সরকারি চাকরি আইনটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক: টিআইবি
১ অক্টোবর ২০১৯ ০২:৩৪
ঢাকা: প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ফৌজদারি অপরাধে গ্রেফতারের জন্য সরকারের পূর্বানুমতির বিধান রেখে ‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮’ এর কার্যকর করার সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
টিআইবি‘র পরিচালক শেখ মনজুর ই আলম সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, সংবিধান অনুসারে আইনের চোখে ‘সকল নাগরিক সমান’ কিন্তু সরকারি চাকরি আইনটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বৈষম্যমূলক। তাই এই আইনটি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত থেকে সরকারকে সরে আসার আহ্বান জানাচ্ছে টিআইবি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন পেশাজীবীসহ সাধারণ জনগণের প্রতি বৈষম্যমূলক বিধানাবলী রেখে ‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮’ কার্যকর করার সিদ্ধান্ত সংবিধান পরিপন্থী। আইনটি এভাবে কার্যকর হলে বর্তমান সরকারের আমলেই প্রণীত ও বাস্তবায়নরত ‘জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল’ এর সাথেও এটি সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী হবে। তাছাড়া, ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তাদের গ্রেফতারের পূর্বে সরকারের কাছ থেকে অনুমতি গ্রহণের বিধান ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ৫৪ ধারার সঙ্গেও সাংঘর্ষিক।”
বিবৃতিতে ড. জামান বলেন, “দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর জোরালোভাবে ‘শূন্য সহনশীলতার’ ঘোষণা এবং সরকারের চলমান দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান জনমনে যে প্রত্যাশার সৃষ্টি করেছে, এই আইনটি কার্যকর হলে তা প্রশ্নবিদ্ধ হতে বাধ্য। এছাড়া, বিতর্কিত বিধানটি দুদকের কার্যক্ষমতা অনেকাংশে খর্ব করে সম্পূর্ণ অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পর্যবসিত হওয়ার ঝুকিঁ সৃষ্টি করবে।”
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, “সরকারি চাকরি আইন নামটিই সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। এই আইনটির নাম হওয়া উচিত ‘জনপ্রশাসন আইন’। তাই আমরা পুনরায় আইনটির নাম সংশোধনের দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া, গ্রেফতারের পূর্বে সরকারের অনুমতি গ্রহণের বিধানটি বাস্তবে সরকারি খাতে অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রতিরোধের পরিবর্তে আইনের ছত্রছায়ায় এ ধরনের অপরাধের সুরক্ষা ও এর ব্যাপকতা বাড়ার ঝুঁকি আরো বৃদ্ধি পাবে। তাই তড়িঘড়ি করে আইনটি কার্যকর করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাই। একইসাথে, আইনটির পুনর্বিবেচনার প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞসহ সকল অংশীজনের মতামত গ্রহণের দাবি পুর্নব্যক্ত করছি”