প্রতিবন্ধীতাকে জয় করে পরীক্ষা হলে সাদ
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৮:৩৩
আব্দুর রউফ পাভেল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
নওগাঁ: এ বছর এসএসসি অংশ নিচ্ছে পরীক্ষায় চক এনায়েত উচ্চ বিদ্যালয়ের আল ইয়ামি সাদ। তবে সাদ তার বয়সী অন্যদের মতো নয়। তার হাঁটাচলা স্বাভাবিক নয়,হাতের আঙ্গুলগুলো বাঁকানো, কথাও অস্পষ্ট। কিন্তু তাতে কী। এসব প্রতিবন্ধীতা সাদকে দমাতে পারনি। সব প্রতিবন্ধীতাকে জয় করে সাদ এবার অংশ নিচ্ছে চলতি এসএসসি পরীক্ষায়।
তবে পরীক্ষার এ সময়টায় পাশে এসে দাঁড়িয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। অন্য শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত ৩ ঘন্টা বরাদ্দ হলেও সাদের জন্য নির্ধারিত সময়ের বাইরে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে আরও ৩০ মিনিট।
নওগাঁ জিলা স্কুলের পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, নির্ধারিত সময়ের পর কেন্দ্র থেকে সব পরীক্ষার্থী বেরিয়ে গেছে। কিন্তু স্কুলের হলরুমের পিছনের বেঞ্চে একাই বসে তখনও পরীক্ষা দিচ্ছে আল ইয়ামি সাদ। ছবি উঠানোর জন্য কেন্দ্র সচীবকে অনুরোধ করা হলে তিনি সম্মতি দেন। তখনও সে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পরীক্ষার খাতায় উত্তর লিখতে। হাতের আঙ্গুলগুলো বাঁকানো। তারপর আবার বাম হাতের দুই আঙ্গুল দিয়ে লিখে। মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে সে।
পরীক্ষা শেষে মায়ের ঘাড়ে ভর করে ভ্যানে চড়ে বসা সাদের সাথে কথা হয় সারাবাংলার এই প্রতিবেদকের সাথে। পা দুটো বাঁকা এবং শক্তি তেমন না থাকায় হাঁটতে পারেনা।
আল ইয়ামি সাদ জানায়, পরীক্ষায় ভাল হয়েছে। বেশি ভাল হয়েছে ইংরেজি। কারণ ইংরেজি পছন্দ সাদের। জেএসসিতে জিপিএ ৪ দশমিক ৮ এবং পিএসসিতে জিপিএ ৪ দশমিক ৬ পেয়েছি। ভবিষ্যতে বড় অফিসার হওয়ার স্বপ্ন।
আল ইয়ামি সাদের মা হিরা ইসলাম বলেন, জন্মের তিন মাস পর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়। এরপর দুইজন ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নেয়া হয়। ভুল চিকিৎসার কারণেই হয়তো আজ এ অবস্থা। তারপরও আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। যা আছে তাই নিয়ে সন্তুষ্ট। আমার ছেলেকে শিক্ষিত করতে চাই। লোকে অনেক কথাই বলেন। কোন কথায় কান দিয় না।
নওগাঁ চক এনায়েত উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল আলম বলেন, আল ইয়ামি সাদ ছাত্র হিসেবে মেধাবী। ছোটবেলায় মায়ের কোলে করে স্কুলে আসতো। নিজেকে খুবই অসহায় মনে হয়, খারাপ লাগে।
সারাবাংলা/এমএইচ/জেএ