ডিপ ফ্রিজের বিক্রি বেড়েছে
৯ আগস্ট ২০১৯ ১৮:১৫
ঢাকা: কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে রেফ্রিজারেটর ও ডিপ ফ্রিজের বেচাকেনা বেড়েছে। কোনো কোনো দোকানি বলছেন, বছরের অন্য সময়ের তুলনায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বিক্রি বেড়েছে। ইলেক্ট্রনিক্সের সব দোকানেই কমবেশি ভিড় রয়েছে। আর প্রতিটি কোম্পানিই ঈদ উপলক্ষে দিচ্ছে বিশেষ ছাড়।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) রাজধানীর স্টেডিয়াম মার্কেট, ফার্মগেট ও শেওড়াপাড়ার কয়েকটি শোরুম ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ সব তথ্য জানা গেছে।
সিঙ্গারের ১৩৮ লিটার ডিপ ফ্রিজের দাম পড়ছে ২৩ হাজার টাকা। একই ব্যান্ডের ১৪৮ লিটার ডিপ ফ্রিজের দাম ২৫ হাজার টাকা, ২০৫ লিটার ২৭ হাজার টাকা, ২১১ লিটারের ৩০ হাজার টাকা ও ২৬০ লিটারের দাম ৩০ হাজার টাকার কাছাকাছি। প্রতিটি ফ্রিজের ক্ষেত্রে ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্যাশ ডিসকাউন্ট রয়েছে। আর পণ্যের সঙ্গে দেওয়া ক্রাচ কার্ড ঘষলেই রয়েছে নিশ্চিত পুরস্কার। এক্ষেত্রে ভাগ্যবান ক্রেতা শতভাগ বিনামূল্যেই পেতে পারেন পণ্যটি।
ফার্মগেটের সিঙ্গার শো-রুমের সেলস এক্সিকিউটিভ আশিকুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেচাকেনা বেড়েছে। আর এখন তো ফ্রিজের সিজন, ফ্রিজটাই বেশি চলছে। আমরা সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্যাশ ডিসকাউন্ট দিচ্ছি। এছাড়া পুরনো ফ্রিজ পরিবর্তন করে নতুন ফ্রিজ নেওয়ারও সুযোগ রয়েছে।
বাটারফ্লাইয়ের ইকো ব্রান্ডের ১০০ লিটারের ডিপ ফ্রিজ বিক্রি হচ্ছে ২০ হাজার টাকায়। ১৩৬ লিটারের দাম পড়ছে ২৩ হাজার টাকা, ১৪৫ লিটারের ২৪ হাজার টাকা ও ১৯৯ লিটারের ২৬ হাজার ৫৬৫ টাকা। একই কোম্পানির এলজি ব্রান্ডের ১৩৮ লিটারের ডিপ ফ্রিজ ৩৩ হাজার টাকা, ১৯০ লিটারের ৪০ হাজার টাকা ও ২৮০ লিটারের ডিপ ফ্রিজ বিক্রি হচ্ছে ৪৮ হাজার টাকায়৷
ফার্মগেটের বাটারফ্লাইয়ের শো-রুমের সেলস অ্যান্ড ক্রেডিট অফিসার রুহুল আমিন খান সারাবাংলাকে বলেন, ‘বেচাকেনা গত বছরের চেয়ে ভালো। সাধারণ যে কোনো সময়ের চেয়ে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেচাকেনা বেড়েছে।’
তবে অন্যান্য কোরবানি ঈদের চেয়ে এবার বেচাকেনা কম। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিটি পণ্যের সঙ্গে ক্রাচ কার্ড দিচ্ছি। ‘কিনলেই জিতবেন’ অফারের আওতায় সর্বোচ্চ ১০০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় রয়েছে।
র্যাংগের ১০০ লিটারের ডিপ ফ্রিজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ হাজার টাকা ও ২০০ লিটারের ৪২ হাজার টাকায়। এই ব্রান্ডের একটি শো-রুমের সেলস অফিসার সামিন ইয়াসার সাকিব সারাবাংলাকে বলেন, ‘এখন ডিপ ফ্রিজের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি। অনেকে আবার রেফ্রিজারেটরও কিনছেন। অন্য সময়ের চেয় বিক্রি বেড়েছে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত।’
এ বিক্রেতা জানান, ঈদ উপলক্ষে র্যাংগস বিভিন্ন পণ্যে ২০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে। এছাড়া পুরোনো পণ্য পরিবর্তনের সুযোও দিচ্ছে কোম্পানিটি।
রাজধানীর শেওড়াপাড়ার ওয়ালটন প্লাজার ম্যানেজার শফিকুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘বেচাকেনা ভালোই চলছে। ঈদে তো সবচেয়ে বেশি ফ্রিজই চলে। ফ্রিজ ও টেলিভিশন দুটোই চলছে। বেচাকেনা বেড়েছে কিন্তু তা ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বেশি হবে বলে আমার মনে হয় না।’
শফিকুল জানান, ওয়ালটনের ডিপ ফ্রিজ ২১ হাজার ৯০০ টাকা থেকে শুরু হয়ে ৩১ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে কোম্পানি থেকে সরাসরি কোনো ছাড় দেওয়া হয়নি। বিভিন্ন শো-রুম নিজ উদ্যোগে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে।
এদিকে, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম মার্কেটের বিভিন্ন শো-রুমে দেখা গেছে ক্রেতাদের কমবেশি ভিড় রয়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, বেচাকেনা ভালোই চলছে। এবার ঈদে ডিপ ফ্রিজের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি। তবে অন্য পণ্যের চাহিদাও কম নয়। কেউ কেউ পছন্দের এলইডি টিভি কিনছেন। একই বাজারে মোবাইলের বিক্রিও বেশ। অন্যান্য শোরুম ঘুরে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফ্রিজ, টিভি, এয়াকন্ডিশনার ও হোম এ্যাপ্লায়েন্স পণ্য বিক্রি হচ্ছে ব্যাপকভাবে।
স্টেডিয়াম মার্কেটের স্যামস্যাং শোরুমে কথা হয় ইলেক্ট্রা ইন্টারন্যাশনালের কর্মকর্তা রিয়াজ আহমেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে আমাদের পণ্যের চাহিদা বেড়েছে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত। ডিপ ফ্রিজের প্রতিই ক্রেতাদের বেশি আগ্রহ। তাদের প্রতিটি পণ্যের সঙ্গে রয়েছে বিশেষ অফারও।’
মার্কেটটিতে ডিপ ফ্রিজ কিনতে এসেছিলেন অমিত ও হাবিবা দম্পত্তি। প্রথমবারের এবার ঢাকায় ঈদ করছেন তারা। পল্টন এলাকার বাসিন্দা অমিত কোরবানিও দিচ্ছেন ঢাকায়।
সারাবাংলাকে অমিত বলেন, ‘বাসায় রেফ্রিজারেটর আছে। কিন্তু কোরবানির সব মাংস ওই ফ্রিজে রাখা যাবে না। তাই ডিপ ফ্রিজ কিনে নিলাম।’
ফার্মগেটে ডিপ ফ্রিজ কিনতে এসেছিলেন নাখালপাড়ার বাসিন্দা ফিরোজ। পরিবার নিয়ে তিনিও ঢাকায় থাকেন। কোরবানিও হচ্ছে ওই এলাকায়। জানালেন, ঈদকে সামনে রেখেই ফ্রিজ কিনলেন তারা।