চুরি ঠেকাতে অনেক এলাকায় রাত জেগে খামার ও গোয়াল ঘর পাহারা দিচ্ছেন। এরই মধ্যে গরু চুরি নিয়ে হুঁশিয়ারি জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবুও গরু চোর চক্রকে নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।
পুলিশ বলছে, গরু চোর ধরার ব্যাপারে পুলিশের একটি বিশেষ দল কাজ করছে। ভবিষ্যতে ভৈরবে গরু চুরির ঘটনা কমবে।
ভৈরব থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বাহালুল খান বাহার জানান, ঈদুল আজহা উপলক্ষে গরু চোর চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এ ব্যাপারে পুলিশ যথেষ্ট তৎপর। এরই মধ্যে কিছু গরু আমরা উদ্ধার করেছি, কিছু চোর ধরেছি। গরু চুরি যেন না হয়, সে ব্যাপারে আমরা সর্তক আছি। এ বিষয়ে ইউনিয়নসহ গ্রামগুলোতে আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত আছে।
খামারি ও কৃষকরা জানান, ভৈরবের বাঁশাগাড়ী, মানিকদী, খাসহাওলা, লন্দিয়া, শ্রী-নগর, জাফর নগর, মিরারচর, ভবানিপুর ও বিভিন্ন গ্রাম থেকে ঈদুল ফিতরের পর কমপক্ষে তিন শতাধিক গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। কিছুদিন ধরে ব্যাপক হারে গরু চুরি বেড়ে গেছে। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে চোররা প্রায় রাতেই কোনো না কোনো বাড়িতে হানা দিচ্ছে।
গরু চুরি করতে এসে এলাকাবাসীর হাতে গণপিটুনির শিকার ও হয়েছে কয়েকজন গরু চোর। হাতেনাতে গরুসহ আটক হয়েছে চোরদের। গত মাসে মেঘনা নদী থেকে নৌকা ভর্তি ১২টি গরুসহ এলাকাবাসী ও পুলিশ ১১ গরু চোরকে গ্রেফতার করে। এসব গরু চোর চক্রকে আইনের আওতায় আনলে চোররা চুরি করার সাহস পাবে না মনে করেন এলাকাবাসী।
ভৈরবের শিমুলকান্দি ইউনিয়নের ছনছড়া গ্রামের আলফাজ মিয়া জানান, গত কয়েকদিন আগে রাতের আঁধারে তার গোয়াল ঘর থেকে আনুমানিক ৮০ হাজার টাকা দামের ষাঁড় গরুটি চুরি হয়ে গেছে। একই কথা জানালেন গজারিয়া ইউনিয়নের হাসমত মিয়াসহ কয়েকজন কৃষক।
বাশঁগাড়ী গ্রামের আবুল কাসেম জানান, তার গোয়াল ঘর থেকে তিনটি গরু চুরি হয়ে গেছে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, কোরবানির ঈদে গরুর হাটে বিক্রির জন্য বহু কষ্টে গরু তিনটি কে লালন-পালন করেছিলাম। কিন্তু সেই গরু চোরেই নিয়ে গেল।
শুধু ভৈরবই নয় হাওর অঞ্চলের ইটনা, অষ্টগ্রাম, নিকলীতে গত কয়েক মাসে বিভিন্ন গৃহস্থের বাড়ি থেকে দুই শতাধিক গরু চুরি হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। ভৈরবের বিভিন্ন গ্রামঘুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, কৃষক ও খামারিরা তাদের একমাত্র সম্বল গরু চোরের হাত থেকে বাঁচাতে রাত জেগে গোয়ালঘর পাহারা দিচ্ছেন।