‘মানুষ থাকলেই এডিস মশা থাকবে, এটি বিচিত্র কিছু না’
১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৫:৫২
ঢাকা: এডিস মশার উপদ্রব বিচিত্র কিছু নয় উল্লেখ করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, যেখানে মানুষ থাকবে, সেখানেই এডিস মশার উপদ্রব থাকবে। এটি নিয়ন্ত্রণে আমরা কাজ করছি।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর গাবতলী এলাকায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) কাঁচাবাজার পরিচ্ছন্নতার কাজে যুক্ত হওয়া নতুন যন্ত্রপাতি পরিদর্শন করতে এসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এডিস মশার উৎপত্তি বাংলাদেশে না হলেও সময়ের ব্যবধানে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য জায়গায় এর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ঢাকায় মানুষের ঘনত্ব বেশি হওয়ায় এখানে এডিস মশার উপদ্রব বেশি। আমরা ঢাকাকে নিয়ে কাজ করছি। তবে এডিস দেশের অন্যান্য শহরে ছড়িয়ে যাওয়া বিচিত্র কিছু নয়। যেখানে মানুষ থাকবে সেখানেই এডিস মশা থাকবে। এটা আমরা আগে থেকেই মাথায় রেখেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে সারাবিশ্ব জনসচেতনতা এবং প্রতিটি নাগরিকের স্ব স্ব দায়িত্ব পালনকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। যারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পেরেছে সে সমস্ত জায়গায় এডিস মশার প্রাদুর্ভাব বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। ঢাকা শহরে বেশিমাত্রায় প্রাদুর্ভাব ছিল। যদিও এরই মধ্যে এই প্রাদুর্ভাব যথেষ্ট মাত্রায় কমেছে। লার্ভা যেখানে ছিল সেখানেই ধ্বংস করা হয়েছে। গ্রামগঞ্জেও মানুষের থাকার জায়গায় এডিস মশার প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে। এর জন্য বছরব্যাপী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এখন শুধু নির্দিষ্ট সময় নয়, সারাবছরই কাজ করা হবে।
অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কম রোগী মারা গেছে উল্লেখ করে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমেরিকায় ডেঙ্গু জ্বরে এক হাজার লোক মারা গেছে, তার মানে সেখানে এডিস আছে। জাপানে আছে, ইউরোপে আছে। ফিলিপাইনে দেড় লাখ মানুষের বাস সেখানে ৪৯০ জন মারা গেছে। আমাদের এখানে ৬১ হাজার আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৪৭ জন।
পৌরসভার কার্যক্রম সম্পর্কে অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘চ্যালেঞ্জ তো সারা পৃথিবীতেই। আমাদের পৌরসভাগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে হবে। পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বেতন ভাতা বাড়ানোর দাবি করেছিল। তাদের বলেছি, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালী করার কথা বলবেন আর নির্ভর করবেন সরকারের ওপর তা তো হয় না। পৌরসভাগুলোতে শক্তিশালী হতে হলে নিজস্ব আয় বাড়াতে হবে। এখন মানুষের মাথাপিছু আয় দুই হাজার ডলারে উপরে। সেই দেশে তাদের পরনির্ভরশীল হওয়ার দরকার নেই।’
এসময় ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘এডিস নিয়ন্ত্রণে চিরুনি অভিযানের প্রথম পর্ব শেষ করেছি। তাতে অনেক ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে। আবার মানুষ স্বাগতও জানিয়েছে। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে দ্বিতীয় ধাপে ‘চিরুনি অভিযান’ চালানো হবে। এটা নিয়মিতই চলবে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সমন্বিত ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামের বিষয়ে অবগত করা হবে। আগামী পাঁচ বছর কি প্রোগ্রাম করব তার একটি গাইড লাইন থাকবে। এছাড়া থাকবে চতুর্থ প্রজন্মের ওষুধ। আর কিভাবে কিছুদিন পর পর ওষুধগুলো পরিবর্তন করতে পারি সেটার ব্যবস্থা করব। ভেহিকেল মাউন্টেইন ফগার মেশিন আনা হবে। যে মেশিন পায়ে হেটে ৪০ মিনিট ফগিং করা যায় এবং মেশিনটি সাড়ে ৩ ঘণ্টা ফগিং ক্ষমতাসম্পন্ন।’
কাঁচাবাজার পরিচ্ছন্নতার যন্ত্রপাতি পরিদর্শনের সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. আব্দুল হাইসহ সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।