দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ায় বিএনপি আতঙ্কিত
৩ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৫০
নিলফামারী: আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা মাদক সন্ত্রাস জুয়া ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স অবস্থান নিয়েছেন। তার নির্দেশে অভিযান চলছে। তিনি যে পদক্ষেপ নিয়েছেন তা সারা দেশের মানুষের কাছে প্রশংসিত হলেও বিএনপি আতঙ্কিত। কারণ বিএনপি নেতারা আপাদমস্তক দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। তারা বিদেশে টাকা পাচার করেছে। ক্ষমতায় থাকতে হাওয়া ভবন করেছে। কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কোন হাওয়া ভবন তৈরি হয়নি। এটাই তাদের ভয়।
বুধবার নিলফামারীর ডিমলা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন। সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন নীলফামারী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট মমতাজুল হক, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ।
বিএম মোজাম্মেল হক বলেন, আওয়ামী লীগ জাতির পিতার হাতে গড়া সংগঠন। তার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা এখন এই দলের নেতৃত্বে। শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের হাল ধরেছেন বলেই এখনো বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে আওয়ামী লীগ এগিয়ে যাচ্ছে। এদেশের মানুষের ভালোবাসা নিয়েই জননেত্রী শেখ হাসিনা বার বার রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছেন। দেশের মানুষের আস্থা অর্জন করেছেন। আজকের শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। যে বাংলাদেশকে একসময় তলাবিহীন ঝুড়ি বলা হত। সেই বাংলাদেশ এখন বিশ্বের উন্নয়নের রোল মডেল।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরও বলেন, আওয়ামী লীগ প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করেনা। তবে কাজের প্রতিযোগিতা, প্রতিদ্বন্দিতায় বিশ্বাস করে। সুতরাং প্রতি হিংসা ভুলে গিয়ে মানুষের ভালোবাসা, মানুষের স্নেহ মায়া মমতার মাধ্যমে কাজ করতে হবে।
একসময়ের মঙ্গাপীড়িত উত্তরাঞ্চল এখন উন্নয়নের দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে বিএম মোজাম্মেল হক আরো বলেন, বিএনপির আমলে উত্তরাঞ্চলে বিশেষ করে কুড়িগ্রামের অবস্থা ভয়াবহ ছিল। দিনের পর দিন মানুষকে না খেয়ে থাকতে হতো। পেটের জ্বালায় অনেকেই বিপথে চলে গিয়েছিল। গরিব মানুষের কঙ্কালসার চেহারা আমরা দেখেছি। না খেয়ে মানুষ পর্যন্ত মারা গেছে। এখন আর সেই মঙ্গা নেই। জননেত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেই উত্তরাঞ্চলের মঙ্গা দূর করতে তিনি নানা পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছেন। এখন এই উত্তর অঞ্চলের মানুষ আর না খেয়ে থাকে না।
তিনি বলেন, রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে কর্মসংস্থানের জন্য উত্তরা ইপিজেড তৈরি করেছেন। যেখানে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন। এ অঞ্চলে আরো অর্থনৈতিক জোন করা হচ্ছে। হাজার হাজার বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এই রংপুরের প্রতিটি জেলায় যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত হয়েছে। সড়কের পাশাপাশি রেল সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। দিনাজপুর পঞ্চগড় নীলফামারী কুড়িগ্রামে লালমনিরহাট রংপুর রেললাইন করা হয়েছে। এখন ঢাকা থেকে সরাসরি প্রতিটি জেলায় রেল চলছে। বিএনপির আমলের সেই মঙ্গাপীড়িত উত্তরাঞ্চল এখন সারা বিশ্বে দৃষ্টান্ত।
মোজাম্মেল হক আরো বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সারা বাংলাদেশের তিনি যে উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দিয়েছেন। এটাই বিএনপি’র গাত্রদাহের বড় কারণ। তাই শেখ হাসিনাকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য শুরু থেকেই তারা একের পর এক ষড়যন্ত্র করে আসছে। বারবার শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়েছে। আল্লাহর অশেষ রহমতে শেখ হাসিনা বার বার মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন। কিন্তু বিএনপি জামাতের ষড়যন্ত্র এখনো থেমে নেই। তাই সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঐক্যকে মজবুত করে বিএনপি-জামাতের ষড়যন্ত্রের কালো হাত ভেঙ্গে দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে আরো বেগবান করতে হবে।
সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে সর্বসম্মতভাবে বর্তমান সভাপতি আফতাব উদ্দিন সরকার পুনরায় সভাপতি নির্বাচিত হন। তবে সাধারণ সম্পাদক পদে ভোটগ্রহণ হয়।
সারাবাংলা/এনআর/টিএস