‘নারায়ণগঞ্জ আ.লীগ কমিটিতেও নেই জি কে শামীম’
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২০:৪৪
ঢাকা: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কোনো কমিটিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আটক হওয়া জি কে শামীমের অস্তিত্ব নেই বলে জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। জি কে শামীম আওয়ামী লীগ নাকি যুবলীগ নেতা এমন বিভ্রান্তির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে দলের উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া সারাবাংলাকে একথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংরক্ষিত তথ্য অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জ জেলা বা মহানগর আওয়ামী লীগের তালিকায় জি কে শামীম নামের কোনো ব্যক্তির অস্তিত্ব নেই বলে জানিয়েছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির অনুমোদন হয় ২০১৭ সালের ১০ আগস্ট।’
ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া ওই কমিটির একটি অনুলিপি সারাবাংলার প্রতিবেদককে দেখিয়ে বলেন, ‘এখানে জি কে শামীম নামের কোনো ব্যক্তির নাম নেই। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে তার কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০১৮ সালে ঘোষিত নির্বাচনি ইশতেহারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সর্বপ্রকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছিলেন। দেশে দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি চিরতরে বন্ধ করে শুদ্ধ রাজনীতির ধারাকে স্থায়ী করার জন্য প্রধানমন্ত্রী জনগণের অভিপ্রায়ে দুর্নীতির এবং দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতির বিরুদ্ধেও নির্মোহভাবে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। সেই প্রক্রিয়ায় ইতোমধ্যেই অনেকেই গ্রেফতার হয়েছে এবং তাদের বেআইনি ও অবৈধ ব্যবসা-বাণিজ্যের আস্তানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এটা একটি চলমান প্রক্রিয়া।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি, অপরাধী অপরাধীই। সে যে দলেরই হোক না কেন। কেউ আইনের যদি দেশের প্রচলিত আইনের কোনো প্রকার ব্যতয় ঘটায় এবং দেশের প্রচলিত আইন যদি কেউ ভঙ্গ করে ব্যবসা-বাণিজ্য করে এবং তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে অন্য জনের নিরাপত্তাহানি করে তাহলে তখন একটি গণতান্ত্রিক সরকারের কাজ হচ্ছে জনশৃঙ্খলা এবং জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার জন্য আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করা।’
জি কে শামীম যুবলীগের কেউ নয়: ওমর ফারুক
আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক সারাবাংলাকে আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি চালু হয়েছিল তার সবচে বড় ভিকটিম আওয়ামী লীগ এবং বঙ্গবন্ধু পরিবার। সেজন্য আমরা চাই না যে, আইনহীনতার কারণে অথবা আইনের শাসনের অভাবে দেশের কোনো নাগরিকের নিরাপত্তা ও দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হোক।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রত্যক্ষ করেছি জি কে শামীম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এমন বিভ্রান্তিকর ও অসথ্য খবর পরিবেশিত হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি শামীম নামে কেউ নেই। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যটি সত্য নয়। আমি আমার দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশনায় বিনীতভাবে বলতে চাই- দেশের সব চেয়ে পুরাতন ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এমন কোনো তথ্য প্রকাশের পূর্বে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে তথ্যটি যাচাই করুন এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করুন।’
এর আগে, যুবলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে ঠিকাদারি ব্যবসা চালিয়ে আসা গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম সংগঠনের কোনো পর্যায়েই নেই বলে জানান যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) এফডিআর, বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ, অস্ত্র ও মাদকসহ শামীম র্যাবের হাতে গ্রেফতারের পর বিভিন্ন গণমাধ্যম তাকে যুবলীগ নেতা হিসেবে প্রচার করে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ওমর ফারুক চৌধুরী সারাবাংলাকে এ তথ্য জানান।