‘এফবিআইয়ের সঙ্গে সমঝোতা স্বাক্ষরে দুদক যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে’
১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৭:১৯
ঢাকা: ‘এফবিআইয়ের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের জন্য দুদক যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। কমিশন প্রত্যাশা করে, দুর্নীতি সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্ত বিশেষ করে মানি লন্ডারিং, সাইবার ক্রাইম, আর্থিক লেনদেনের তদন্তের ক্ষেত্রে ফরেনসিক এনালআইসিস, ট্রেড বেইজড মানিলন্ডারিং, অপরাধীদের জিজ্ঞাসাবাদের কৌশল, সম্পদ পুনরুদ্ধার (স্টোলেন এসেট রিকভারি), তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে সংঘটিত আর্থিক ক্রাইম, মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্টেন্স, তথ্য বিনিময়সহ বিভিন্ন ইস্যুতে মার্কিন জাস্টিস ডিপার্টেমেন্টের সঙ্গে পারাস্পরিক সহযোগিতা আরও বিকশিত হবে।’
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের আবাসিক আইন উপদেষ্টা এরিক অপেঙ্গা ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে এক বৈঠক করেন। এসময় দুদক চেয়ারম্যান তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশে অর্থ পাচারের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে ‘ট্রেড বেইজড’ মানিলন্ডারিং উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থ পাচারের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে ট্রেড বেইজড মানিলন্ডারিং। এ জাতীয় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে দুদক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নিবিড় সমন্বয়ের প্রয়োজন। তাই কমিশন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরে অভিপ্রায় ব্যক্ত করে চিঠি দিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কর্মকৌশল বাস্তবায়ন করা গেলে অর্থপাচারের লাগাম টেনে ধরা যেতে পারে।’
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘শুধু প্রশিক্ষণ নিলে হবে না, প্রতিটি প্রশিক্ষণ হতে হবে তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিক জ্ঞানের সংমিশ্রণে। বাংলাদেশে সংঘটিত দুর্নীতি সংক্রান্ত অপরাধের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যেসব অপরাধের মিল রয়েছে, সেসব বিষয়ে কমিশনের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।’
প্রশিক্ষণ মানেই বিদেশে যেতে হবে কমিশন এমনটা মনে করে না জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘প্রয়োজনে এসব বিষয়ে এফবিআই অথবা জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের প্রথিতযশা রিসোর্স পারসনরা বাংলাদেশে এসে কমিশনের কমকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিতে পারেন অথবা আঞ্চলিক পর্যায়ে যেমন সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া কিংবা ইন্দোনেশিয়ায় সমন্বিতভাবে এসব প্রশিক্ষণ হতে পারে। অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে কমিশন সবসময়ই ভ্যালু ফর মানির বিষয়টি বিবেচনা করে।’
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘কেউ যদি আমেরিকায় অর্থ উপার্জন করে গাড়ি-বাড়িসহ সম্পদ গড়ে তোলেন- সে বিষয়ে দুদকের কোন মাথাব্যথা নেই। তবে বাংলাদেশ থেকে কেউ যদি অবৈধভাবে অর্থ পাচার করে আমেরিকা বা পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে সম্পদ তৈরি করেন সেটা দুদক আইনের আওতাভুক্ত অপরাধ।’ এসময় অর্থ পাচারকারীদের আইনের আওতায় আনতে তিনি এফবিআইসহ সব দেশের এ ধরনের জাতীয় সংস্থার সহযোগিতা কামনা করেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের আবাসিক আইন উপদেষ্টা এরিক অপেঙ্গা দুর্নীতি দমন কমিশনের বিভিন্ন কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি কমিশনের অভিযোগ কেন্দ্রের হটলাইন-১০৬ ও তথ্য প্রযুক্তি সংক্রান্ত কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। তিনি গণশুনানি ও সততা স্টোর পরিদর্শনে অভিপ্রায় ব্যক্ত করলে দুদক চেয়ারম্যান তাকে এসব কার্যক্রম দেখানোর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মহাপরিচালককে অনুরোধ করেন।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখ্ত, প্রতিরোধ অনুবিভাগের মহাপরিচালক সারোয়ার মাহমুদ, আইসিটি ও প্রশিক্ষণ অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ কে এম সোহেল প্রমুখ।