দুর্নীতিবাজ অভিজ্ঞ হলেও প্রয়োজন নেই, বিআরটিসি নিয়ে মন্ত্রী
১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৬:২৬ | আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৭:৪২
ঢাকা: সরকারি পরিবহন সংস্থা বিআরটিসির সাবেক চেয়ারম্যানকে ইঙ্গিত করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন দুর্নীতিবাজ অভিজ্ঞ হলেও তাকে প্রয়োজন নেই। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিআরটিসিতে দিকনির্দেশনামূলক সভায় তিনি এ কথা বলেন।
বিআরটিসির দুর্নীতি কঠোর হাতে দমনে নতুন চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘জনবল কম হলে কম দিয়ে চলব কিন্তু দুর্নীতিবাজ জনবলের প্রয়োজন নেই। এই সংস্থায় চেয়ারম্যান আসে আর যায়। আসার সময় শুনি তিনি সৎ মানুষ। কিছুদিন পরেই দেখি নানা অভিযোগ। ডিপো ম্যানেজারকে সঙ্গে নিয়ে তিনিও দুর্নীতি অনিয়মে নিমজ্জিত হয়ে পড়েন।’
বিআরটিসি’র দুর্নীতিবাজদের প্রতি কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বিআরটিসিতে যারা দায়িত্ব অবহেলা এবং দুর্নীতি করে তাদেরকে যদি শাস্তির আওতায় না আনা হয় তাহলে প্রতিষ্ঠানটি জনস্বার্থ রক্ষা করতে পারবেনা। যারা অনিয়ম, অপকর্ম এবং দুর্নীতি করবে তারা যতোই অভিজ্ঞ অফিসার হোক তাদের বিআরটিসিতে প্রয়োজন নেই।’
বিআরটিসির ডিপো ম্যানেজাররা যদি ঠিক না হয় তাহলে বারবার গাড়ি আমদানি করেও বিআরটিসিকে লাভজনক করা যাবে না। বিআরটিসিকে লাভজনক করতে হলে ভেতরের দুর্নীতি দূর করতে হবে। দুর্নীতিকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে একে লাভজনক করা দুঃস্বপ্নের মতো বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, ‘এখানকার শ্রমিকরা বেতন পায়নি এ ধরনের কোন অভিযোগ যেন বারবার আমাকে শুনতে না হয়। আর হেলপার দিয়ে যেনো বাস চালানো না হয়। চালক সংকট হলে বাস চালানো বন্ধ থাকবে কিন্তু হেলপার দিয়ে বাস চালানো নয়।’
বিআরটিসি’র বাস নতুন করে ইজারা দেওয়া বন্ধ রাখতে নির্দেশনা দেন মন্ত্রী। আগে যেসব বাস ইজারা দেওয়া হয়েছে সেসব বাসের লাভ-ক্ষতির হিসাব আগে করতে বলেন মন্ত্রী। এমনকি প্রভাবশালী কোনো ব্যক্তির আবেদনের প্রেক্ষিতে যেন বাস দেওয়া না হয় সে ব্যাপারে নির্দেশনা দেন সেতু মন্ত্রী।
বিআরটিসির নতুন চেয়ারম্যানের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘নতুন চেয়ারম্যান আশাবাদ শুনিয়েছেন তাতে নিরাশ হতে চাইনা। নতুন চেয়ারম্যানকে মন্ত্রণালয়ে আমি নিজে দেখেছি। তার ব্যাপারে আমার আত্মবিশ্বাস রয়েছে। তিনি এখান দুর্নীতি দূর করতে পারবেন।’
এ সময় নতুন চেয়ারম্যান আহসান এলাহি বিআরটিসিতে তার নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে জানান, এখানে গ্রামীণফোনের সহযোগিতায় অটোমেশন পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে প্রতিটি বাসে ভেহিক্যাল ট্র্যাকিং সিস্টেম লাগানো থাকবে। প্রতিটি বাসের ট্রিপ হিসাব অনলাইনে মনিটরিং করা হবে। ডিপো ম্যানেজারদেরকে টার্গেট দেওয়া হয়েছে তারা প্রতি মাসের বেতন দেবেন এবং সঙ্গে এক মাসের বকেয়া বেতনও দিতে হবে।
দায়িত্ব নেয়ার পর বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে বিআরটিসির দুর্নীতি ৭০ থেকে ৮০ ভাগ কমে এসেছে বলে দাবি করেন নতুন চেয়ারম্যান এহছানে এলাহী।
আরও পড়ুন: সারাবাংলার রিপোর্ট দেখে বিআরটিসি বাসের দুর্নীতি তদন্তের নির্দেশ
আরও পড়ুন: ভারত থেকে আনা বিআরটিসি বাসে হাত দিলেই বডি বেঁকে যায়!