গাংনীতে পাটের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না চাষিরা
১৯ আগস্ট ২০১৯ ১২:৩৬
মেহেরপুর: জেলার গাংনীর চাষীরা ন্যায্যমূল্যে পাট বিক্রি করতে পারছেন না। সরকারি পাটক্রয় কেন্দ্র না থাকায় ফড়িয়া ও মহাজনি পাট ব্যবসায়ীদের কাছে কম মূল্যে পাট বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকদের। ফলে লোকসানের মুখে পড়ছেন পাটচাষীরা।
গাংনী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে গাংনীতে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও চাষ হয়েছিল ১২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। পাটের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার কারণেই পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষকরা। এবার একবিঘা জমিতে পাট চাষ করতে কৃষকদের খরচ হয়েছে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা।
জেলায় পাট ক্রয়কেন্দ্র না থাকায় সরকারের বেঁধে দেওয়া মন প্রতি ১ হাজার ৯৫০ টাকায় পাট বিক্রি করতে পারছেন না চাষিরা। আর্থিক সচ্ছলতা না থাকায় প্রতি মন পাট ব্যবসায়ীদের কাছে ১ হাজার ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। ফলে মধ্যসত্ত্বভোগীরা লাভের মুখ দেখছে।
শহড়াবাড়িয়া গ্রামের পাটচাষি জহুরুল হক জানান, তিনি চলতি বছরে ১১ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। এবার আবহাওয়া অনুকূলে ছিল না। তাই সেচ দিয়ে পাট বড় করতে হয়েছে। আবার বৃষ্টির পানি না থাকায় পুকুর ভাড়া নিয়ে পাট জাগ দিতে হয়েছে। প্রতি বিঘা পাট জাগ দিতে পুকুর মালিক নিচ্ছে ৫০০ টাকা। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
পাট ব্যবসায়ী হুদা পাড়া গ্রামের সিদ্দিক কারিগর জানান, চাষিরা পাট ক্রয় কেন্দ্রে দিতে না পারায় ব্যাপারীদের কাছে বিক্রি করছে। যত্রতত্র পাট জাগ দেওয়ায় ও কাদা মাটি দিয়ে পাট পচানোর কারণে পাটের রং নষ্ট হয়ে গেছে ফলে কম দামে মিলারদের কাছে বিক্রি করতে হচ্ছে। সনাতন পদ্ধতিতে পাট পচানো বন্ধ করলে পাটের রঙ ভাল হবে ও মূল্য পাবেন চাষিরা।
গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কে এম শাহাবুদ্দীন আহমেদ জানান, চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে পাট চাষে। আবার পাট পচানোর জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারপরও চাষিরা সনাতন পদ্ধতিতে পাট জাগ দেন। এতে পাটের রং কিছুটা নষ্ট হওয়ায় তেমন দাম পাচ্ছেন না চাষিরা। তবে সরকারিভাবে ক্রয় কেন্দ্র খোলা হলে চাষিরা আরো মূল্য পেত বলেও জানান তিনি।