Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শিগগিরই পূরণ হচ্ছে না ৩ শূন্য পদ, অপেক্ষায় ১০ জন!


২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৫:৫৬

ঢাকা: বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির তিনটি পদ এখনো শূন্য। আর এই তিন শূন্য পদের বিপরীতে প্রার্থী রয়েছেন অন্তত ১০ জন। গত তিন বছর ধরে তারা অপেক্ষায় রয়েছেন। শূন্য পদ পূরণ হলে জাতীয় স্থায়ী কমিটিতে স্থান হবে তাদের— এই আশায়। কিন্তু শিগগিরই ওই তিন শূন্য পদ পূরণের কোনো সম্ভবনা নেই বলে জানা গেছে।

২০১৬ সালের ১৯ মার্চ অনুষ্ঠিত বিএনপির ষষ্ঠ কাউন্সিলের সাড়ে পাঁচ মাস পর ৬ আগস্ট ১৯ সদস্যের স্থায়ী কমিটির ১৭ সদস্যের নাম ঘোষণা করা হয়। ওই ১৭ সদস্যের মধ্যে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পদাধিকার বলে স্থায়ী কমিটির সদস্য হন।

বিজ্ঞাপন

বাকি ১৪ জনের মধ্যে নতুন মুখ ছিলেন আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ে অবস্থানরত সালাউদ্দিন আহমেদ।

পুরনো ১২ সদস্যের মধ্যে ছিলেন— ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরুদ্দিন সরকার, তরিকুল ইসলাম, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, আ স ম হান্নান শাহ, এম কে আনোয়ার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা  আব্বাস, গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, ড. মঈন খান ও নজরুল ইসলাম খান।

তিন বছর আগে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণার সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, ‘খুব শিগগিরই শূন্য দুই পদ পূরণ করা হবে।’

এরপর গত তিন বছরে আ স ম হান্নান শাহ, এম কে আনোয়ার ও তরিকুল ইসলামের মৃত্যুতে শূন্য পদের  সংখ্যা দাঁড়ায় পাঁচে। এর মধ্যে গত ২১ জুন দু’টি শূন্য পদে দলের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এখনো ফাঁকা রয়েছে তিনটি পদ।

বিজ্ঞাপন

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এই তিন শূন্য পদ শিগগিরই পূরণ হচ্ছে না। পদগুলো পূরণের ব্যাপারে দলের অভ্যন্তরে কোনো আলোচনাও নেই। যেহেতু খালেদা জিয়ার অবর্তমানে দলের সবকিছুই হয় তারেক রহমানের খেয়াল-খুশিমতো, সেহেতু যে কোনো সময় তিন শূন্য পদে তিন জনকে অন্তর্ভুক্ত হতে দেখলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না বলে জানান বিএনপির এক নেতা।

এদিকে জাতীয় স্থায়ী কমিটির এই তিন শূন্য পদের জন্য বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের অন্তত ১০ জন নেতা অপেক্ষায় রয়েছেন। এরা হলেন— দলের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, আব্দুল্লাহ আল নোমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহম্মদ, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, মো. শাহজাহান, শামসুজ্জামান দুদু, অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আব্দুল আউয়াল মিন্টু ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান।

এই ১০ আগ্রহী নেতার প্রত্যেকেই স্থায়ী কমিটিতে জায়গা পাওয়ার জন্য দলের হাইকমান্ডের কাছে যৌক্তিকতা তুলে ধরেছেন বার বার। তবে এদের মধ্যে শূন্য তিন পদে শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহম্মদ ও আব্দুল্লাহ আল নোমানের নাম কাউন্সিলের আগে থেকেই উচ্চারিত হয়ে আসছিল। ২০১৬ সালের আগস্ট মাসে স্থায়ী কমিটির নাম ঘোষণার সময় নিজেদের নাম সেখানে না দেখে যারপরনাই হতাশ হয়েছিলেন এই তিন জন। ধারণা করা হচ্ছিল তিন শূন্য পদে এই তিন নেতাকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তা হয়নি। বরং তিন পদের জন্য আরও সাত জনের নাম নতুন করে উচ্চারিত হচ্ছে।

তরিকুল ইসলামের মৃত্যুতে খুলনা বিভাগের কোনো নেতা স্থায়ী কমিটিতে নেই। সেখানে শামসুজ্জামান দুদুর নাম উচ্চারিত হচ্ছে। প্রয়াত এম কে আনোয়ারের জায়গায় দলের ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহানের নাম শোনা যাচ্ছে। প্রয়াত আ স ম হান্নান শাহ’র জায়গায় দলের ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হাসান ও অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খানের নাম উচ্চারিত হচ্ছে।

এদিকে ডাকসাইটে ব্যবসায়ী এবং বিদেশ লবিংয়ের দিক থেকে আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ঢাকার নেতা হিসেবে আমান উল্লাহ আমান, খালেদা জিয়ার আইনজীবী হিসেবে অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেনও এগিয়ে রয়েছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য হওয়ার দৌড়ে।

তবে কাউন্সিলের তিন বছর পর শূন্য দুই পদ পূরণ হওয়ায় বাকি তিন শূন্য পদ পূরণ হতে আর কতদিন সময় নেবে বিএনপির হাইকমান্ড, সেটা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না। এমনও হতে পারে, সপ্তম কাউন্সিলের আগ পর্যন্ত স্থায়ী কমিটির শূন্য তিন পদ শূন্যই থাকতে পারে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায় সারাবাংলাকে বলেন, ‘শূন্য তিন পদ পূরণের জন্য দলীয় ফোরামে বা স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কোনো আওয়াজ পাচ্ছি না। তবে এটা তো ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ওপর নির্ভর করে। তিনি চাইলে যেকোনো সময় শূন্য পদ পূরণ করতে পারেন। আবার এটা কোনো দিন পূরণ নাও হতে পারে।’

জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি শূন্য পদ স্থায়ী কমিটি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর