হল দখল নিয়ে চবিতে সংঘর্ষে আহত ৫, শাটল ট্রেন বন্ধ
১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১০:০২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) হল দখল কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।
এদিকে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের জেরে সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর প্রণব মিত্র চৌধুরী জানান, শহর থেকে ক্যাম্পাসগামী সকাল সাড়ে ৭টা ও ৮টার ট্রেন পৌঁছায়নি ক্যাম্পাসে।
এর আগে শনিবার (৩১ আগস্ট) রাত পৌনে বারোটার দিকে সোহরাওয়ার্দী হলের মোড়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাটল ট্রেনের বগিভিত্তিক গ্রুপ চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার (সিএফসি) ও বিজয় নেতাকর্মীরা এই সংঘর্ষে জড়ান।
আহতরা হলেন, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ১০-১১ শিক্ষাবর্ষের মো. ইলিয়াছ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ওবায়দুর রহমান লিমন, লোক প্রশাসন বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের নিলয় হাসান, পরিসংখ্যান বিভাগের ১০-১১ শিক্ষাবর্ষের মাহফুজুর রহমান, ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের প্রিয়াম রায় প্রান্ত।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোহরাওয়ার্দী হল দখল কেন্দ্র করে মূলত মারামারির সৃষ্টি হয়। সিএফসি গ্রুপের কয়েককজন নেতাকর্মী সোহরাওয়ার্দী হল দখল করতে গেলে বিজয় গ্রুপের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মারধর হয়। পরবর্তীতে সিএফসি গ্রুপের নেতাকর্মীরা সোহরাওয়ার্দী হলে ও বিজয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা আলাওল ও এফ রহমান হলে অবস্থান নেয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা নবগঠিত কমিটির সভাপতি রেজাউল হক রুবেল সারাবাংলাকে বলেন, ‘মো. ইলিয়াস নামে একটি ছেলে বারবার কমিটিকে ডিস্টার্ব করতেছে। ওই ছেলেটা বারবার ক্যাম্পাসে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে তুলছে। কেউ যদি ক্যাম্পাসটাকে অস্থিতিশীল করে তোলে, তাদের প্রতিহত করা হবে। আমরা বগিভিত্তিক রাজনীতি করতে চাই না। আমরা হলভিত্তিক রাজনীতি চাই।’
অন্যদিকে বিজয় গ্রুপের নেতা ও সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এইচ এম তারেকুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের নির্দেশে এই অতর্কিত হামলা চালানো হয়। তাকে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে চেয়েছি। কিন্তু সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে রাজনীতি করার মন মানসিকতা তার নেই। তার মতো একজন অছাত্রের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের রাজনীতি কখনো সফল হবে না। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি এবং দ্রুত তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করার জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
সিএফসি ও বিজয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা প্রয়াত মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী অনুসারী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পরিচিত।
শাটল ট্রেন চলাচল বন্ধের বিষয়ে রেলওয়ে থানার ওসি মোস্তাফিজ ভূঁইয়া বলেন, ‘সকালে কে বা কারা কদমতলী থেকে শাটল ট্রেনের এক চালককে তুলে নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় সকাল থেকে শাটল ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে।’
এ বিষয়ে চবি প্রক্টর বলেন প্রণব মিত্র চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘শাটল ট্রেনের চালককে অপহরণ করা হয়েছে। সে জন্য ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছ। আশা করি দ্রুত ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে।’
এ বিষয়ে জানার জন্য ষোলশহর রেল জংশন স্টেশন মাস্টারকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।