Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১০ লাখ টাকা ছিনতাই: পুলিশসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা


৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৯:১৬

ঢাকা: রাজধানীর মতিঝিলে ১০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় বংশাল থানা পুলিশের কনস্টেবল আল মামুনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলার অন্য আসামির একজনের নাম জিতু, তবে আরেকজন অজ্ঞাতনামা।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১টার দিকে মতিঝিল থানায় এই মামলা করা হয়। ছিনতাইয়ের অভিযোগে মামলা নম্বর-৮। মামলার বাদী ছিনতাইয়ের শিকার আবুল কালাম আজাদ।

মতিঝিল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মনির হোসেন মোল্লা সারাবাংলাকে বলেন, টাকা ছিনতাইয়ের সময় জনতার রোষানলে পড়া পুলিশ কনস্টেবল মামুন পাওনা টাকা তুলে দেওয়ার কথা বললেও প্রাথমিক তদন্তে এর কোনো সত্যতা মেলেনি। মামুন, জিতুসহ মোট তিনজন ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যেই টাকার ব্যাগ টান দেয় এবং বাধা দিলে পুলিশের হ্যান্ডকাপ দিয়ে বাদীর মাথায় আঘাত করে।

মনির হোসেন বলেন, মামুন যদি আসলেই পাওনা টাকা তুলে দিতে সেখানে যেত, তাহলে টাকার ব্যাগ নিয়ে থানায় ফিরতো। কিন্তু সেটি না করে তারা টাকা নিয়ে অন্যদিকে পালানোর চেষ্টা করেছে।

মামলা করতে এতো সময় লাগার বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ পরিদর্শক মনির হোসেন বলেন, ‘যেহেতু একটা দাবি উঠেছিল যে, পাওনা টাকা। সেজন্য কিছুটা দেরি হয়েছে।’

বুধবার রাত সাড়ে ১২ টার দিকে মতিঝিল থানায় উপস্থিত মামলার বাদী আবুল কালাম আজাদ এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘যারা টাকার ছিনিয়ে নেয় তাদের কাউকে আমি চিনি না। কোনোদিন দেখিও নাই। কোনো কালেও তাদের কারও সাথে সাক্ষাতও হয়নি। এরা ধরা পড়ার পর গল্প বানিয়েছে। এমনকি জিতু থানায় এসেও বলেছে যে, আমার নম্বরে না কি সে দীর্ঘদিন ধরে ফোন করে, কিন্তু আমি ধরি না। পরে সেই নম্বরে পুলিশ কল করলে ফরিদপুরের এক নারী কল রিসিভ করেন। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় যে, ঢাকার পল্টনে থাকে আবুল কালাম আজাদ নামে কাউকে তিনি চেনেন কিনা। জবাবে ওই নারী বলেন, রং নম্বর।’

মতিঝিল থানা পুলিশের এসআই নুরে আলম সারাবাংলাকে বলেন, আল মামুন পুলিশের গাড়িচালক। যখন যে থানায় থাকেন সেই থানার গাড়ি চালান। কিছুদিন হয়েছে তিনি বংশাল থানায় বদলী হয়েছেন। এর আগে তিনি মতিঝিল থানায় তিন বছর চাকরি করেছেন। সেই কারণে হয়ত বংশাল থেকে এসে মতিঝিলে ছিনতাইয়ের সাহস পেয়েছেন।

আরেক আসামি অজ্ঞাতনামা কেন জানতে চাইলে পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মামুন আর জিতু তার নাম বলতে পারেনি। তাই তদন্তে নাম ঠিকানা বেরিয়ে এলে চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’

গভীর রাতে থানায় পুলিশ কনস্টেবল মামুনের ভাই ও স্ত্রীকে কাঁদতে দেখা গেছে। জানতে চাইলে মামুনের স্ত্রী ইয়াসমীন আরা জুঁই সারাবাংলাকে বলেন, ‘মামুন হয়ত সেখানে উপকার করতে গিয়ে ধরা পড়েছে। তাছাড়া কেন সে ছিনতাই করতে যাবে?’

মামুনের ভাই আনোয়ার হোসেন ডালিম বলেন, ‘বুঝতে পারছি না, আসলেই কী ঘটে গেলো!’

মতিঝিলে ছিনতাই করে পালানোর সময় পুলিশ সদস্য আটক

ছিনতাইয়ের শিকার আবুল কালাম আজাদ বলেন,‘ ছিনতাই ঘটনার পর সকলকে থানায় নিয়ে আসা হলো। থানায় এসে দেখি মামুনকে সবাই চেনে। ওসি মামুনকে লকাপে না ঢুকিয়ে তার কক্ষে বসিয়ে রাখেন। এরপর শুরু হলো, টাকার উৎস সম্পর্কে। কে দিয়েছে, কার টাকা, এতো টাকা তুলে একা যাচ্ছিলে কেন? এটি হুন্ডির টাকা নয়তো? ইত্যাদি প্রশ্ন করা হয়। আমি বলেছি, এই টাকা আমার। আমার ব্যবসায়ীক পার্টির পাঠানো টাকা আমি ব্যাংক থেকে তুলেছি।’

‘এর কিছুক্ষণ পর দেখি, টাকা গুনছে। আমাকে বলা হয়, কত টাকা আছে। আমি বলেছি, ১০ লাখ ৪৫ হাজার। পরে টাকা গণনা করে ১০ লাখ ৫৫ হাজার মিলেছে। আমি আলাদা ১০ হাজার তুলেছিলাম, সেটি বলতে ভুলে গিয়েছিলাম।’

টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি ওমর ফারুক বলেন, ‘সে বলে ১০ লাখ ৪৫ হাজার, আর টাকা গণনা করে পাওয়া যায় ১০ লাখ ৫৫ হাজার। এতে সন্দেহ হলে হুন্ডির বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হয়েছে। এটি অনেক সময় সত্যও হয়ে থাকে। তবে এক্ষেত্রে হয়নি।’

প্রসঙ্গত, বুধবার বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে মতিঝিল এনআরবিসি ব্যাংক থেকে টাকা তুলে মোহামেডান ক্লাবের সামনের সড়কে এলে তিনজন পুলিশ পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদের কাছ থেকে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিতে চায়। এতে বাধা দিলে মামুন তার হাতে থাকা হ্যান্ডকাপ দিয়ে আজাদের মাথায় আঘাত করেন। পরে টাকার ব্যাগ নিয়ে পালানোর সময় জনতা দুইজনকে ধরে ফেললেও একজন পালিয়ে যায়।

ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদের বাড়ি ব্রাক্ষণবাড়িয়ার বাঞ্চারামপুরে। তিনি মতিঝিল আরামবাগ এলাকায় থাকেন। পল্টনের শখ টাওয়ারে তার ইলেক্ট্রিক সরঞ্জাম ব্যবসার অফিস আছে।

১০ লাখ টাকা ছিনতাই পুলিশের গাড়ি চালক মামুম মতিঝিলে টাকা ছিনতাই


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

বাংলাদেশ-ভারত টেস্টে হামলার হুমকি!
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:৩৫

সম্পর্কিত খবর