চার মাসের অন্তঃসত্ত্বাকে গলা টিপে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
২৯ আগস্ট ২০১৯ ১৩:১২
ঢাকা: রাজধানীর বাড্ডায় ১৪ বছর আগে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী শারমিন সুলতানা হিয়াকে গলা টিপে হত্যার ঘটনায় ওই নারীর স্বামী সাইদুল রহমান ওরফে মিল্টনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক খাদেম উল কায়েস এই রায় ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাস বিনাশ্রম কারাভোগ করতে হবে।
সংশ্লিষ্ট আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আফরোজা ফারহানা আহমেদ (অরেঞ্জ) সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সাইদুর রহমান ওরফে মিল্টন এ মামলার একমাত্র আসামি। রায় ঘোষণার পর একমাত্র আসামিকে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০০৪ সালের দিকে আসামি সাইদুর রহমান মিল্টনের সঙ্গে শারমিন সুলতানা হিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর মিল্টন শারমিনের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিলেন। এরপর শারমিনের সুখের কথা চিন্তা করে পরিবার থেকে ২ লাখ টাকা যৌতুক দেওয়া হয়।
এরপরও আসামি, আসামির মা আমেনা খাতুন, ভাই নিউটন, ভাই বৌ নিপা এরা শারমিনকে যৌতুক আনার জন্য চাপ দিতে থাকেন। এছাড়া শারমিনের বিয়ের সময় দেওয়া ২০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার আসামি বিক্রি করে দেন।
যৌতুক না দেওয়ার জেরে ২০০৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে সাইদুর রহমান ভিকটিম হিয়াকে গলা টিপে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।
হিয়ার মরদেহের পাশে একটি চিরকুটে আসামি লেখেন, আমি আমার প্রভুর নির্দেশে স্ত্রীকে খুন করলাম।
পরে আসামি নিজে থানায় আত্মসমর্পণ করেন। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই ছিলেন।
ঘটনার ওই দিনই হিয়ার চাচা শাহাদাত হোসেন সরকার মুকুল বাদী হয়ে মিল্টনের নামে মামলা করেন। এই মামলায় মিল্টন হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।
২০০৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর মামলাটি তদন্ত করে বাড্ডা থানার এস আই মাজহারুল ইসলাম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
২০০৬ সালে ১ মার্চ আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলাটির বিচারকাজ চলাকালে আদালত চার্জশিটভুক্ত ২৫ সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্য নেন।