অস্ত্র-মাদকের মামলায় ৭ দিনের রিমান্ডে যুবলীগ নেতা খালেদ
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২০:৫০
ঢাকা: অবৈধ ক্যাসিনো চালানোর অপরাধে গ্রেফতার যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে অস্ত্র ও মাদক আইনে দায়ের করা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা মহানগর মুখ্য হাকিম (সিএমএম) আদালতের বিচারক মাহমুদা আক্তার ও শাহিনূর রহমান এ আদেশ দেন।
খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে গুলশান থানায় অস্ত্র, মাদক ও মানি লন্ডারিং আইনে তিনটি মামলা দায়ের করে র্যাব। এছাড়া মতিঝিলি থানায় মাদক আইনে আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে অস্ত্র ও মাদকের মামলায় খালেদের সাত দিন করে রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ।
আরও পড়ুন- যুবলীগ নেতা খালেদকে আদালতে হাজির
আদালতে খালেদের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী মো. আয়ুবুর রহমান মানিক, হাসানসহ কয়েকজন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন রাকিবুল।
আদালতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, আসামি একজন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী ও যুবলীগ নেতা। তার বাসায় টাকা থাকতেই পারে, এটি কোনো অপরাধ নয়। তিনি সরকারকে নিয়মিত ট্যাক্স দেন। তিনি শারীরিকভাবেও অসুস্থ। প্রয়োজনে এ সংক্রান্ত ডাক্তারি সনদও আদালতে জমা দেওয়া হবে।
আইনজীবীরা আরও বলেন, আসামির বাড়ি থেকে যেসব মালামাল জব্দ করার কথা বলা হয়েছে, প্রকৃতপক্ষে সেগুলো জব্দই করা হয়নি। প্রয়োজনে জেলগেটে তাকে একদিনের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। আমরা তার রিমান্ড বাতিলপূর্বক জামিনের আবেদন করছি। আসামি যেকোনো শর্তে জামিনপ্রার্থী।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক মাহমুদা আক্তার অস্ত্র আইনের মামলায় খালেদের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে মাদক আইনের মামলায় খালেদের আরও তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক শাহিনূর রহমান।
গুলশান থানা থেকে খালেদকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সিএমএম আদালতে
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৮টার দিকে খালেদকে সিএমএম আদালত চত্বরে উপস্থিত করা হয়। কিছুক্ষণ পরই তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকেই খালেদের গুলশানের বাসা ঘিরে রাখে র্যাব। পরে সন্ধ্যায় তাকে আটক করা হয়। তার বাসা থেকে একটি অবৈধ অস্ত্র, লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করা আরও দুইটি অস্ত্র, কয়েক রাউন্ড গুলি ও দুই প্যাকেটে চারশ পিস ইয়াবা জব্দ করে র্যাব। এছাড়া তার বাসার ওয়াল শোকেস থেকে ১০০০, ৫০০ ও ৫০ টাকার নোটের ১০ লাখ ৩৪ হাজার টাকা র্যাব জব্দ করে। চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা সমমূল্যের মার্কিন ডলারও জব্দ করা হয় এসময়।
আরও পড়ুন- খালেদের নামে ৪ মামলা, অস্ত্র-মাদকে ৭ দিন করে রিমান্ড চাইবে পুলিশ
র্যাব-১-এর সিনিয়র এএসপি সুজয় সরকার জানান, বুধবার বিকেল ৪টা থেকেই গুলশান ২-এর ৫৯ নম্বর রোডের ৫ নম্বর বাড়িটি ঘিরে রাখে র্যাব। এই বাড়ির তৃতীয় তলার এ-৩ ফ্ল্যাটটি খালেদের। আটকের পর রাত ৮ টা ২৫ মিনিটে খালেদকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান র্যাব সদস্যরা।
এদিন বিকেলে খালেদের ইয়ং মেনস ক্যাসিনোতেও অভিযান চালান র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে ১৪২ জন নারী-পুরুষকে আটক করা হয়। এর মধ্যে ৩১ জনকে একবছর ও বাকি ১১১ জনকে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ক্যাসিনো থেকে জুয়ার প্রায় সাড়ে ২৪ লাখ টাকা জব্দ করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া বিপুল পরিমাণ মদ, বিয়ার, সিগারেটসহ নেশাজাতীয় বিভিন্ন দ্রব্য জব্দ করা হয় ওই ক্যাসিনো থেকে।