এফআর টাওয়ারের মালিক ফারুক গ্রেফতার
১৯ আগস্ট ২০১৯ ১৪:১৩
ঢাকা: নকশা জালিয়াতির মামলায় এফআর টাওয়ারের মালিক এস এম এইচ আই ফারুককে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে গুলশান-২ থেকে দুদকের উপ-পরিচালক আবু বক্কর সিদ্দিক তাকে গ্রেফতার করেন। দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রণব জানান, গত ২৬ জুন মঙ্গলবার দুপুরে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয় ১ এ দুদকের উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিক বাদী হয়ে ২৫ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় ফারুককে গ্রেফতার করা হয়।
এদিকে গতকাল একই মামলার আসামি কাসেম ড্রাইসেলের এমডি তাসভীর উল ইসলামকে গ্রেফতার করে দুদক। একই ঘটনায় ৩০ জুলাই রাজউকের সহকারী পরিচালক শাহ মো. সদরুল আলমকেও গ্রেফতার করে সংস্থাটি।
মামলার বিবরণে জানা যায়, অবৈধ নকশায় তৈরি বনানীর এফ আর টাওয়ার গড়ে তোলা হয়েছে ২৩ তলা বিশিষ্ট। ১৫তলা নকশার অনুমোদনেও মানা হয়নি কোনো নীতিমালা। নেই ফায়ার সার্ভিস, পরিবেশ অধিদফতর ও সিভিল অ্যাভিয়েশনের অনুমোদন। ১৮ থেকে ২৩ তলা নির্মাণের কোনো তথ্যই নেই রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছে। জমির মালিক ও ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি প্রশাসনের নাকের ডগায় নিজ সিদ্ধান্তে নির্মাণ করেছে বাকি পাঁচতলা। যারা আসামি হয়েছেন তারা ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০৮ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন।
প্রথম ধাপে ১৯৯৬ সালের নভেম্বরে সিভিল অ্যাভিয়েশনের শর্তসহ বিভিন্ন কারণে নকশা অনুমোদন না দিয়ে এফআর টাওয়ার কর্তৃপক্ষকে ফিরিয়ে দিলেও পরবর্তী সময়ে ওই একই বছরের ডিসেম্বরে অদ্ভুত অজুহাতে ১৮ তলার অনুমোদন দেয় রাজউক কর্তৃপক্ষ। অনুমোদন ফাইলে নোট ছিল, ‘আশেপাশের যেহেতু ১৮ তলা আছে তাই নকশা অনুমোদন দেওয়া যায়।’ ফাইলে কাগজপত্র ছিল সবই ভুয়া। নেওয়া হয়নি স্টেট শাখার অনুমোদনও।
ফারুক হোসেন ১৯৯৬ সালে তার মালিকানাধীন ১০ কাঠা জায়গাতে ১৮ তলা ভবন নির্মাণের জন্য রাজউকে আবেদন করেন। সে অনুসারে ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে ২০০৩ সালে রাজউক অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী ভবন নির্মাণের জন্য ফারুক হোসেন মালিকের ৪৫ শতাংশ ও ডেভলপারের ৫৫ শতাংশ হিসেবে রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলীর সঙ্গে রাজউকের মাধ্যমে আমমোক্তারনামা চুক্তি করেন।
কিন্তু ২০০৫ সালে ভবনের মালিক ফারুক হোসেন কর্তৃক রাজউক অনুমোদিত নকশায় ২৩ তলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে মর্মে রাজউককে জানানো হয় এবং ২০০৭ সালে বিষয়টি তদন্ত করে অনুমোদিত নকশায় অতিরিক্ত পাঁচতলা নির্মাণের প্রমাণ পেয়েও কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
রাজউকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঘুষ নিয়ে অবৈধভাবে নির্মিত অংশ বিক্রির অনুমোদন দিলে কাশেম ড্রাইসেল ব্যাটারির মালিক তাসভির উল ইসলাম ক্রয় করেন।
এ বছর ২৮ মার্চ এফআর টাওয়ারে আগুন লাগে। আগুনে ২৭ জনের মৃত্যু হয়।