Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘পরীক্ষা ছাড়া ঢাবিতে ভর্তির যে বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে সেটাও ফতোয়া’


১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৯:৩৩

ঢাবি: হাদিস-কোরআনের বাইরে কারও ব্যক্তিগত মতকে যেমন আমরা ফতোয় বলি, তেমনি পরীক্ষা ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যে বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে সেটাও ফতোয়া। মানববন্ধনে এই মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিএনপি-জামায়াতপন্থী সাদা দলের শিক্ষক ও ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. হাসানুজ্জামান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের একটি কোর্সে নিয়মবহির্ভূতভাবে ছাত্রলীগের ৩৪ নেতা-কর্মীকে ভর্তির সুযোগ দেওয়ার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মানববন্ধন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘ব্যবসায় অনুষদের প্রত্যেকটি বিভাগে বৈকালিক প্রোগ্রাম রয়েছে এবং সবগুলোর ভর্তির প্রক্রিয়া অভিন্ন। আমার বিভাগেও দুইটা প্রোগ্রাম আছে সেখানে একই ধরনের নিয়ম মেনে থাকি। যখন সেমিস্টার আসে আমরা ভর্তির জন্য বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকি। যে ভর্তি নিয়ে বিতর্ক তার বিজ্ঞপ্তি আমার কাছে আছে। সেখানো কোনো জায়গায় বলা নেই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যতিক্রম নিয়ম প্রযোজ্য হবে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে ভর্তির নিয়মে যদি ব্যতিক্রম থাকে তাহলে অবশ্যই বিজ্ঞাপনে সেটা উল্লেখ থাকতে হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘যে প্রক্রিয়ার কথা বলা সেটি সম্পূর্ণ অবৈধ। সেটি কোনো অবস্থাতেই নিয়মতান্ত্রিকভাবে হয়নি। আমরা যে নিয়ম মেনে চলি তার ব্যত্যয় ঘটেছে। ওই ভর্তি বাতিল যোগ্য।’

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের আপামর মানুষের গর্ব ও অহংকারের প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের ভর্তি প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক, বিতর্কের ঊর্ধ্বে ছিল। গত কয়েক বছরে কর্তৃপক্ষের অমনোযোগিতা ও দুর্বলতার কারণে তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে নজিরবিহীনভাবে ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই নির্দিষ্ট ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীদের ভর্তি করানো হয়েছে। ডিন যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা নিয়মসিদ্ধ নয়। তার বক্তব্য আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। সম্পূর্ণ অবৈধ এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িতদের নৈতিক স্খলনজনিত কারণে বিধি অনুযায়ী শাস্তি হওয়া উচিত।’

বিজ্ঞাপন

ভর্তি বিজ্ঞপ্তি ও লিখিত পরীক্ষা ছাড়াই ৩৪ শিক্ষার্থীকে ভর্তি করানোকে সম্পূর্ণ অবৈধ ও গর্হিত অপরাধ বলে মন্তব্য করেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত যেকোনো কোর্সের কারিকুলাম, ব্যবস্থাপনা ও ভর্তি-প্রক্রিয়ার শর্তাবলি নির্ধারণে চূড়ান্ত অনুমোদনের কর্তৃত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের। এ ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন-পরিমার্জনের প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা প্রোগ্রামের পক্ষ থেকে সুপারিশ আকারে প্রস্তাব আসতে পারে। সেই সুপারিশ অনুষদ সভা, ডিনস কমিটি ও বোর্ড অব অ্যাডভান্স স্টাডিজ হয়ে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য একাডেমিক কাউন্সিল সভায় উপস্থাপিত হয়। কাউন্সিল অনুমোদন দিলে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তা বিধিবদ্ধ হয়। কিন্তু ৩৪ জনের ক্ষেত্রে এই নিয়ম অনুসরণ না করায় এদের ছাত্রত্ব অবৈধ। তাদের ভর্তি করার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরাও নৈতিক স্খলনের অপরাধে শাস্তি পাওয়ার যোগ্য।

মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম; সাবেক আহ্বায়ক এবং মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক আখতার হোসেন খান; যুগ্ম আহ্বায়ক ও পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমানসহ অনেকে।

মানববন্ধন শেষে উপাচার্য বরাবর একটি স্মারকলিপি দেন তারা।

ঢা‌বি বিএনপি সাদা দল

বিজ্ঞাপন

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর