ঢাকা: ছাত্রলীগের প্রতি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে ক্ষোভ রয়েছে তা কমিয়ে আনাই এই মুহূর্তে প্রধান লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। আগামী দশমাসে ছাত্রলীগকে যুগোপযুগী একটি সংগঠন হিসেবে দাঁড় করাতে চান তারা।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সারাবাংলাকে খোলামেলা এসব কথা জানান ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত এই দুই নেতা।
ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের প্রথম পদক্ষেপই হলো ছাত্রলীগের প্রতি জননেত্রী শেখ হাসিনার যে ক্ষোভ রয়েছে তা দুর করা। নেত্রী আমাদের যেভাবে দিকনির্দেশনা দেবেন, সেভাবেই আমরা চলব। আমরা যে দায়িত্ব পেয়েছি, সেই দায়িত্ব পালন করব। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় ছাত্র সংগঠন। এটা চালাতে হলে আমাদের অবশ্যই কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে। আমরা বসে সার্বিক একটা পরিকল্পনা করব, ছক আঁকব। সেই ছক অনুযায়ী যে ১০ মাস সময় আছে, আমাদের যেসব কমিটি বিলুপ্ত হয়েছে, যেসব কমিটির বয়স দুই বছরের বেশি হয়েছে, সেগুলো বিলুপ্ত করে যুগোপযোগী ছাত্রলীগ হিসেবে গড়ে তুলব।’
জয় আরও বলেন, চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি সন্ত্রাসী, ‘মাদকসেবী এদের স্থান বাংলাদেশ ছাত্রলীগে নেই। কোনো নেতা যদি এমন কর্মকান্ডের সাথে জড়িত হয় তার প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে সাথে সাথে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি লেখক ভট্টাচার্য সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রাণপ্রিয় নেত্রী আমাদের যেভাবে দিকনির্দেশনা দেবেন, সেভাবেই আমরা চলব। কিছুদিন আগে পদবঞ্চিত যেসব ছাত্রলীগ নেতা আন্দোলন করেছিল, তাদের সাথে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে তা শেষ করবো। বাংলাদেশ ছাত্রলীগে কোনো গ্রুপিং থাকবে না, সবাই মিলে একটি ব্যানার হব।’
দশ মাস সময় আছে আমাদের হাতে, কিন্তু অসম্ভব বলে কিছু নেই। আমরা সবাই মিলে আন্তরিকভাবে যদি কাজ করি তাহলে এই সময়ে সবগুলো কমিটি পুনর্গঠন করা সম্ভব বলে জানান ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।
ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি আরও বলেন, ‘পরিশ্রম করে রাজনীতি করতে হবে। এর বাইরে কারো বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক লেনদেনের অভিযোগ পেলে অভিযোগের প্রমাণ সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে, শোভন-রাব্বানীর ব্যর্থতার জায়গাগুলোকে চিহ্নিত করে তা মোকাবিলা করতে হবে জয় ও লেখককে। এটি তাদের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা।
এই বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্যই দুজনকে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দায়িত্বে যারা এসেছেন তারা গঠনতন্ত্রের আলোকেই এসেছেন। দুর্নীতি করলে, অন্যায় করলে ছাত্রলীগের মতো সংগঠনে যে জায়গা হয় না, ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অব্যাহতি দেওয়ার ঘটনা তা-ই প্রমাণ করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন। এ সংগঠনের বর্ণাঢ্য ইতিহাস ও ঐতিহ্য আছে। এটি মাথায় রেখে দায়িত্ব পালন করে গেলে, সর্বোপরি সংগঠনটির সরাসরি অভিভাবক শেখ হাসিনার নির্দেশ মেনে চললে যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব। আশা করি, তারা সেটা পারবে।’