Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির যত মামলা


৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৭:৫২

ডেস্ক রিপোর্ট

ঢাকা : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। আজ বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পুরান ঢাকার বকশীবাজারের বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান এ রায় দেন।

খালেদা জিয়ার সামাজিক ও শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে তাকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, তবে তাকে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়নি । খালেদা জিয়া বা জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে এর আগেও বহুবার মামলা হয়েছে।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাটির অভিযোগ গঠন করা হয়েছিল ২০০৮ সালে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫  এর ২ ধারা ও দণ্ডবিধির ১০৯ ও ৪০৯ ধারায় অভিযোগ গঠন করেছিলেন  বিশেষ জজ আদালত-৫। তার ১০ বছর পর এতিমখানার অর্থ আত্মসাতসহ ১১টি বিষয় বিবেচনা নিয়ে খালেদা  জিয়াকে পাঁচ বছরের সাজা দিয়েছে  এ আদালত। এছাড়া এ মামলার অপর আসামি বেগম জিয়ার বড়ছেলে তারেক রহমানসহ অন্য পাঁচ আসামিকে ১০ বছরের সাজা দিয়েছে আদালত।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ১/১১ এর সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে আটক থাকার পর রমনা থানায় ৩ জুলাই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা দায়ের করা হয়। পরে এ মামলায় তাকে আটক দেখানো হলে একমাস নয় দিন অর্থাৎ ২০০৮ সালের ১৭ জুলাই থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত খালেদা জিয়া কারাভোগ করেন।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিরা হলেন বেগম জিয়ার বড়ছেলে তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামালউদ্দিন সিদ্দিকী, মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান। এদের মধ্যে কাজী সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদ রায় ঘোষণার সময় এজলাসে ছিলেন। পলাতক রয়েছেন বাকি আসামিরা।

বিজ্ঞাপন

তবে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এই প্রথম নয়। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মোট মামলা রয়েছে ৩৭টি। এর মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় হলো আজ। আর বিচারের শেষ পর্যায়ে আছে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা। এই মামলাটিও একই আদালতে বিচারাধীন।

এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারির শুরুতে সরকার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা আরও ১৪টি মামলার কার্যক্রম বকশীবাজারের বিশেষ আদালতে স্থানান্তর করেছে। স্থান সংকুলান ও নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনা করেই এটি করা হয়েছে বলে জানায় রাষ্ট্রপক্ষ। খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বলছেন, একটি নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে বিচার করতেই আদালত প্রাঙ্গণের বাইরে বকশীবাজারে মামলাগুলোর এই স্থানান্তর।

বকশীবাজারে স্থানান্তর হওয়া মামলাগুলোর মধ্যে আরও তিনটি দুর্নীতির মামলা রয়েছে। এগুলো হচ্ছে—গ্যাটকো, নাইকো ও বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতির মামলা। এই আদালতে নাশকতার ৯টি মামলার শুনানি হবে, যদিও এসব মামলার কার্যক্রম হাইকোর্টের আদেশে স্থগিত রয়েছে। আর দুটি পিটিশন মামলার মধ্যে নাশকতার মাধ্যমে সারাদেশে হত্যার অভিযোগে একটি, আর অন্যটি হচ্ছে খালেদা জিয়ার নিজের জন্মদিন পালন সংক্রান্ত মামলা।

এছাড়া খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এখনও বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি এমন মামলার সংখ্যা ২১টি। এর মধ্যে কিছু মামলায় চার্জশিট হলেও কয়েকটি তদন্ত পর্যায়ে রয়েছে।

২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন খালেদা জিয়াসহ আরো ১৪ জনের নামে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা দায়ের করে। মামলায় বলা হয় চট্টগ্রাম বন্দর ও ঢাকা ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপোর কন্টেইনার ওঠানামার কাজ গ্যাটকোকে দেওয়ার ফলে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের ১৪৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। খালেদা জিয়া দুই দফায় এই মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করেন যা আদালতে খারিজ হয়ে যায়। বর্তমানে অভিযোগপত্র দাখিলের অপেক্ষায় আছে মামলাটি।

বিজ্ঞাপন

২০০৮ সালের ২৬ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশন শাহবাগ থানায় খালেদা জিয়াসহ ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে বড়পুকুরিয়া দুর্নীতি মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় বলা হয়, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে ঠিকাদার নিয়োগের ব্যাপারে অভিযুক্তরা দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন এবং প্রায় ১৫৯ কোটি টাকা ঘুষ হিসেবে আদায় করেছেন। মামলাটি এখন ঢাকা জজকোর্টে প্রক্রিয়াধীন আছে। খালেদা জিয়া এই মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্ট বিভাগে আবেদন করেন যা ২০১৬ সালের ২৫ মে আদালত খারিজ করে দেন।

২০০১ থেকে ০৬ বিএনপি শাসনামলের শেষে নাইকো দুর্নীতি কেলেঙ্কারিতে জড়ায় জিয়া পরিবারের। ২০১১ সালেল ২৩ জুন কানাডার একটি আদালত বেগম জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তার সরকারের জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসাইনের দুর্নীতি মামলার বিষয়ে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ পেয়েছিল।

২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন খালেদা জিয়াসহ আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করে। ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ এগারো জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করে। খালেদা জিয়া মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন। ২০১৫ সালের ১৮ জুন হাইকোর্ট এই আবেদন খারিজ করে দিলে খালেদা জিয়া সুপ্রিম কোর্টের আপিল ডিভিশনে লিভ টু আপিলের আবেদন করেন। ২০১৬ সালের ২৪ নভেম্বর আপিল বিভাগ খালেদা জিয়ার এই আবেদন খারিজ করে দেয় এবং বিচারিক আদালতকে মামলার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে আদেশ দেয়। মামলার চার্জ গঠনের শুনানির কাজ এখন প্রক্রিয়াধীন।

মোশাররফ কানাডার কোম্পানী নাইকোকে অনৈতিকভাবে সুবিধা দেয়ার বিনিময়ে একটি দামি গাড়ি উপহার পেয়েছিল নাইকোর কাছ থেকে যার আর্থিক মূল্য ছিল কানাডিয়ান মুদ্রায় ১ লাখ ৯১ হাজার ডলার। নাইকো আরো ৫ হাজার কানাডিয়ান ডলার ঘুষ দিয়েছিল মোশাররফকে তার স্বপরিবারে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের জন্য। নাইকো বাংলাদেশ থেকে তাদের ঠিক করা দামে গ্যাস কিনতে ও বিক্রি করতে পারবে এবং গ্যাসক্ষেত্রে বিস্ফোরণের কারণে সরকারের নির্ধারিত জরিমানা কমানোর শর্তে মোশাররফকে ওই ঘুষ দিয়েছিল।

২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট রিট পিটিশনের ( পিটিশন নাম্বার: ৫৬৭৩) এ রায় দেয়। রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ, এফবিআই এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের সমস্ত তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আদালত এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে, ২০০৩-০৬ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ খালেদা জিয়ার প্রধানমন্ত্রীত্বকালীন সময়ে নাইকোর কাছ থেকে বড় ধরনের ঘুষ লেনদেনের ঘটনা ঘটেছিল অনৈতিকভাবে তাদের সুবিধা দেওয়ার নামে।

বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের আদেশের পর্যবেক্ষণে বলে, নাইকো একেবারে নির্লজ্জভাবে ঘুষ দিয়েছিল। নাইকোর এজেন্ট কাশিম শরীফকে ৪ মিলিয়ন ডলার দিয়েছিল এবং ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভুইয়ার মাধ্যমে ৫ লাখ ডলার দিয়েছিল।

এইসব তথ্যপ্রমাণ রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ এবং মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করে। তাদের তথ্যপ্রমাণ প্রমাণ করে, নাইকো তাদের বাংলাদেশী এজেন্টদেরকে সুইস ব্যাংকের মাধ্যমে প্রথমে বার্বাডোজের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কাশিম শরিফ এবং সেলিম ভুইয়ার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকাগুলো দেন। পরে ওই টাকা চলে যায় তারেকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের অ্যাকাউন্টে।

এই মামলা চলাকালীন সময়েই জিয়া পরিবারের দুর্নীতি নিয়ে এফবিআইয়ের সাবেক বিশেষ প্রতিনিধি ডেবরা লাপ্রিভেট গ্রিফিথ বাংলাদেশের কাছে একটি তদন্ত প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন। ওই প্রতিবেদনে ছিল ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের সময় রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় কিভাবে দুর্নীতি হয়েছিল।

ওই একই সময়ে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের এক নথি ফাঁস করে বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ওয়েবসাইট উইকিলিকস। ২০০৮ সালের ৩ নভেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টে এক গোপন তারবার্তায় তারেক রহমান সম্পর্কে লেখেন। মরিয়ার্টি লিখেছিলেন, ‘তারেক রহমান বিপুল দুর্নীতিতে জড়িত যা বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলছে।’ সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান অত্যন্ত দুর্ধর্ষ ও ভয়ঙ্কর এবং একটি দুর্নীতিপরায়ণ সরকার ও বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতার প্রতীক বলেও উল্লেখ করেছিলেন মরিয়ার্টি।

জিয়া পরিবারের আরেকটি অন্যতম প্রধান মামলা হল, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা। ২০১১ সালের ৮ আগস্ট দুর্নীতি দমন কমিশন তেজগাঁও থানায় এই মামলা দায়ের করা হয়। জিয়াউর রহমানের নামে একটি চ্যারিটেবল ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করে ৩ কোটি ১৫ লাখ টাকার বেআইনি লেনদেনের কারণে এই মামলা করা হয়। খালেদা জিয়াসহ চার জনকে আসামি করে চার্জশিট প্রদান করা হয়।

খালেদা জিয়াই শুধু নন তার দুই ছেলেসহ জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ কম নয়। বড় ছেলে তারেক রহমান ছাড়াও ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে বারবার।

২০০৯ সালের ৮ জানুয়ারি বিভিন্ন অভিযোগ ও সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে মার্কিন জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট  আরাফাত রহমান কোকোর কয়েকটি ব্যাংক হিসাবের বিরুদ্ধে সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের মামলা করে।

এই ব্যাংক হিসাবগুলোতে ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ গচ্ছিত ছিল। আরাফাত রহমান কোকো বহুজাতিক কোম্পানি সিমেন্স এবং চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কাছ থেকে তার অ্যাকাউন্টে ঘুষ হিসেবে ওই টাকা নিয়েছিলেন বলে মার্কিন আদালতকে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠান দুটি।

সিমেন্স জানায়, সিঙ্গাপুরের ব্যাংক অ্যাকউন্টের কিছু টাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছিল। কোকোর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মার্কিন ডলারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকেই তার ঘুষের টাকা পরিশোধ করা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রকে ব্যবহার করে বিদেশ থেকে ঘুষ ও জোরপুর্বক টাকা আদায় করলে তা যুক্তরাষ্ট্রের মানি লন্ডারিং আইনের আওতায় পড়ে । তার মামলার বিষয়টি পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, তার অ্যাকাউন্টের লেনদেন হয়েছে বিদেশে বসে এবং ঘুষ ও জবরদস্তিমূলকভাবেই তিনি ওই অর্থ নিয়েছিলেন।

ওইসময়ে যুক্তরাষ্ট্রে কোকোর ওই অর্থ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল এবং বাংলাদেশ  এবং যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে কোকোর এই ঘুষ কেলেঙ্কারি নিয়ে কাজ করে। এরপর জানা যায়, আরাফাত রহমান কোকো ঘুষের মাধ্যমে সিঙ্গাপুরে বিপুল পরিমাণে অর্থ জমা করেছিলেন। এরপর ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ সরকারকে ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ফেরত দিয়েছিল। এর আগে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনকারী হিসেবে আরাফাত রহমান কোকোকে বাংলাদেশের একটি আদালত ২০১১ সালে ৬ বছরের জেল দিয়েছিল।

এরপর বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার ঘনিষ্ট বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনার গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে  ঘুষ ও মানি লন্ডারিং নিয়ে  তদন্ত করেছে মার্কিন ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)। বাংলাদেশের আদালতে তাদের বিরুদ্ধে এসে  সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন এফবিআইয়ের সাবেক বিশেষ প্রতিনিধি।

এফবিআইয়ের তদন্তে উঠে আসে, তারেক ও মামুন তাদের সিঙ্গাপুরের একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে নির্মাণ কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের পরিচালক এবং চীনের হারবিন ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশনের এদেশীয় এজেন্ট খাদিজা ইসলামের কাছ থেকে সাড়ে ৭ লাখ মার্কিন ডলার ঘুষ নিয়েছিল। হারবিন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির লোকাল এজেন্ট হিসেবে টঙ্গীতে ৮০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ কাজ পাওয়ার  জন্য তারেক ও মামুনকে ওই টাকা দিয়েছিল ঘুষ হিসেবে।

এফবিআইয়ের এজেন্ট ডেব্রা লাপ্রিভেট গ্রিফিথ এই বিষয়ে তারেক  ও মামুনের দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত করেছিলেন। তিনি বাংলাদেশের আদালতের সামনে সাক্ষ্য দেন যে, ব্যবসায়ী খাদিজা ইসলাম সিঙ্গাপুরে মামুনের সিটি ব্যাংকে ওই টাকা জমা দিয়েছিলেন। ওই একই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে তারেক রহমানের নামে সাপ্লিমেন্টারি গোল্ড ভিসা কার্ড ইস্যু করা হয়। সিঙ্গাপুরের সিটি ব্যাংকের কাছ থেকে সাপ্লিমেন্টারি গোল্ড ভিসা কার্ড নিতে তারেক রহমান তার পাসপোর্টের একটি ফটোকপি জমা দিয়েছিলেন। তারেক রহমান এই কার্ড গ্রিস, জার্মানী, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রমোদভ্রমণের জন্য ব্যবহার করেছিল বলেও জানিয়েছে এফবিআই।

এরপর ২০১৬ সালের ২১ জুলাই বাংলাদেশের উচ্চ আদালত মুদ্রা পাচারের অপরাধে তারেক রহমানকে সাত বছরের জেল এবং ২০ কোটি টাকা জরিমানা করে। দেশের সর্বোচ্চ আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছিলেন এ ধরনের অপরাধমূলক কাজ ‘ ফিনান্সিয়াল ক্রাইম’ এবং এ ধরনের কাজ দেশের অর্থনৈতিক  উন্নয়নের জন্য বড় ধরনের একটি বাধা।

সারাবাংলা/এসবি

 

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

উর্মিলার সংসার ভেঙে যাওয়ার কারণ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০২

নতুন পরিচয়ে কুসুম সিকদার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭

সম্পর্কিত খবর