Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সরকারের পদত্যাগ দাবি ইসলামী আন্দোলনের


১৭ আগস্ট ২০১৯ ১৯:২১

ঢাকা: চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে না পারায় সরকারের পদত্যাগ দাবি করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। পাশাপাশি কোরবানি চামড়া বিক্রি করে যেসব এতিমখানা অর্থ উপার্জন করত, তালিকা তৈরি করে সেইসব এতিমখানায় ভর্তুকি দেওয়ারও দাবি জানিয়েছে দলটি।

শনিবার (১৭ আগস্ট) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে ইসলামী আন্দোলনের নেতারা এসব দাবি জানান। কোরবানি চামড়ার ন্যায্য মূল্য না দিয়ে ‘গরিব ও এতিমের হক কেড়ে নেওয়া ও চামড়া শিল্প ধ্বংস করার’ প্রতিবাদে এ মানববন্ধন আয়োজন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-ঢাকা দক্ষিণের আমীর শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, ঢাকা দক্ষিণের আমীর ইমতিয়াজ আলম, কেন্দ্রীয় নেতা আহমেদ আব্দুল কাইয়ুম, আজিজুল হক, হাজী আনোয়ার হোসেন, আলহাজ আলতাফ হোসেন, মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাকী, শেখ শওকত আলী হাওলাদার, মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, শহীদুল ইসলাম প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘চামড়া নিয়ে যে বিপর্যয় হয়েছে, এটা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হলো- কেন এই বিপর্যয় হয়েছে? কী কারণে হয়েছে? কারা দায়ী? বর্তমান সরকারের কাছ থেকে বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এর কোনো ব্যখ্যা এখনো পাওয়া যায়নি। আমরা সবকিছু বিশ্লেষণ করে দেখেছি, এই বিপর্যয়ের পেছনে সরকার দায়ী।’

চামড়া শিল্পকে ধ্বংস করার জন্য এই বিপর্যয় ঘটানো হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘ক্ষমতাসীনদের অব্যবস্থাপনা, তাদের দায়িত্বহীনতা, তাদের অদূরদর্শিতা এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী। বাংলাদেশে সারাবছর যে চামড়া সংগৃহীত হয়, তার প্রায় ৫০ শতাংশ সংগৃহীত হয় কোরবানি ঈদে। একই সময় এত চামড়া সংগ্রহ করার মতো টাকা সাধারণত ট্যানারি মালিকদের হাতে থাকে না।’

বিজ্ঞাপন

আতাউর রহমান বলেন, ‘অতীতে আমরা দেখেছি, কোরবানি ঈদকে কেন্দ্র করে ট্যানারি মালিকদের জন্য বিপুল অংকের ঋণ বরাদ্দ করে সরকার। বিগত দিনগুলোতে বরাদ্দ করা ঋণের টাকায় কোরবানির ৮০ শতাংশ চামড়া কিনতে পারতেন ট্যানারি মালিকরা।’

‘কিন্তু বর্তমান অবস্থা হলো মৌসুমী ব্যবসায়ীরা ন্যায্যমূল্যে চামড়া কিনতে পারেনি- কারণ, তারা আড়তদারদের কাছ থেকে গ্রিন সিগনাল পায়নি। আড়তদারা গ্রিন সিগনাল দেয়নি- কারণ তারা ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে টাকা পায়নি। ট্যানারি মালিকরা টাকা দিতে পারেনি- কারণ তারা সরকারের কাছ থেকে লোন পায়নি’— বলেন আতাউর রহমান।

তিনি বলেন, ‘ট্যানারি মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করে বাণিজ্যমন্ত্রী ৬০০ কোটি টাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই টাকা ব্যাংকগুলো ট্যানারি মালিকদের দেয়নি। কারণ, ব্যাংকে টাকা নেই। যে কারণে ট্যানারি মালিকরা আড়তদারদের টাকা দিতে পারেনি। আড়তদাররা চামড়া কিনতে পারেনি। বিক্রি করতে না পেড়ে মানুষ চামড়া মাটিতে পুতে রেখেছে, নদীতে ফেলে দিয়েছে।’

আতাউর রহমান বলেন, ‘সরকার, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অনেক আগেই জানত, এবার চামড়া নিয়ে বিপর্যয় হবে। কারণ, ঈদের আগে ট্যানারি মালিকদের সঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ে বৈঠক হয়েছিল। সেখানে সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে ট্যানারি মালিকদের বাদানুবাদ হয়েছিল। সরকার সেখানে কোনো সুরাহা দেয়নি, তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এর দায়ভার অবশ্যই সরকারকে নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘কোরবানি ঈদে যত চামড়া হয়েছে তার দাম ১২ শ’ কোটি টাকা হবে হয়ত। সেই টাকার চামড়া কেন আজ নদীতে ভাসবে? রাস্তা ঘাটে পড়ে থাকবে? মাটির নিচে দাফন হবে। এটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য। এটা আমরা ভবিষ্যতে দেখতে চাই না। এই অবস্থার পরিবর্তন চাইলে এই ভোটারবিহীন, জনসর্থনহীন সরকারের পদত্যাগ করতে হবে। আমরা চাই, সরকার পদত্যাগ করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিক। সেই নির্বাচনে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে তারা আবার যদি ক্ষমতায় আসতে পারে, তো আসবে।’

‘গরীব-দুঃখী-এতিমের যে ক্ষতি হলো, এর ভর্তুকি সরকারকে দিতে হবে। আমরা চাই এতিমখানার লিষ্ট করে তাদের ভর্তুকি দিতে হবে। কারণ, ক্ষমতাসীনদের ব্যর্থতার কারণেই গরীব-দুঃখি-এতিমরা তাদের আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে’— বলেন গাজী আতাউর রহমান।

আওয়ামী লীগ আওয়ামী সরকার ইসলামী আন্দোলন চামড়ার দাম

বিজ্ঞাপন

খেজুর আমদানিতে শুল্ক কমলো
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২১:০৮

আরো

সম্পর্কিত খবর